Nausea Bangla Summary (বাংলায়)

Nausea Bangla

Jean-Paul Sartre | Short Biography

জঁ-পল সার্ত্র (১৯০৫–১৯৮০) একজন ফরাসি দার্শনিক এবং লেখক ছিলেন। তিনি প্যারিসে জন্মগ্রহণ করেন এবং শীর্ষস্থানীয় একটি স্কুলে দর্শনশাস্ত্র পড়েন। সার্ত্র তার মানব স্বাধীনতা এবং জীবনের অর্থ নিয়ে চিন্তার জন্য বিখ্যাত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তিনি একজন সৈনিক ছিলেন এবং কিছুদিনের জন্য বন্দি হয়েছিলেন। এই অভিজ্ঞতা তাকে বদলে দেয়। সার্ত্রের গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলোর মধ্যে রয়েছে উপন্যাস নজিয়া (১৯৩৮), বই বিইং অ্যান্ড নাথিংনেস (১৯৪৩), এবং নাটক নো এক্সিট (১৯৪৪)। তিনি বিশ্বাস করতেন মানুষকে জীবনে নিজেই অর্থ তৈরি করতে হয়। তিনি আরও বলেছিলেন, “অস্তিত্বের আগে সারমর্ম আসে না,” অর্থাৎ আমরা নিজেরাই আমাদের জীবনের উদ্দেশ্য তৈরি করি। সার্ত্র লেখক সিমোন ডি বোভোয়ারের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। ১৯৬৪ সালে, তিনি সাহিত্য নোবেল পুরস্কার জিতেছিলেন, কিন্তু তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন। তিনি ১৯৮০ সালে মারা যান।

Key Facts

  • Writer: Jean-Paul Sartre (1905 – 1980), An atheist
  • Original Title: La Nausée (French name)
  • Source: Edmund Husserl’s phenomenological method & Sartre’s sense of isolation during his time as a teacher in Le Havre, France,
  • Written Time: From 1932 to 1936
  • Published Date: 1938 in France. 1949 in England
  • Form: Written in a Diary.
  • Genre: Philosophical Novel, Existentialist Fiction
  • Tone: Reflective, Philosophical, Melancholic
  • Point of View: First-person (from the perspective of Antoine Roquentin)
  • Total Pages: 253
  • Total Chapters: 33 chapters
  • Setting: 
  • Time Setting: Early 1930s
  • Place Setting: France (primarily in the fictional town of Bouville)

Key Notes

  • Nausea: নজিয়া মানে হলো জীবনের অর্থহীনতা অনুভব করে ভিতর থেকে বিরক্তি বা অস্বস্তি অনুভব করা।
  • Existentialism: অস্তিত্ববাদ হলো এমন একটি দর্শন, যা বলে মানুষ নিজের জীবনের অর্থ নিজেই তৈরি করে, কারণ জীবনে পূর্বনির্ধারিত কোনো অর্থ নেই।
  • Bad Faith: মানুষ যখন নিজেকে এবং নিজের স্বাধীনতাকে অস্বীকার করে অন্যের চোখে বা সমাজের নিয়মে বন্দি হয়ে থাকে তখন তাকে Bad Faith বলে।

Background:

জঁ-পল সার্ত্র প্রথমে তার বইটির নাম দেন মেলানকোলিয়া। তিনি এই নামটি আলব্রেখ্ট ড্যুরারের একটি ছবির থেকে নিয়েছিলেন। তার বন্ধু সিমোন দে বোভোয়ার বইটিকে বলেছিলেন “Factum on Contingency।” সার্ত্র ১৯৩২ সালে বইটি লেখা শুরু করেন। তিনি এটি আর্মিতে থাকাকালীন এবং বার্লিনে কাজ করছিলেন। বার্লিনে, তিনি হুসার্লের বই পড়েন কিন্তু কোনো ক্লাস করেননি। সেখানে তিনি বইটির দ্বিতীয় খসড়া শেষ করেন। প্রথমে বইটি এন.আর.এফ. প্রকাশক গ্রহণ করেনি। পরে, ১৯৩৭ সালে, প্রকাশক গাসতঁ গালিমার বইটি প্রকাশ করতে রাজি হন এবং নাম দেন নজিয়া। সম্পাদক ব্রাইস প্যারিন কিছু পরিবর্তনের অনুরোধ করেন। সার্ত্র কিছু অংশ বাদ দেন, তবে যৌন অংশ রেখে দেন। তার বন্ধু মিশেল কঁতাঁ বলেন যে প্রথম মেলানকোলিয়া সংস্করণটি অনেকটাই ভিন্ন ছিল।

আরো পড়ুনঃ The Old Man and The Sea Bangla Summary (বাংলায়)

Plot Summary – বাংলা

অ্যান্টোয়ান রোকেন্টিনের বভিলে আসার উদ্দেশ্য: নোভেলটি এভাবে শুরু হয় যে, ১৯৩২ সালের জানুয়ারি মাসে নোভেলের প্রোটাগনিস্ট অ্যান্টোয়ান রোকেন্টিন বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ঘুরে বেরান। এরপর তিনি ফ্রান্সের কাল্পনিক এক নগরীতে আসেন, যার নাম হচ্ছে বভিল। সত্যিকার অর্থে, বভিল নামে ফ্রান্সে কোন বন্দর নগরী নেই। অ্যান্টোয়ান রোকেন্টিন সেই শহরে এই কারণে অবস্থান করছেন যে, সে ফ্রান্সের একজন রাজনীতিবিদ এবং অভিজাত শ্রেণীর মানুষ মার্কুইস ডি রোলেবন (Marquis De Rollebon) সম্পর্কে লিখতে চান। অর্থাৎ সে মার্কুইস ডি রোলেবনের জীবনী লিখতে চান। 

তিনি কিভাবে নজিয়া (প্রথম, দ্বিতীয়, ও তৃতীয়বার) ফিল করেন?: অ্যান্টোয়ান রোকেন্টিন একটা অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে দিনকাল অতিক্রম করছেন। অর্থাৎ কোন কিছুই তার ভালো লাগছে না। কয়েকটা জায়গায় নজিয়া দেখানো হয়েছে।

  • প্রথমত, একদিন তিনি একটা পাথরের টুকরো পেলেন। তার মনে হলো, এটা কি আসলেই পাথরের টুকরো? নাকি কোন কাগজ ভিজে শক্ত হয়ে রয়েছে? অর্থাৎ এই জায়গায় তিনি বুঝে উঠতে পারছে না যে, এই বস্তুটা আসলে কি? তাই তিনি খুব বিব্রতবোধ ফিল করছিলেন এবং অসুস্থ হয়ে পড়লেন। তিনি ঝুঁকে সেই বস্তুটা তোলার চেষ্টা করলে তুলতে পারছিলেন না। এই সময়টায় তার বমি বমি ভাব হতে শুরু করলো। আর এই অবস্থাকেই নোভেলে প্রাথমিকভাবে নজিয়া (Nausea) বলা হয়। অ্যান্টোয়ান রোকেন্টিন অনুভব করলেন, এমন পরিস্থিতি গুলো নোট করে রাখা উচিত। অর্থাৎ তিনি এখন কেমন অনুভব করছেন, এই সবকিছু তিনি ডাইরিতে লিখে রাখতে শুরু করলেন। 
  • দ্বিতীয়ত, এর কিছুক্ষণ পরে সে একটা ক্যাফেতে গেলো। সেখানে গিয়ে সে একটা গ্লাস সাথে নিল। সে গ্লাস হাতে নিয়ে তার অস্তিত্বের বিষয়ে ভাবতে লাগলো। অর্থাৎ এই যে বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন বিষয়ে সে ভাবছে, এটাও হচ্ছে নজিয়া। সে এখন অনুভব করছে, তার ভেতরে যত কিছু হচ্ছে, সে যেসব বিষয় নিয়ে ভাবছে, এই ভাবনাটা শুধুমাত্র তার নয়। বরং পৃথিবীর সবাই-ই তো এমন ভাবনার মধ্যে দিয়েই অতিক্রম করছে। এই যে কেমন কেমন লাগা, কেমন একটা অনুভব করা, এটাই নজিয়া। আর এই বিষয়টা শুধুমাত্র তার মধ্যে এবং এই জায়গায় নয় বরং সমগ্র পৃথিবীতে এবং সবার মধ্যেই ছড়িয়ে আছে।
  • তৃতীয়ত, অ্যানির চিঠির উত্তরে নজিয়া অবস্থা বোঝানো: এরপর অ্যান্টোয়ান রোকেন্টিন তার এক্স গার্লফ্রেন্ড অ্যানির থেকে একটা চিঠি পায়। এই চিঠিতে অ্যানি অ্যান্টোয়ান রোকেন্টিনকে প্যারিসে যেতে বলেছে এবং তার সাথে দেখা করতে বলেছে। অ্যান্টোয়ান রোকেন্টিনও অ্যানির সাথে দেখা করতে চায়। এবং তার যে কিছুই ভালো লাগছে না, সবকিছু কেমন কেমন যেন লাগছে, এটা বোঝাতে চায়। এক কথায় তার নজিয়া অবস্থা সম্পর্কে বোঝাতে চায়। 

