ইংরেজি সাহিত্য পড়ার সময়ে আপনাদের অনেকেই ধর্মীয় বিষয়টা টেনে আনছেন। আরে ভাই, ইংরেজি পড়লেই যে সে সেকুলার হয়ে যাবে, তা কিন্তু না। এটা সম্পূর্ণ আপনার নিজের উপরে নির্ভর করবে।
অনেকের বক্তব্য লালসালু উপন্যাসের মতো হয়ে যায়। ইংলিশ পড়লে মাথা গরম হয়ে যাবে। ইংরেজি সাহিত্যের কিন্তু অনেক পজিটিভ দিকও কিন্তু আছে। সেগুলো দিক দিয়েও ভাবা উচিত। লিটারেচার সব সময় ইনভেন্টিভ। আপনি ইংরেজি সাহিত্য পড়ার মাধ্যমে, সেই সমাজের ইতিহাস, ঐতিহ্য, তাদের দৃষ্টিভঙ্গি, রাজনীতি ও ধর্মীয় বিশ্বাস সম্পর্কে খুব ভালো জ্ঞান অর্জন করতে পারছেন। যেটা অন্য কেউ পারছে না। খ্রিস্টান সমাজের যে শ্রেণীবিভেদ, ইহুদিদের প্রতি স্পষ্ট ধারণা আপনি লিটারেচারের মাধ্যমে পাচ্ছেন।
আবার অনেক সৃষ্টিশীল বিষয় জানতে পারছেন।
যেমন ধরুন, ম্যাকবেথে দেখানো হয়েছে ডাংক্যানকে মায়ের পেট কেটে বের করা হয়েছে। সে সময়ে কিন্তু সিজারের কোন প্রচলন ছিল না। কিন্তু সেক্সপিয়ার সেই মেসেজটা দিয়েছেন যে, পরবর্তীতে চিকিৎসা বিজ্ঞানে এমন কিছু আসতে চলেছে।
এরপর The Merchant of Venice পড়লে আপনি সুদের উৎপত্তি সম্পর্কে জানতে পারবেন। ইহুদিরা যে সুদের উৎপত্তি ঘটিয়েছে তা শেক্সপিয়ার দেখিয়েছেন। এবং ইহুদিরাই যে মূলত পৃথিবী জুড়ে অশান্তি সৃষ্টিকারী, এবং শেক্সপিয়র তাদের যে কতটা ঘৃণা করতেন তা এই নাটকের মাধ্যমে প্রকাশ পায়।
আবার Samuel Tailor Coleridge তার কুবলা খান কবিতায় এসি এর একটা মেসেজ দিয়েছেন।
আপনি যদি লিটারেচার ভালোভাবে না পড়েন তাহলে এগুলো জীবনেও খুঁজে পাবেন না।
এখন অনেকেই আবার বলতেছেন ধর্ম বজায় রাখতে হলে লিটারেচার শুধুমাত্র পড়ে পাস করতে হবে, ভালোভাবে পড়া যাবে না। ভাইরে ভাই, আসলে আমরা মানসিকতার দিক থেকে অনেক পিছিয়ে আছি। কিছুদিন আগে এমন ফতুয়া অনেক হুজুরেরা দিয়েছিল যে, ইংরেজি শেখা যাবে না। ইংরেজি শেখা হারাম। বিজ্ঞান শেখা যাবে না, বিজ্ঞান মানুষকে নাস্তিক বানায়। এরকম কথা শুনে অনেকেই প্রভাবিত হন।
তাদের উদ্দেশ্যে একটা কথা বলছি, কুরআনের চেয়ে বৈজ্ঞানিক কিতাব আর একটাও নেই। আমাদের প্রতিটা আলেম যদি ভালো করে কুরআন শিখতো বা ব্যাখ্যা জানতো, তাহলে প্রত্যেকেই একেকজন সাইন্টিস্ট হতো। কিন্তু তারা ফিজিক্স কেমিস্ট্রি বায়োলজি ম্যাথ এগুলো সম্পর্কে কোন আইডিয়াই রাখে না। কিন্তু কোরআনে ২ হাজারের মতো আয়াত আছে বিজ্ঞানের উপর নির্ভর করে। গণিত দ্বারা সম্পূর্ণ পৃথিবীর পরিচালিত হয়, কিন্তু সে সম্পর্কে তাদের কোন গবেষণা নেই।
আপনি বর্তমান হুজুরদের কথা বাদ দিয়ে তারিক বিন জিয়াদের সময়ের স্পেনের দিকে তাকান। তখন স্পেন শিল্প , গবেষণা ও সাহিত্যের দিক থেকে সবচেয়ে অগ্রগামী পৃথিবীর মধ্যে। মুসা আল খারিজমি, আল বিরুনী, ইমাম গাজ্জালী , ইবনে সিনা, ইবনে তাইমিয়া, তাদের মতো বড় আলেম বর্তমান যুগেও অনেক আছে। কিন্তু বর্তমান যুগে খালি ফতোয়াবাজি চলে। কোন গবেষণা নেই। যার জন্য জ্ঞান উঠে যাচ্ছে, মূর্খতা বাড়ছে।
আমি স্বীকার করি, ইংলিশ লিটারেচার যথেষ্ট খারাপ দিকগুলো প্রকাশ করে। কিন্তু আপনি এর পজিটিভ দিকগুলোর দিকেও তাকান। খারাপ দিকগুলোর দিকে আগে নজর দেন কেন? ইংরেজি সাহিত্যের লেখকরা নিজেরাই তো খারাপ গুলো উপস্থাপন করে ভালোর দিকে মোটিভেট করে।
সামান্য লিটারেচার পড়ে যদি আপনি ঈমান হারানোর ভয় করেন, তাহলে কালকে দাজ্জাল বের হলে কি করবেন? ঈমান কিভাবে ধরে রাখবেন? পাশ্চাত্যের মতাদর্শ আপনাকে গ্রহন করতে হবে না, কিন্তু তাদের সম্পর্কে গভীরভাবে জানতে তো কোন সমস্যা নেই।
ধর্ম কর্ম আমরা সবাই মানি। তবে জ্ঞান আহরণের ক্ষেত্রে কোন কার্পণ্য করা উচিত নয়। ভালোটা গ্রহণ করুন ,খারাপটা বর্জন করুন।
I agree.thanks