এক্সিসটেন্সিয়ালিজম বা অস্তিত্ববাদ একটি বিখ্যাত ফিলোসফি যেখানে মূলত বোঝানো হয় মানুষের টিকে থাকার অস্তিত্বের ব্যাপারটাকে। উইকিপিডিয়া এর তথ্য মতে যারা এই ফিলোসোফির সাথে যুক্ত তারা মূলত মানুষের এই পৃথিবীতে অস্তিত্ব টিকে থাকার অর্থ, উদ্দেশ্য এবং মূল্য সম্পর্কে চিন্তা ভাবনা করে থাকে।
অন্যদিকে অক্সফোর্ড ডিকশনারি অনুযায়ী অস্তিত্ববাদ হল এমন একটি থিওরি যার দ্বারা মানুষ পৃথিবীতে তার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য তার নিজের স্বাধীনতা এবং ইচ্ছার ওপরে ভর করে সামনের দিকে এগোতে থাকে এবং তার সকল কাজকর্মের জন্য নিজে নিজের কাছে দায়ী থাকে।
Existentialism in Tree Without Roots
1. Existential crisis in Garo Hill, Madhupur
মজিদ যখন মধুপুর গারো হিলে মুয়াজ্জিন এর চাকরি নিয়ে ছিল তখন সে সরকারি অফিসারের কাছ থেকে মোহাব্বত নগর গ্রামটির নাম শুনতে পেয়েছিল এবং সে গ্রামের বর্ণনা শুনে তার মনে হয়েছিল যে পৃথিবীতে তার অস্তিত্ব ভালোভাবে টিকিয়ে রাখতে হলে সেই গ্রামে গিয়ে খুঁটি গাড়তে হবে। তাই সে মধুপুরের মুয়াজ্জিনগিরি ছেড়ে দিয়ে মহব্বত নগরে মাজার ব্যবসায় এসে যুক্ত হয়ে গ্রামে তার কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠায় নিজেকে ব্যস্ত করে ফেলেছিল।
2. Establishment of a Mazar for a permanent settlement:
মহব্বত নগরে আসার পর মজিদ যখন বুঝতে পারল যে গ্রামের মানুষেরা সবাই একেবারে অশিক্ষিত এবং অজ্ঞ তখন সে মনে মনে ধরে নিল যে তার ঠিক করা এই মাজার ব্যবসার মাধ্যমেই গ্রামে গোরাপত্তন করা সম্ভব। এবং সবশেষে দেখা যায় যে মাজার ব্যবসাকে তার জীবন যাপনের একটি পন্থা হিসেবে বেছে নিয়ে পৃথিবীতে সে তার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার কাজ করে চলছিল।
3. Old man’s free will hinders Majeed’s existence
তাহের কাদের এবং রতন আর তাদের বাবা যখন মজিদের কার্যক্রমের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিল তখন তাদের বাবা অর্থাৎ সেই বৃদ্ধ লোকটি একরকম মজিদের বিপক্ষে কথা বলা শুরু করেছিল সালিশের মধ্যে। তখন মজিদ তাদেরকে বলেছিল যে সে তাদের পারিবারিক ব্যাপারে মাথা ঘামাবে না। কিন্তু সে মনে মনে ভেবে নিয়েছিল যে এই বৃদ্ধ লোক যদি জীবিত থাকে তাহলে সে তার অস্তিত্বের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। তাই বিশেষ টেকনিক অবলম্বন করে বৃদ্ধ লোকটিকে সালিশের মধ্যে এমন ভাবে মানসিক আঘাত করল যে পরবর্তীতে সে গ্রাম থেকে নিরুদ্দেশ হয়ে গিয়েছিল। এভাবেই মজিদ তার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে যা করার তাই করছিল।
More: Social Picture in The Tree Without Roots
4. Appearance of Awalpur pir
আওয়াল পুরের পীর যখন মজিদের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছিল তখন সে একটা ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আওয়ালপুরের দিকে গিয়েছিল। সেই পীরের জনপ্রিয়তা দেখে মজিদ হিংসায় চলছিল এবং কিভাবে তারে জনপ্রিয়তা নষ্ট করা যায় সেই পরিকল্পনা করে তা অনেকটা বাস্তবায়ন ও করে ফেলেছিল যাতে করে তার পায়ের তলার মাটি তার নিজের গ্রামে এবং আশেপাশের এলাকায় আরো বেশি শক্ত হয়ে যায়।
5. Khaleque’s attempt to bring holy water
খালেক ব্যাপারী যখন তার বড় বউয়ের বাচ্চা হওয়ার জন্য ধলামিয়ার মাধ্যমে আওয়ালপুরের পীরের কাছ থেকে পানি পড়া আনতে পাঠিয়েছিল তখন মজিদ সেটা জানতে পেরে সেটা তার অস্তিত্বের জন্য হুমকি হিসেবে ধরে নেয়। কারণ এই গ্রামে তার মত একজন মোল্লা থাকতে তার গ্রামের চেয়ারম্যান যদি অন্য জায়গায় থেকে পানি পড়া আনতে পাঠায় তাহলে সেটা তার জন্য সম্মানহানি কর। তাই কিভাবে তাদেরকে শায়েস্তা করা যায় সেই ব্যবস্থাও মজিদ খালেক ব্যাপারে কে বুঝিয়ে শুনিয়ে করে ফেলে।
6. Akkas’s attempt to establish a school
মহব্বত নগরের শিক্ষিত যুবক আক্কাশ যখন সেই গ্রামে একটা স্কুল প্রতিষ্ঠা করার কথা গ্রামের মজলিসে তুলে ধরে তখন মজিদ ভেবেই নেয় যে গ্রামের মানুষজন যদি শিক্ষিত হয়ে যায় তাহলে তার মাজার ব্যবসা টিকে থাকবে না এবং তার অস্তিত্ব নষ্ট হয়ে যাবে। তাই টেকনিক অবলম্বন করে সে গ্রামের মানুষদেরকে বলে যে স্কুলের বদলে সেই জায়গায় একটা মসজিদ গড়ে তুলতে চায়। যার মাধ্যমে সে গ্রামের মানুষদেরকে শিক্ষিত হওয়া থেকে বঞ্চিত করে এবং তার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে সফল হয়।
7. Protest of Jamila as an existential threat
মজিদের অস্তিত্বের জন্য হুমকি স্বরূপ আরেকটি চরিত্র হলো তার ছোট বউ জমিলা যে কখনোই তার কথা শুনতো না এবং তার কথা অনুযায়ী নামাজ-কালাম পড়তো না. । এমনকি সবাই যখন জিকিরে ব্যস্ত থাকতো তখন সে নিজের মতো করে সময় কাটাতো। তার এই আচরণে মজিদের মনে হয় যে গ্রামের মানুষ যদি এটা দেখে তখন তারা বলবে যে মজিদের বউ তাকে মানে না তাহলে গ্রামের মানুষ কেমন করে থাকে মেনে চলবে? তাই সে জমিলাকে কঠিন থেকে কঠিনতর শাস্তি প্রদান করে যাতে করে সে মজিদের বিপক্ষে না যায়।
মজিদের জায়গায় সবখানে মসজীদ লেখা যেটা বুঝতে পারছি বাট শ্রুতিকটু লাগছিলো
corrected