সেলফ টটম্যান ও ফ্রাঁসোয়াজ এর সাথে অ্যান্টোয়ান রোকুয়েন্টি এর দেখা: এরপর অ্যান্টোয়ান রোকেন্টিন মার্কুইস ডি রোলেবনের বায়োগ্রাফি লেখার জন্য তার সম্পর্কে পড়তে নিকটবর্তী একটা লাইব্রেরীতে যায়। সেখানে গিয়ে সেলফ টটম্যানের সাথে তার দেখা হয়। টটম্যান আলফাবেটিক্যালি (a,b,c,,,,z) লাইব্রেরির সবগুলো বই পড়ছিল। রোকুয়েন্টি লাইব্রেরীতে যেতো, আর সেলফ টটম্যানের সাথে বই পড়তো। আর এভাবেই নজিয়ার মধ্যে দিয়ে অ্যান্টোয়ান রোকেন্টিনের দিনকাল কাটছিল। এরপর অ্যান্টোয়ান রোকেন্টিনের দেখা হয় ফ্রাঁসোয়াজ এর সাথে। অর্থের বিনিময়ে অ্যান্টোয়ান রোকেন্টিন তার সাথে সেক্স করতো। এখানে কোন ভালোবাসা ছিল না। শুধুমাত্র অর্থের বিনিময়ে শারীরিক চাহিদা পূরণ হতো।

অস্তিত্ববাদ অনুভব করা

  • প্রথমবার অস্তিত্ববাদ অনুভব করে মার্কুইস ডি রোলেবনকে নিয়ে লেখা বন্ধ করা

এই নজিয়া পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে অতিক্রম করার সময়ে, একপর্যায়ে অ্যান্টোয়ান রোকেন্টিন অনুভব করলো মার্কুইস ডি রোলেবনকে নিয়ে লেখা একদমই বৃথাশ্রম। অর্থাৎ তাকে নিয়ে লেখার কোন মানেই হয় না। মার্কুইস ডি রোলেবন তো মারা গেছে। সে অতীত হয়ে গেছে। অর্থাৎ যে ব্যক্তি মারা গেছে, তাকে নিয়ে চিন্তাভাবনা করা বা লেখা মানেই তো অযথা সময় নষ্ট। এখানে সে নিজের অস্তিত্ব বিসর্জন দিয়ে অন্যকে মহিমান্বিত করছে। এখানে বোঝানো হয়েছে অতীত নিয়ে চিন্তা ভাবনা করা মানে সময় নষ্ট ছাড়া আর কিছু নয়। কারণ অতীত তো আর ফিরে আসবে না। অতীত যেমন ফিরে আসে না, রোলেবন তেমনি ফিরে আসবে না। এক্সিসটেন্সিয়ালিজমের ব্যাখায় আমরা দেখেছি সেখানে অতীত বা ভবিষ্যতের কোন মূল্য নেই। বর্তমানকেই সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এখানে অ্যান্টোয়ান রোকেন্টিন নিজের অস্তিত্বকে ভুলে এক মৃত ব্যক্তি সম্পর্কে লিখতে গিয়ে নিজের অস্তিত্বকে বিসর্জন দিচ্ছে। সে এই জায়গায় ২টা জিনিস বুঝতে পারলো, 

  • এক. এই পৃথিবীতে সে একা। অন্যকে নিয়ে লিখতে গিয়ে সে নিজের অস্তিত্বকে ভুলতে চলেছে। 
  • দুই. বর্তমানকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। অতীতের দিকে তাকানো মানেই বৃথাশ্রম।

এই ২টা বিষয় বোঝার পরে সে মার্কুইস ডি রোলেবনের সম্পর্কে লেখা বন্ধ করে দিল। নোভেলের এই জায়গায় এক্সিসটেনসিয়ালিজম এর একটা ফিচারস ডুয়ালিটি দেখানো হয়। অর্থাৎ অ্যান্টোয়ান রোকেন্টিন মার্কুইস ডি রোলেবনের সাথে নিজের তুলনা করছে। সে এমনভাবে নিজের অস্তিত্ব ভুলে যেতে বসেছিল যে আয়নার দিকে তাকিয়ে সে নিজের পরিবর্তে মার্কুইস ডি রোলেবনকে দেখতে পাচ্ছিল।

  • দ্বিতীয়বার অস্তিত্ববাদ অনুভব করা

এরপর একদিন দুপুরবেলা খাবার খাওয়ার সময় সেলফ টটম্যান অ্যান্টোয়ান রোকেন্টিনকে বলে, সে সোশ্যালিজম এবং হিউম্যানিজমে বিশ্বাসী। সোশ্যালিজম এবং হিউম্যানিজমে বিশ্বাস করার ফলে, সে তার আশে পাশের মানুষ এবং তাদের মতামতকে অনেকটা গুরুত্ব দেয়। সে সমাজতন্ত্রের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করে এবং বলে সমাজতন্ত্র এমন একটা আর্থিক ব্যবস্থা যেখানে নির্দিষ্ট একটা কমিউনিটির মধ্যে উৎপাদিত সবকিছুর সুষম বন্টন হয়। অর্থাৎ এই জায়গায় সে তার সমাজতান্ত্রিক মানসিকতার পরিচয় দেয় এবং অ্যান্টোয়ান রোকেন্টিনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করে।

কিন্তু অ্যান্টোয়ান রোকেন্টিনের কাছে এটা মূল্যহীন বলে মনে হয়। কারণ সে কিছুক্ষণ আগেই নিজের অস্তিত্ববাদ নিয়ে ভেবেছে। নিজের অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখার বিষয়ে ভেবে সে মার্কুইস ডি রোলেবনের সম্পর্কে লেখা বন্ধ করে দিয়েছে। তার কাছে হিউম্যানিজম ও সোশ্যালিজমের কোন গুরুত্বই নেই। এরপর সেলফ টটম্যান অ্যান্টোয়ান রোকেন্টিনকে আরো মোটিভেট করতে “Is life worth living” নামক একটা বই সম্পর্কে বলে। মানুষের জীবনের নির্দিষ্ট কোন অর্থ নেই। আমরা আমাদের জীবনকে যেই অর্থ দেবো আমাদের জীবন সেভাবেই চলবে। কিন্তু অ্যান্টোয়ান রোকেন্টিন মনে মনে ভাবলো এই বইয়ের লেখক এর ধারণা এবং তার ধারণার মধ্যে আকাশ-পাতাল তফাৎ রয়েছে। কিন্তু এই বিষয়ে সে সেল্ফ টটম্যানের সাথে বিতর্কে জড়াতে চায় না বলে চুপচাপ থাকলো।

