প্রশ্নঃ STD বা যৌনবাহিত রোগ কি এবং তা প্রতিরোধের উপায় বর্ণনা করো
ভূমিকা: STD পূর্ণরূপ হল Sexually Transmitted Disease বা যৌনবাহিত রোগ। যৌনরোগ শুধু একটি রোগ নয় এটি বিভিন্ন রোগের সমষ্টি। এটি বর্তমান সময়ের সবচেয়ে মারাত্মক রোগ। ১৯৮৩ সালের জেনেভায় অনুষ্ঠিত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিশেষজ্ঞ দলের সভায় সর্বপ্রথম পুরানো নাম Venrial disease পরিবর্তন করে নতুন নামকরণ করেন STD বা Sexually tranismitted disease। নারী-পুরুষের অবাধ যৌন মিলনের ফলে এ রোগ হয়ে থাকে। চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের মতে অবাধ যৌনমিলনের প্রায় ২৫টির বেশি রোগ সঙ্গমজনিত কারণে হয়ে থাকে।
STD বা যৌনবাহিত রোগের পরিচয়ঃ সেসব সংক্রামক রোগ সাধারণত যোনীমৈথুন, মুখমেহন, পায়ুমৈথুনসহ নানাবিধ যৌনকর্মের মাধ্যমে বিস্তার লাভ করে একে সংক্ষেপে এসটিডি (STD) বলা হয়। সাধারন অর্থে যৌন রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে অবাধ এবং অনিরাপধ যৌন মিলনের ফলে যে রোগ হয়ে থাকে তাকে STD বা যৌনরোগ বলে। অন্যভাবে বলতে গেলে যে সকল রোগ-জীবাণু দ্বারা দৈহিক মিলন বা যৌন সম্পর্কের মাধ্যমে ছড়ায় তাকে যৌন রোগ বলে। সাধারণত যৌন মিলনের ফলে এ রোগ হয়ে থাকে। একে রতিজ ব্যাধিও বলা হয়ে থাকে। নিচে কয়েকটি যৌনরোগা ছড়ানোর মাধ্যম তুলে ধরা হল।
আরো পড়ুনঃ সমাজবিজ্ঞানের সংজ্ঞা দাও। এর প্রকৃতি ও স্বরূপ বা পরিধি ও বিষয়বস্তু আলোচনা করো।
- যৌনরোগাক্রান্ত ব্যক্তির সাথে যৌনমিলনের সময় কনডম ব্যবহার না করা।
- জীবাণুমুক্ত না করে অন্যের সুচ দ্বারা ইনজেকশন নেওয়া
- রোগাক্রান্ত ব্যক্তির রক্ত সুস্থ শরীরে প্রবেশ করানো।
- আক্রান্ত মায়ের দুধ পান করানো।
- ধর্মীয় নীতিমালার অবমাননা করা।
যৌন রোগ প্রতিরোধের উপায়:
যৌনরোগের লক্ষণ দেখা দিলে অনতিবিলম্বে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিৎ।কোনো প্রকার লজ্জা না করে খোলাখুলিভাবে সব সমস্যা সম্পর্কে অবহিত করা প্রয়োজন। নিম্নে যৌনরোগ প্রতিরোধ করার উপায় সম্পর্কে আলোচনা করা হলো:
১. যৌন মিলনের সময় কনডম ব্যবহার করা।
২। একাধিক সঙ্গীর সাথে যৌন সম্পর্ক থেকে বিরত থাকা।
৩. ইনজেকশন নেওয়ার সময় ভালোভাবে শুচ বা সিরিজ জীবাণুমুক্ত করে নেওয়া।
৪. অঙ্গ, রক্ত ও শুচ দেওয়ার সময় এতে কোনো রকম রোগ আছে কিনা তা পরীক্ষা করা।
৫. কোনো রকম যৌন রোগের লক্ষণ দেখা দিলেই ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহন করা।-
৬. যৌন রোগ সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা।
আরো পড়ুনঃ শিল্পায়ন কি? বাংলাদেশে শিল্পায়নের কারণ ও প্রভাব আলোচনা করো।
৭. অপরের ব্যবহার করা ব্রাস, ব্লেড ইত্যাদি ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
৮. HIV সংক্রামক মহিলাদের গর্ভধারণ থেকে বিরত থাকা।
৯. যৌন রোগ প্রতিরোধের উপায়সমূহ অবলম্বন করা।
১০।আক্রান্ত ব্যক্তির রক্ত বা শরীরের কোনো তরল পদার্থ ঘর বা অন্য কোথাও পড়লে ১ ভাগ ব্লিচের সাথে ১১। ভাগ পানি মিশিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।
১২।কাটা বা ক্ষত স্থানে ব্লিচ লাগনো যাবে না।
১৩।রোগীর যৌন সাথীদের চিকিৎসা নিতে হবে। সামাজিকভাবে যাতে হেয় না হয় সেজন্য তথ্য গোপন রাখতে হবে।
১৪। মানুষের মধ্যে ধর্মীয় চেতনা বৃদ্ধি করতে হবে। মসজিদ, মন্দির গীর্জাও এক্ষেত্রে বিশেষে ভূমিকা রাখতে পারে।
আরো পড়ুনঃ নারীর ক্ষমতায়ন বলতে কি বুঝ? নারীর ক্ষমতায়নে বাধা এবং করণীয় সমূহ আলোচনা করো।
উপসংহার: পরিশেষে বলা যায় যে, যৌনবাহিত রোগ নারী-পুরুষের যৌন মিলনের ফলে সৃষ্ট রোগ। যৌন সংযম এবং নিরাপদ যৌন মিলনের ফলে আমরা এ রোগ থেকে মুক্তি পেতে পারি। যে সকল কারণে যৌন রোগ ছড়ায় সে বিষয়গুলো এড়িয়ে চলার পাশাপাশি জনসচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে আমরা খুব সহজে মারাত্মক যৌনরোগ থেকে নিজেরদের রক্ষা করতে পারি।