  • তৃতীয়বার অস্তিত্ববাদ অনুভব করা

দুপুর বেলা খাওয়া শেষ করে অ্যান্টোয়ান রোকেন্টিন একটা ট্রামে চড়ে এক্সিসটেন্সিয়ালিজম সম্পর্কে ভাবতে লাগলো। এরপর সে পার্কে একটা বাদাম গাছের নিচে (chestnut tree) বসলো। তখন তার মনে হলো সে নিজের অস্তিত্ব আবিষ্কার করে ফেলেছে। সে গাছটির সাথে কথা বলতে শুরু করলো। সে গাছটির বাইরের দিকটি না দেখে, গাছটির গুণ নিয়ে কথা বলতে থাকলো। সেই জায়গায় পার্কের চেয়ার, বেঞ্চ এগুলোর নাম সম্পর্কে ভাবতে থাকলো। এগুলো নাম তো মানুষ দিয়েছে। কিন্তু আসলেই কি এর নামের সাথে এর প্রকৃত সম্পর্ক আছে? এগুলোর নাম তো অন্য কিছুও হতে পারতো। অর্থাৎ মানুষ তার প্রয়োজন অনুযায়ী সবকিছু ব্যবহার করছে এবং এর নাম দিচ্ছে কিন্তু এর সাথে সম্পর্কটা আসলে নেই। এখানে বোঝানো হয়েছে, স্বীয় অস্তিত্ববাদ সম্পর্কে আমরা যতক্ষণ অজ্ঞাত থাকবো, ততক্ষণ পর্যন্ত কোন কিছুই আমাদের অস্তিত্বকে সঠিকভাবে উপস্থাপন করতে পারবে না। এভাবে সে নিজের অস্তিত্ব খোঁজার চেষ্টা করে।

অ্যানির সাথে প্যারিসে সাক্ষাৎ: ঐ রাতে অ্যান্টোয়ান রোকেন্টিন অ্যানির সাথে দেখা করতে প্যারিসে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। সে ভাবে, অ্যানি যেহেতু তাকে স্বেচ্ছায় ইনভাইট করেছে, তাহলে হয়তো অ্যানি আবারও তাদের পুরনো সম্পর্ক ঠিক করতে চায়। সে একবার বভিলে যাবে এবং ফিরে এসে পার্মানেন্টলি প্যারিসে অ্যানির সাথে থাকবে। মোটামুটি ৬ বছর পরে অ্যান্টোয়ান রোকেন্টিন অ্যানির সাথে দেখা করে।

অ্যানিকে দেখে অ্যান্টোয়ান রোকেন্টিন ভাবতে থাকে, অ্যানি আগের চেয়ে অনেক মোটা হয়ে গেছে। তার চেহারা অনেকটা খারাপ হয়ে গেছে। অ্যানি মঞ্চে অভিনয় করতো। তার অভিনয় খুব সুন্দর ছিল। এবং প্রতিটা মোমেন্টের সাথে সে নিজেকে খুব ভালো মানিয়ে নিতো। কিন্তু সেই অ্যানি এখন অভিনয়ের ক্ষেত্রে পারফেক্ট মোমেন্টের প্রতি খেয়াল করে না। আর সে এখন অর্থের বিনিময়ে তার একটা বয়ফ্রেন্ডের সাথে থাকে। অ্যানি অ্যান্টোয়ান রোকেন্টিনকে বলে, সে জীবনকে অনেক বেশি উপভোগ করেছে। সে আর অ্যান্টোয়ান রোকেন্টিনের কাছে ফিরতে চায় না। পরের দিন অ্যানি তার নতুন বয়ফ্রেন্ডের সাথে লন্ডনে ফিরে যায়। 

অ্যান্টোয়ান রোকেন্টিনের বভিলে ফিরে আসা এবং শেষ বারের মতো অস্তিত্ববাদ অনুভব করা: এদিকে অ্যান্টোয়ান রোকেন্টিন বভিলে চলে আসে। সে কিছুদিন এখানেই কাটায়। একদিন সে শুনতে পায় কোর্সিকান (Corsican) নামক ওই লাইব্রেরিয়ান সেলফ টটম্যানকে একটা অল্প বয়সী ছেলের হাতে হাত বোলাতে দেখেছে। অর্থাৎ এখানে সেক্সুয়াল রিলেশনশিপে (Abusive) যাওয়ার দিকে ইঙ্গিত দিচ্ছে। এটা দেখে লাইব্রেরিয়ান তাকে মেরে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেয়। সারা জীবনের জন্য তার এই লাইব্রেরীতে আসা বন্ধ করে দেয়। অ্যান্টোয়ান রোকেন্টিনের সাথে যদিও সেলফ টটম্যানের সম্পর্ক খুব একটা ভালো ছিল না, সে তাকে পছন্দও করতো না, তবে সেলফ টটম্যানের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ সে বিশ্বাস করলো না।

এরপরে সে ক্যাফেতে গিয়ে ফ্রাঁসোয়াজ (Francois) এর সাথে দেখা করে এবং তার থেকে বিদায় নেয়। অ্যান্টোয়ান রোকেন্টিন এই ফ্রাঁসোয়াজের সাথেই মাঝেমধ্যে টাকার বিনিময়ে সেক্স করে সময় কাটাতো। এই ক্ষেত্রে মাঝেমধ্যে সে বিব্রতবোধ করতো, আবার মাঝে মধ্যে অনিরাপদও অনুভব করতো। যাইহোক, তারা একে অন্যকে আন্তরিকতা ছাড়াই বিদায় জানালো। কারণ তাদের মধ্যে অর্থের লেনদেনের বিনিময়ে সেক্স করা ছাড়া আর কোন সম্পর্ক ছিল না। এখানে কারো পক্ষ থেকেই কোনরূপ আবেগ কাজ করেনি।

শেষ বারের মতো অস্তিত্ববাদ অনুভব করা

অ্যান্টোয়ান রোকেন্টিন চলে আসার সময়ে সেই ক্যাফের একজন ওয়েট্রেস তাকে বলে যে সে অ্যান্টোয়ান রোকেন্টিনের জন্য তার প্রিয় গান “Some of these days” এর রেকর্ড বাজাবে। এই গানের সিডিতে অনেকটা দাগ পড়ে গিয়েছে। অর্থাৎ এটা প্রায় নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়ে গিয়েছিল। এটা দেখে অ্যান্টোয়ান রোকেন্টিন ভাবতে থাকে, এই সিডিটা শুধুমাত্র একটা বস্তুগত উপকরণ। কিন্তু এর অস্তিত্ব লুকিয়ে আছে এর গানের ভেতরে। আর এর অস্তিত্ব এখনো অক্ষুন্ন রয়েছে। অর্থাৎ সিডিটা নষ্ট হওয়ার উপক্রম হলেও, গানটি এখনো অক্ষত রয়েছে। 

তাই রেকর্ড এর উপরে নির্ভর করে নয় বরং এই গানের মতো তার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখবে, এমন কিছু তাকে তৈরি করতে হবে। তাই সে সিদ্ধান্ত নিল, এই গবেষণার কাজ ছেড়ে দিয়ে সে একটা নোভেল লিখবে। আর এই নোভেল তার অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখবে। অর্থাৎ সে তার নিজের অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখতে একটা বায়োগ্রাফিক্যাল নোভেল লিখবে। আর এখানেই নোভেলটি শেষ হয়ে যায়।

7 Important Points:

  1. Existence precedes essence: মানুষের স্বাধীনতার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা দূর করার জন্য Sarte যুক্তি দেন, অস্তিত্ব থাকবে গুণাবলীর আগে। যদি অস্তিত্ব গুণাবলীর আগে থাকে, তাহলে মানুষ নিজেই তার গুণাবলী তৈরি করবে এবং সে নিজেই তার কর্মের জন্য দায়ী হবে। এই চিন্তাধারায় ঈশ্বরের অস্তিত্বের কোনো প্রয়োজন নেই।
  2. Bad Faith – নিজের মুক্ত অস্তিত্বের চেয়ে নিজেকে আলাদা হিসাবে উপস্থাপন করার প্রবণতাকে খারাপ বিশ্বাস বলা হয়।
  • Bad faith of Monsieur Fasquelle – তিনি নিজের পেশার দ্বারা নিজেকে মূল্যায়ন করতেন। কিন্তুতে তিনি এটা ভুলে গিয়েছিলেন যে, তার পেশা তিনি নিজেই বাছাই করেছিলেন। অন্য কেউ জোর করে এই পেশা তার উপরে চাপিয়ে দেয়নি। এটাই তার Bad faith.
  • Bad Faith of Self-Taught Man – এই ব্যক্তি মনে করেন তিনি বভিল লাইব্রেরির সব বই পড়ে শেষ করে ফেলবেন এবং তিনি সবচেয়ে জ্ঞানী। কিন্তু অবশেষে তিনি একটা ছেলেকে সেক্সুয়াল হারেসমেন্ট করতে চেয়েছিলেন। এখানে স্ব-বিরোধী একটা চিন্তাভাবনা দেখানো হয়েছে। অর্থাৎ তার বাইরের আবরণ একরকম কিন্তু ভেতরের আচরণ অন্যরকম। এটাই Bad faith. আবার তিনি শুধুমাত্র বই এবং অন্যের জ্ঞান নিজের মধ্যে নিয়ে সর্বোচ্চ জ্ঞানী হওয়ার চেষ্টা করছেন যেটিও Bad Faith.
  • Bad faith of Anny – অ্যানি রোকেন্টিনকে ভালোবাসতে পারবে না। আবার সে তার বর্তমান বয়ফ্রেন্ডকেও ভালোবাসে না। তার সাথে সে শুধুমাত্র অর্থের বিনিময়ে রয়েছে। কিন্তু সে একটা পারফেক্ট মোমেন্টের অপেক্ষায় আছে। এটা bad faith.
  1. Isolation: আমাদের প্রোটাগনিস্ট শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত একদম একাকীত্বতায় ভোগে। এর মূল কারণ হচ্ছে নজিয়া। তিনি প্রতিটা বস্তুর খুব গভীরে চলে যেতেন। এজন্য মানুষের প্রতি তার একটা অনীহা কাজ করতো। আর তাই তিনি আইসোলেটেড হয়ে গিয়েছিলেন। এছাড়া অ্যানিও একাকীত্বতায় ভুগছে।
  2. Subjective Consciousness: আমাদের আশেপাশে যা কিছু রয়েছে তা অন্যের দ্বারা মূল্যায়িত হয়। যেমন কোন গাছকে একজন কবি একভাবে উপস্থাপন করবেন। একজন উদ্ভিদ বিজ্ঞানী আরেকভাবে উপস্থাপন করবেন। অর্থাৎ কোন বস্তুকে বা ব্যক্তিকে নিজস্ব পার্সপেক্টিভ থেকে মূল্যায়ন করাই সাবজেক্টিভ কনশাসনেস। এর মাধ্যমে এক্সিসটেনশিয়ালিজম প্রকাশ পায়।
  3. Responsibility and Freedom: কাউকে যদি স্বাধীনতা দেওয়া হয় তাহলে এর পাশাপাশি রেসপন্সিবিলিটিও চলে আসে। আর কেউ রেসপন্সিবল হলে, তার স্বাধীনতাকেই সে অর্জন করে।
  4. Superficiality: অতিরঞ্জন মনোভাব প্রকাশ করা। মানুষের যা আছে তার চেয়ে অতিরঞ্জিত মনোভাব প্রকাশ করতে সে পছন্দ করে। এটা সবার ভেতরেই থাকে। এই নোভেলে সেলফ টটম্যানের মধ্যে superficiality বেশি দেখা যায়।
  5. Absurdity: অর্থহীনতা। সুপার ফিসিয়ালিটি প্রকাশ করতে গিয়েই মানুষের absurdity প্রকাশ পায়।

Detailed বাংলা সামারি

অধ্যায় ১: সম্পাদকীয় নোট: একটি ছোট নোটে বলা হয়েছে যে নজিয়া বইটি অ্যান্টোয়ান রোকেন্টিনের কাগজপত্র থেকে হুবহু অনুলিপি করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে যে প্রথম যে পাতাগুলির তারিখ নেই, সেগুলি প্রায় ১৯৩২ সালের জানুয়ারিতে লেখা হয়েছিল। অ্যান্টোয়ান রোকেন্টিন ভ্রমণ করার পর তার কাজ শেষ করতে বুভিল শহরে চলে যান। নোটটিতে “সম্পাদকরা” স্বাক্ষর করেছেন।

অধ্যায় ২: তারিখবিহীন পৃষ্ঠা: রোকেন্টিন চিন্তিত যে তার মধ্যে কিছু “পরিবর্তন” হয়েছে, কিন্তু তিনি কীভাবে তা বর্ণনা করেন নি। তিনি একটি ডায়েরি লেখার কথা ভাবেন। তিনি বিশ্বাস করেন এটি তাকে সাহায্য করবে জানতে যে তিনি সত্যিই পরিবর্তিত হয়েছেন কি না। রোকেন্টিন শনিবার এবং তার আগের দিনের কথা লেখেন। শনিবার, তিনি সমুদ্রে ছুড়ে মারার জন্য একটি পাথর তুলেছিলেন। কিন্তু তিনি হঠাৎ অসুস্থ বোধ করেন, পাথরটি ফেলে দেন এবং চলে যান। কাছের কিছু বাচ্চা তার দিকে তাকিয়ে হেসেছিল। রোকেন্টিন জানেন না কেন পাথর বা সমুদ্র তাকে অসুস্থ করে তুলেছিল। তিনি আগের দিনের কথা বলেন নি, কিন্তু উল্লেখ করেন যে তিনি অকারণে ভয় পেয়েছিলেন। রোকেন্টিন নিজেকে বোঝান যে এই অদ্ভুত অনুভূতিগুলি তাকে পাগল করে তোলেনি, তবে তিনি নিশ্চিত নন। পরে, তিনি অনেক ভালো বোধ করেন। তিনি জানালার বাইরে মানুষ এবং গাড়ি দেখতে থাকেন এবং শান্ত অনুভব করেন। তিনি যখন পরিচিত কারো পায়ের শব্দ সিঁড়িতে শুনতে পান, তখন তার আবার স্বাভাবিক মনে হয় এবং তিনি নিরাপদ বোধ করেন। রোকেন্টিন মনে করেন এখন তিনি ঠিক আছেন এবং ঘুমানোর প্রস্তুতি নেন। তিনি তার ডায়েরি লেখা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেন। তার শেষ বাক্যটি অসম্পূর্ণ থাকে, যখন তিনি ভাবেন কীভাবে একটি ডায়েরি আকর্ষণীয় হতে পারে।

অধ্যায় ৩: সোমবার, ২৯ জানুয়ারি ১৯৩২: রোকেন্টিন এখন বিশ্বাস করেন যে তার সাথে কিছু ভুল হচ্ছে। তিনি কিছু অদ্ভুত ঘটনার কথা বলেন। একবার তিনি কিছু স্পর্শ করেছিলেন যা তার মনে হয়েছিল “ব্যক্তিত্ব” আছে, কিন্তু পরে বুঝতে পারেন সেটি আসলে একটি দরজার হ্যান্ডেল মাত্র। তিনি এমনকি সেল্ফ-টট ম্যানের মুখও চিনতে পারেননি, যদিও তাকে দুই বছর ধরে চিনতেন। রোকেন্টিন সেল্ফ-টট ম্যানের হাতে ঘৃণা অনুভব করেন এবং মনে হয়েছিল তার হাতটি যেন একটি কৃমির মতো। রোকেন্টিন ভাবতে থাকেন, পরিবর্তনটা কি তার মধ্যে হয়েছে, নাকি চারপাশের পৃথিবী বদলে গেছে।

একটি নতুন অংশে, রোকেন্টিন সিদ্ধান্ত নেন যে তার মধ্যেই পরিবর্তন হয়েছে। তিনি ভাবেন এই পরিবর্তনগুলো ধীরে ধীরে ঘটেছে, এবং এখন তিনি আর এগুলোকে উপেক্ষা করতে পারছেন না। তিনি মনে করেন, যখন তিনি মের্সিয়ার নামে এক প্রত্নতাত্ত্বিকের সাথে ভ্রমণ করেছিলেন, তখন ভ্রমণের ধারণাটি তার খুব পছন্দ হয়েছিল। কিন্তু ছয় বছর ভ্রমণের পর, হঠাৎ করে সবকিছু তাকে ঘৃণার মতো অনুভব করাতে শুরু করে। তিনি বিশেষভাবে স্মরণ করেন মের্সিয়ারের দাড়ির সুগন্ধি তাকে এতটাই বিরক্ত করেছিল যে তিনি ফ্রান্সে ফিরে যেতে চেয়েছিলেন। রোকেন্টিন অতীতের কথা ভাবা বন্ধ করে এবং ভাবেন তার জীবনে বড় কোনো পরিবর্তন আসতে চলেছে কি না। তিনি ভয়ে আছেন যে তার ভেতরে কিছু জেগে উঠবে এবং তার ওপর নিয়ন্ত্রণ নেবে।

অধ্যায় ৪: মঙ্গলবার, ৩০ জানুয়ারি: রোকেন্টিন বলেন, তার শেষ ডায়েরি লেখার পর থেকে “কিছু নতুন” ঘটেনি। তিনি ক্যাফে ম্যাবলিতে খাওয়ার সময় লিখছিলেন, যেখানে তিনি প্রায়ই যান। ক্যাফের মালিক, মসিয়েঁ ফাসকেল, ক্যাফে ব্যস্ত থাকলে মানুষের সঙ্গে কথা বলেন এবং যখন ক্যাফে ফাঁকা থাকে, তখন তিনি ঘুমিয়ে পড়েন। রোকেন্টিন অন্যান্য গ্রাহকদের একে অপরের সাথে কথা বলতে দেখেন এবং ভাবেন তিনি কতটা একা। মাঝে মাঝে তিনি কাছেই কাজ করা ফ্রাঁসোয়াজের সাথে যৌন সম্পর্ক করেন, কিন্তু তাদের কথোপকথন ঠান্ডা এবং অনুভূতিহীন। রোকেন্টিন তার প্রাক্তন প্রেমিকা, অ্যানির কথা প্রায় ভুলেই গেছেন। তার বেশিরভাগ সৃতি অস্পষ্ট এবং খুব বেশিক্ষণ থাকে না।

রোকেন্টিন মনে করেন, যারা একা থাকে তারা কিভাবে অন্যদের সাথে কথা বলতে হয় তা ভুলে যায়। তবে তিনি বিশ্বাস করেন যে যারা একা থাকে তারা চারপাশের সবকিছু আরও ভালোভাবে লক্ষ্য করে, কারণ তাদের অন্যের মতামতের কথা ভাবতে হয় না। তিনি স্মরণ করেন একবার নীল পোশাক পরা একটি মহিলাকে দেখতে পেয়েছিলেন, যে একটি রেইনকোট পরা একজন কালো মানুষের সাথে ধাক্কা খেয়েছিল। তিনি তাদের পোশাকের রং এবং মুখের অভিব্যক্তি স্পষ্টভাবে মনে করতে পারেন। সেই দৃশ্যটি রোকেন্টিনের মধ্যে একটি শক্তিশালী অনুভূতি জাগিয়েছিল, তবে দ্রুত তা মিলিয়ে যায়। তিনি বলেন, শুধুমাত্র একা থাকা মানুষই এমন অনুভূতি অনুভব করতে পারে। রোকেন্টিন দীর্ঘদিন ধরে এই অনুভূতি পেয়েছেন, কিন্তু তিনি ভাবতেন এটি দূর করা সম্ভব, যদি তিনি অন্যদের সাথে থাকেন। এখন, তিনি মনে করেন খুব দেরি হয়ে গেছে।

রোকেন্টিনের বস্তুগুলোর দিকে তাকাতে কষ্ট হয়। তার মনে হয় বস্তুগুলোর মধ্যে আরও কিছু আছে, কিন্তু তিনি ব্যাখ্যা করতে পারেন না তা কি। তিনি একজন ব্যক্তির কথা মনে করেন, যিনি তার শৈশবে দেখেছিলেন। তার ঘাড়ে একটি টিউমার ছিল, এক পায়ে বুট আর অন্য পায়ে স্লিপার পরতেন, এবং তিনি মাঝে মাঝে ভয়ে নিজের পায়ের দিকে তাকাতেন। রোকেন্টিন ও তার বন্ধুরা ওই ব্যক্তির একাকীত্ব দেখে ভীত ছিল।

রোকেন্টিন চান তিনি যেন আবার অ্যানির সাথে কথা বলতে পারেন এবং কাউকে তার ভয় সম্পর্কে বলতে পারেন। তিনি স্বীকার করেন যে তিনি তার ডায়েরির শুরুতে মিথ্যা বলেছিলেন: কিছু ঘটেছিল। তিনি মাটিতে একটি কাগজের টুকরো দেখেছিলেন এবং তা তুলতে চেয়েছিলেন, কিন্তু পারেননি। রোকেন্টিন সাধারণত মাটিতে পড়ে থাকা জিনিস তুলতে পছন্দ করেন, তবে এবার তিনি নিজেকে তা করতে বাধ্য করতে পারেননি। তার মনে হয় তার স্বাধীনতা হারিয়ে গেছে এবং তিনি আর যা চান তা করতে পারেন না। তিনি বলেন, যখন তিনি কোনো বস্তু স্পর্শ করেন, তখন মনে হয় যেন সেগুলো তাকে স্পর্শ করছে। তিনি এই অনুভূতিটিকে “এক ধরনের বমি ভাব” বলে বর্ণনা করেন।

অধ্যায় ৫: বৃহস্পতিবার সকালে পাঠাগারে: রোকেন্টিন একটি কথোপকথন সম্পর্কে লেখেন, যা তিনি শুনেছিলেন লুসি, একজন পরিচ্ছন্নতাকর্মী এবং হোটেলের মালিক মহিলার মধ্যে। লুসি তার তরুণ, সুদর্শন স্বামী সম্পর্কে অভিযোগ করেছিলেন। রোকেন্টিন মনে করেন লুসির স্বামী হয়তো টাকার জন্য তাকে বিয়ে করেছেন, কারণ লুসি মধ্যবয়সী। লুসি মহিলাকে বলেন, তিনি চান তার স্বামী যেন অন্য মহিলাদের সাথে শোয়। তিনি আরও বলেন, তাকে “বিবাহে নিয়ন্ত্রণ” নিতে হবে। রোকেন্টিন মনে করেন লুসি তার দুঃখের মধ্যে আটকে আছেন। তিনি মনে করেন লুসি গান গায় এবং হালকা সুরে গুনগুন করে নিজেকে তার দুঃখের কথা ভাবতে বাধা দেন। তিনি ভাবেন লুসি কি তার কষ্ট থেকে মুক্তি চাইছেন কি না।

অধ্যায় ৬: বৃহস্পতিবার বিকেল: রোকেন্টিন আবার পড়েন সেই অংশটি যেখানে তাকে মারকুইস ডি রোলেবনের সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এতে রোলেবনের নারীদের প্রতি সাফল্য এবং রাজনীতির সাথে তার জড়িত থাকার কথা বলা হয়েছে, যা তাকে হঠাৎ কারাবাস এবং মৃত্যুর দিকে নিয়ে যায়। পড়তে পড়তে রোকেন্টিন বুঝতে পারেন যে আগে যতটা আগ্রহ ছিল, এখন আর তেমন আগ্রহ নেই। তিনি দেখতে পান যে তিনি আর রোলেবনের জন্য লিখতে চান না, তবে তিনি লিখতে চান কারণ তিনি লেখার আনন্দ পান। রোকেন্টিন ভাবেন, রোলেবন কি পল-I হত্যার সাথে জড়িত ছিল, তবে তিনি মনে করেন “এর প্রমাণ কোনোদিন পাওয়া যাবে না।”

অধ্যায় ৭: শুক্রবার: রোকেন্টিন ঘরের ভিতরে থাকেন, কারণ উজ্জ্বল রোদ তাকে বিরক্ত করছে। তিনি অপছন্দ করেন কীভাবে সূর্যের আলো সবকিছুকে এত স্পষ্ট করে দেখায়, তার নিজের দেহ এবং চারপাশের বস্তুগুলোও। রোকেন্টিন ঠিক করেন পল-I এর হত্যার সাথে রোলেবনের জড়িত থাকার বিষয়টি খুঁজে বের করবেন, তবে তিনি শীঘ্রই বিরক্ত হয়ে পড়েন এবং তার গবেষণা বন্ধ করে দেন। রোকেন্টিন আয়নায় নিজের দিকে তাকান, কিন্তু তার প্রতিফলন বুঝতে পারেন না। তিনি তার মুখের বিভিন্ন অংশ দেখেন, কিন্তু মনে হয় পুরো মুখটাই অদ্ভুত। তিনি তার মুখ টানেন এবং তার নরমতার জন্য ঘৃণা অনুভব করেন। রোকেন্টিন ভাবেন, তিনি কি নিজেকে চিনতে পারছেন না কারণ তার কোনো বন্ধু নেই?

অধ্যায় ৮: ৫.৩০: রোকেন্টিন ফ্রাঁসোয়াজকে দেখতে যান রঁদেভু ডি শেমিনোতে, কিন্তু ওয়েট্রেস মাদেলিন তাকে বলেন যে ফ্রাঁসোয়াজ সেখানে নেই। রোকেন্টিন হতবুদ্ধি এবং হতাশ বোধ করেন। তিনি “নজিয়া”-র মধ্যে হারিয়ে যান, যা তিনি তার অদ্ভুত অনুভূতির জন্য ব্যবহার করেন। এক ধোঁয়াশার মতো মানসিক অবস্থায়, রোকেন্টিন কিছু লোককে তাস খেলতে দেখেন। তিনি মাদেলিনকে তার প্রিয় গান চালানোর অনুরোধ করেন, এবং যখন গান শুরু হয়, রোকেন্টিন খুশি হতে শুরু করেন। তিনি কোরাস পছন্দ করেন এবং মনে করেন এটি “প্রয়োজনীয়।” যখন কোরাস বাজে, তার নজিয়া চলে যায় এবং তিনি খুব ভালো বোধ করেন। কিন্তু গান থামলে, রোকেন্টিন আবার খারাপ বোধ করেন এবং ক্যাফে ছেড়ে চলে যান।

বাইরে, সতেজ বাতাস এবং শক্ত পাকা রাস্তা তাকে একটু ভালো অনুভব করায়। তিনি যখন বুলেভার্ড নোয়ারে হাঁটেন, তখন তিনি ধীরে ধীরে শহরটিকে লক্ষ্য করেন। পুরনো পোস্টারে ঢাকা একটি বেড়ার কাছে তিনি থামেন এবং রাস্তার আলো ও দোকানের আলো থেকে দূরে অন্ধকারে দাঁড়ান। কাছাকাছি লোকজন পান করছে, তাস খেলছে এবং হাঁটছে, কিন্তু রোকেন্টিন একা। তিনি শান্ত অনুভব করেন এবং তার একাকীত্বের “বিশুদ্ধতা” পছন্দ করেন।

একজন পুরুষ এবং একজন নারী প্রবেশ করেন, চিৎকার করছেন। রোকেন্টিন দেখেন, তারা দুজন হচ্ছেন লুসি এবং তার স্বামী চার্লস। চার্লস লুসিকে চুপ থাকতে বলেন এবং চলে যান। লুসি তাকে ফিরে আসার জন্য অনুরোধ করেন, কিন্তু তিনি আসেন না। তিনি রোকেন্টিনের দিকে তাকান কিন্তু চিনতে পারেন না। রোকেন্টিন তাকে কষ্ট পেতে দেখেন, লুসি তার গলা স্পর্শ করেন এবং স্থিরভাবে দাঁড়িয়ে থাকেন। রোকেন্টিন মনে করেন লুসি যেন পাথরের মতো, তার চারপাশের কঠিন বস্তুর সাথে মিলে গেছে। রোকেন্টিন যখন চলে যাচ্ছেন, তিনি বুঝতে পারেন তিনি লুসির যন্ত্রণা অনুভব করতে চান কারণ তার যন্ত্রণা তার নিজের “ফাঁকা বিশুদ্ধতার” চেয়ে শক্তিশালী।

অধ্যায় ৯: মঙ্গলবার, ১১.৩০: রোকেন্টিন পাঠাগারে তার গবেষণা নিয়ে কাজ করেন এবং পরে বাইরে গিয়ে ধূমপান করেন। ধূমপান করার সময়, তিনি লোকজনকে গুস্তাভ ইম্পেত্রাজের একটি ব্রোঞ্জের মূর্তির পাশ দিয়ে হাঁটতে দেখেন। তিনি ভাবেন বেশিরভাগ মানুষ মূর্তিটি নিয়ে খুব একটা ভাবে না। তারা দ্রুত মূর্তির দিকে তাকায় এবং ধরে নেয় যে ইম্পেত্রাজ তাদের মতো চিন্তা করতেন। তবে একজন বৃদ্ধা থেমে ভয়ের সাথে মূর্তিটির দিকে তাকান, তারপর চলে যান। যখন রোকেন্টিন মূর্তির দিকে তাকান, তার মনে হয় ইম্পেত্রাজ তাকে দূরে সরাতে চাইছেন। এরপর রোকেন্টিন সেল্ফ-টট ম্যানের সাথে দেখা করেন। তারা কিছু অস্বস্তিকর কথোপকথন করেন এবং একসাথে আবার পাঠাগারে ফিরে যান।

অধ্যায় ১০: রাত ৩.০০ P.M.: রোকেন্টিন আবার তার গবেষণায় ফিরে যান, কিন্তু খুব একটা আগ্রহী নন। তিনি লক্ষ্য করেন যে সেল্ফ-টট ম্যান তাকে মুগ্ধ হয়ে লিখতে দেখছেন। রোকেন্টিন দেখেন সেল্ফ-টট ম্যান যে বইগুলো পড়ছেন এবং বুঝতে পারেন যে তিনি লাইব্রেরির সব বই বর্ণানুক্রমে পড়ছেন। সেল্ফ-টট ম্যানের এই দৃঢ়তার জন্য রোকেন্টিন মুগ্ধ হন। তিনি কল্পনা করেন সেল্ফ-টট ম্যান যেদিন এই বিশাল কাজ শুরু করেছিলেন এবং যেদিন তিনি শেষ করবেন। রোকেন্টিন কল্পনা করেন তিনি শেষ বইটি পড়ার পর নিজেকে প্রশ্ন করবেন, “এখন আমি কী করব?”

আরো পড়ুনঃ The Scarlet Letter Bangla Summary (বাংলায়)

অধ্যায় ১১: শুক্রবার ৩.০০ P.M.: রোকেন্টিন পাঠাগারের জানালার পাশে দাঁড়িয়ে দেখেন সেই ভীতসন্ত্রস্ত বৃদ্ধা আবারও  পাশ দিয়ে হাঁটছেন। তাকে দেখতে গিয়ে সময় যেন ধীরে ধীরে চলতে থাকে এবং মুহূর্তগুলো একে অপরের সাথে মিশে যায়। রোকেন্টিন তার ভ্রমণের কথা ভাবতে শুরু করেন। তিনি বুঝতে পারেন যে আর তার পক্ষে স্মৃতি এবং কল্পনার মধ্যে পার্থক্য করা সম্ভব নয়। তার কিছু স্মৃতি মুছে গেছে বা বিভ্রান্তিকর। তিনি একজন মহিলার একটি ছবি তুলে নেন, কিন্তু তাকে চিনতে পারেন না। যখন তিনি ছবিটি উল্টে দেন, তখন দেখেন তাতে “অ্যানি” নামটি লেখা আছে।

সেল্ফ-টট ম্যান রোকেন্টিনকে তার ভ্রমণের ছবি দেখাতে বলেন। তিনি রোকেন্টিনকে ভাগ্যবান বলেন, কারণ তিনি পৃথিবী দেখতে পেরেছেন। রোকেন্টিন তাকে ছবি দেখালে, সেল্ফ-টট ম্যান উত্তেজিত হয়ে ওঠেন এবং ছবিগুলোকে তার পড়া তথ্যের সাথে মেলাতে চেষ্টা করেন। তিনি বলেন, তিনি ইচ্ছা করেন তিনিও ভ্রমণ করতে এবং সাহসিক অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারতেন। যখন তিনি রোকেন্টিনকে জিজ্ঞাসা করেন, তিনি কোনো সাহসিক অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন কিনা, রোকেন্টিন প্রথমে হ্যাঁ বলতে চান। কিন্তু তারপর তার মনে হয়, তার কখনো কোনো সত্যিকারের অভিজ্ঞতা হয়নি। তিনি ভাবেন, “আমার জীবনে কিছু ঘটনা ঘটেছে, কিন্তু কোনো অ্যাডভেঞ্চার নয়।” তিনি ভাবতে শুরু করেন কেন কখনও কোনো অ্যাডভেঞ্চার ঘটেনি এবং এটি কি কখনও হবে।

অধ্যায় ১২: শনিবার দুপুর: লাইব্রেরিতে, রোকেন্টিন দেখেন সেল্ফ-টট ম্যান দূর থেকে একজন শিক্ষার্থীর দিকে তাকিয়ে আছেন। রোকেন্টিন আবার অ্যাডভেঞ্চার নিয়ে ভাবতে শুরু করেন। তিনি বিশ্বাস করেন, কিছু তখনই অ্যাডভেঞ্চার হয় যখন তা গল্প হিসেবে বলা হয়। যখন অ্যাডভেঞ্চার ঘটে, তখন এটি অন্য যেকোনো সময়ের মতো মনে হয় এবং বিশেষ কিছু মনে হয় না। তবে যখন এটি শেষ হয়, তখনই এটি একটি “সূচনা” পায়।

রোকেন্টিন মনে করেন যে গল্পগুলো গুরুত্বপূর্ণ লাগে কারণ মানুষ জানে যে সেগুলো শেষ হবে, আর এই কারণেই প্রতিটি মুহূর্তকে অর্থপূর্ণ মনে হয়। তিনি লেখেন যে, তিনি চান তার জীবন স্মৃতির মতোই অর্থবহ এবং গোছালো হোক, যখন তিনি বাস করছেন, কিন্তু তিনি জানেন এটি সম্ভব নয়।

অধ্যায় ১৩: রবিবার: সকালে, রোকেন্টিন একটি দীর্ঘ সময় ধরে হাঁটার জন্য বের হন। তিনি কল্পনা করেন লোকজন গির্জায় যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। যখন তিনি রু টুর্নব্রাইডে পৌঁছান, তখন তিনি হাঁটতে থাকা পুরুষদের একটি দলের সাথে যোগ দেন। রোকেন্টিন তার পাশ দিয়ে যাওয়া দোকানপাট এবং ভবনগুলোর ইতিহাস নিয়ে ভাবেন। তিনি চেম্বার অফ কমার্সের প্রেসিডেন্টকে তার পাশে হাঁটতে দেখেন এবং আশেপাশের মানুষগুলোকে লক্ষ্য করতে শুরু করেন।

রোকেন্টিন ডিনারের জন্য থামেন, কিন্তু তিনি তার বইয়ে মনোযোগ দিতে পারেন না কারণ তার পাশে বসে থাকা এক দম্পতির গসিপ এবং ফ্লার্ট শুনতে থাকেন। ডিনারের পর, তিনি আবার হাঁটতে শুরু করেন। তিনি রু ব্রেসানে হাঁটেন এবং আশেপাশের মানুষগুলোকে লক্ষ্য করেন। তিনি নিজেকে মুক্ত অনুভব করেন এবং সমুদ্রের দিকে হাঁটতে সিদ্ধান্ত নেন, যা তাকে “আলোর পুকুরের” মতো মনে হয়। রোকেন্টিন লক্ষ্য করেন যে কর্মজীবী শ্রেণীর মানুষরা তাদের একমাত্র বিশ্রামের দিনটিতে বিশ্রাম নিচ্ছে, কিন্তু তিনি চলতে থাকেন।

তিনি দম্পতি, শিশু এবং তরুণী মেয়েদের আকাশ এবং সমুদ্রের দিকে তাকাতে দেখেন। এক মুহূর্তের জন্য, তিনি তার আশেপাশের মানুষদের প্রতি মায়া অনুভব করেন, কিন্তু তারপর নিজেকে মনে করিয়ে দেন যে তিনি তাদের মতো নন। হঠাৎ, রোকেন্টিন অ্যাডভেঞ্চারের একটি ডাক অনুভব করেন এবং সান্ত সিসিলের দিকে হাঁটতে থাকেন। তিনি আনন্দিত বোধ করেন এবং রাস্তায় একটি মাইলফলক স্পর্শ করেন। তিনি আত্মসচেতনতা অনুভব করেন, যা নজিয়ার মতোই, তবে একইসাথে ভিন্ন।

রোকেন্টিন আরও অ্যাডভেঞ্চারের ডাক অনুভব করেন, কিন্তু জানেন না কোথায় যাবেন। তিনি প্লেস ডুকোটনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। সেখানে পৌঁছে তিনি মানুষে পূর্ণ ক্যাফে ম্যাবলির ভিতরে উঁকি দেন এবং একজন নারী ক্যাশিয়ারকে দেখতে পান। হঠাৎ, তার মনে হয় সময় থেমে গেছে এবং তার দিনটি একটি মুহূর্তের সুখে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

পরে, যখন রোকেন্টিন বুলেভার্ড ডে লা রেডাউটে হাঁটেন, তিনি অনুশোচনা বোধ করেন এবং ভাবেন, এই সংক্ষিপ্ত অ্যাডভেঞ্চারের মুহূর্তগুলো কি প্রমাণ করে যে তিনি তার জীবন নষ্ট করেছেন।

অধ্যায় ১৪: সোমবার: রোকেন্টিন নিজেকে নিয়ে ঘৃণা বোধ করেন যখন তিনি ভাবেন, আগের রাতের উত্তেজনা কেমন ছিল। তিনি অ্যাডভেঞ্চার মানে কী তা নিয়ে ভাবতে শুরু করেন। তিনি বিশ্বাস করেন, অ্যাডভেঞ্চার আসে সময়ের অতিক্রম অনুভব করার মাধ্যমে এবং জেনে যে তা আর ফিরিয়ে নেওয়া যাবে না। রোকেন্টিন মনে করেন, অ্যানির সাথে সিনেমা দেখতে যাওয়ার কথা, যেদিন তারা তিন মাসের জন্য আলাদা হয়ে গিয়েছিল। অ্যানি এগারোটায় তার হাত ধরেছিল, আর রোকেন্টিন অনুভব করেছিল প্রতিটি মিনিট কেটে যাচ্ছে। রাত বারোটায় তিনি চলে যান, এবং তাদের কেউই একে অপরকে কিছু বলেনি।

অধ্যায় ১৫: সন্ধ্যা ৭.০০: রোকেন্টিন মারকুইস দে রোলেবনের উপর কয়েকটি পৃষ্ঠা লেখেন। রবিবার খুব বেশি আবেগ অনুভব করার পর তিনি শান্ত থাকার চেষ্টা করেন। রোকেন্টিন রোলেবন নিয়ে আরও ক্লান্ত হয়ে যাচ্ছেন। তিনি হতাশ বোধ করেন কারণ তিনি মারকুইসকে পুরোপুরি বুঝতে পারেন না বা তার জীবনের তথ্য যাচাই করতে পারেন না। রোকেন্টিন রোলেবনকে কল্পনা করেন এবং তার ব্যক্তিত্বের বিবরণ নিজের মনেই তৈরি করেন। কিন্তু পরে তিনি উপলব্ধি করেন এটি অর্থহীন, কারণ তার কাজ গবেষণার উপর ভিত্তি করে হওয়া উচিত, কল্পনার উপর নয়।

অধ্যায় ১৬: রাত ১১.০০: রোকেন্টিন রঁদেভু দে শেমিনোতে ফ্রাঁসোয়াজের সাথে দেখা করতে যান এবং তাকে চুমু খান, কিন্তু তার মধ্যে ঘৃণার অনুভূতি জাগে। যখন তিনি ফ্রাঁসোয়াজকে স্পর্শ করছেন, তার মন রোলেবন নিয়ে একটি বই লেখার চিন্তায় ডুবে যায়। তার হাত যখন ফ্রাঁসোয়াজের উরুতে চলে যায়, তখন তিনি একটি ঘন বাগান কল্পনা করেন, যা পোকামাকড় এবং অদ্ভুত প্রাণীতে ভরা। তার কল্পনায়, তিনি একজন মহিলাকে তার দুই পায়ের মাঝখানে ইশারা করতে দেখেন, আর রোকেন্টিন চিৎকার করে বলেন বাগানটি বমির মতো গন্ধ করছে। তারপর, মহিলাটি তাকে জাগিয়ে তোলে এবং বলে যে তাকে চলে যেতে হবে।

অধ্যায় ১৭: মঙ্গলবার: রোকেন্টিন অ্যানির কাছ থেকে একটি চিঠি পান। চিঠিতে অ্যানি বলেন যে তিনি কয়েক দিনের মধ্যে প্যারিসে থাকবেন এবং তাকে সেখানে দেখা করতে অনুরোধ করেন। রোকেন্টিন অ্যানির সাথে দেখা করার বিষয়ে খুব একটা উত্তেজিত নন, কিন্তু তিনি মনে করেন, অ্যানি সবসময় নিখুঁত মুহূর্তের প্রতি কীভাবে আচ্ছন্ন ছিলেন। রেস্টুরেন্টে লাঞ্চ খাওয়ার সময়, ছোটখাট একজন লোক, অ্যাকিল নামে, এসে ওয়েট্রেসকে বিরক্ত করতে শুরু করে। রোকেন্টিন অ্যাকিলের অস্থির ও একাকী আচরণের সাথে একটি সংযোগ অনুভব করেন। রোকেন্টিন এবং ওয়েট্রেস দুজনেই স্বস্তি পান যখন ডাক্তার রোজে রেস্টুরেন্টে প্রবেশ করেন। ডাক্তার রোজে অ্যাকিলের দিকে তাকিয়ে তাকে “পাগল” বলেন। অ্যাকিলকে এই কথা শুনে খুশি মনে হয়। রোকেন্টিন তারপর ভাবেন, কীভাবে কিছু লোক “অভিজ্ঞতা” ধারণার আড়ালে লুকিয়ে থাকে এবং আত্মবিশ্বাসী মনে হয়। কিন্তু তিনি উপলব্ধি করেন যে অ্যাকিল আসলে কোনো কিছুকে ভয় পান এবং ডাক্তার রোজে শীঘ্রই মারা যাবেন।

অধ্যায় ১৮: বুধবার: রোকেন্টিন একটি বাক্য লিখেন: “আমি ভয় পাব না।”

অধ্যায় ১৯: বৃহস্পতিবার: অন্য একটি সংক্ষিপ্ত এন্ট্রিতে, রোকেন্টিন তার বইয়ের চারটি পৃষ্ঠা লেখেন। তিনি তার কাজকে “তার জীবনের একমাত্র কারণ” হয়ে ওঠা নিয়ে ভাবতে চান না। তবে তার চিন্তা বারবার অ্যানির দিকে ফিরে আসে।

অধ্যায় ২০: শুক্রবার: মোটা কুয়াশা শহরটিকে ঢেকে রেখেছে। রোকেন্টিন ক্যাফে ম্যাবলিতে যান। একজন বৃদ্ধা এসে মঁসিয়েঁ ফাসকেলের খোঁজ করেন, কিন্তু ওয়েটার বলেন ফাসকেল এখনো উপরে আছেন। চলে যাওয়ার আগে, বৃদ্ধা প্রশ্ন করেন ফাসকেল মারা গেছেন কিনা। রোকেন্টিন কল্পনা করতে শুরু করেন, তিনি উপরে গিয়ে ফাসকেলের মৃতদেহ খুঁজে পাবেন। রোকেন্টিন দাঁড়ালে, ওয়েটার তাকে দেখে, আর রোকেন্টিন দ্রুত বলেন তিনি উপরে থেকে গলার স্বরের শব্দ শুনেছেন। তিনি ওয়েটারকে ফাসকেলকে দেখতে যেতে বলেন, কিন্তু ওয়েটার চিন্তিত হলেও উপরে যান না। রোকেন্টিন ক্যাফে ছেড়ে চলে যান।

রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে রোকেন্টিন বিশ্বাস করতে শুরু করেন ফাসকেল মারা গেছেন, আর তিনি রক্ত নিয়ে ভাবতে থাকেন। লাইব্রেরিতে, রোকেন্টিন সেল্ফ-টট ম্যানের সাথে দেখা করেন, যে তাকে লাঞ্চে আমন্ত্রণ জানায়। যদিও রোকেন্টিন যেতে চান না, তিনি হ্যাঁ বলেন। যখন তিনি কাজ করছেন, রোকেন্টিন লক্ষ্য করেন যে পাঠাগারের রক্ষক, একজন কর্সিকান লোক, কিছু বলতে চান, কিন্তু তিনি তা করেন না। রোকেন্টিন বারবার ফাসকেল সম্পর্কে ভাবেন, আর ঘরটাকে ক্রমশ কম বাস্তব বলে মনে হয়। তিনি তাড়াতাড়ি ক্যাফে ম্যাবলিতে ফিরে যান, কিন্তু সেখানে কেউ নেই।

রোকেন্টিন আতঙ্কিত হয়ে রাস্তায় দৌড়াতে থাকেন, আশেপাশের দৃশ্যকে আগের মতোই রাখার চেষ্টা করেন। তিনি লাইব্রেরির দিকে ফিরতে শুরু করেন এবং একজন লোককে দেখতে পান, যাকে তিনি আগের দিন দুইবার দেখেছিলেন। লোকটি রোকেন্টিনের দিকে তাকিয়ে হাসে, উঠে দাঁড়ায় এবং একটি ছোট মেয়ের দিকে হাঁটতে শুরু করে। মেয়েটি তার দিকে নির্বিকারভাবে তাকায়। যখন লোকটি তার চাদর ধরতে যায়, তখন সে রোকেন্টিনকে দেখে, আর মেয়েটি পালিয়ে যায়। রোকেন্টিন লোকটিকে সতর্ক করে বলেন, “শহরের উপর বড় বিপদ নেমে আসছে,” তারপর চলে যান। লাইব্রেরিতে ফিরে, কর্সিকান রক্ষক পাঠাগার বন্ধের সময় লোকজনকে বের করে দিচ্ছেন। রোকেন্টিন বাইরে যেতে চান না, কিন্তু যখন যান, তখন দেখতে পান বৃষ্টি হচ্ছে, আর কুয়াশা চলে গেছে।

অধ্যায় ২১: শনিবার সকাল: রোকেন্টিন ক্যাফে ম্যাবলিতে নাস্তা করেন। তিনি জানতে পারেন ফাসকেলের ফ্লু হয়েছে, আর তার মেয়ে তাকে দেখাশোনা করতে আসছেন। প্রথমবারের মতো, রোকেন্টিন অ্যানিকে প্যারিসে দেখার জন্য উত্তেজিত বোধ করেন। তিনি ভাবেন তিনি কি তাকে বোঝাতে পারবেন যেন অন্তত এক রাত তার সাথে বুভিলে থাকেন। রোকেন্টিন কল্পনা করেন, যদি অ্যানি থাকেন, তাহলে তার ভয় হয়তো চলে যাবে।

অধ্যায় ২২: বিকেল: রোকেন্টিন অলিভিয়ার ব্লেভিগনের একটি পোর্ট্রেট দেখতে বুভিলের জাদুঘরে যান, যা তিনি আগেও অদ্ভুত দেখেছেন বলে মনে করেন। প্রবেশপথের কাছে, তিনি একজন ব্যাচেলরের একটি ছবি দেখেন, যিনি একা মারা গেছেন। রোকেন্টিন মনে করেন, জীবনে অর্থপূর্ণ সম্পর্ক ছাড়া শুধু নিজের জন্য বাঁচার অর্থ কী। তিনি মনে করেন বিয়ে করা, সন্তান নেওয়া এবং অন্যদের নেতৃত্ব দেওয়াই অন্য পোর্ট্রেটগুলোকে “অস্তিত্বের অধিকার” দেয়। রোকেন্টিন অন্যান্য পোর্ট্রেটগুলো দেখেন এবং ভাবেন তারা কীভাবে অর্থবহ জীবন কাটিয়েছে। তিনি মনে করেন, তাদের মতো তারও অস্তিত্বের অধিকার নেই।

একটি দম্পতি জাদুঘরে আসে এবং ব্লেভিগনের পোর্ট্রেটটি কেমন বিশ্রী দেখাচ্ছে তা নিয়ে কথা বলতে থাকে। রোকেন্টিন উপলব্ধি করেন, ব্লেভিগন ছোট হওয়ার কারণে তার পোর্ট্রেটটি তার পাশের পোর্ট্রেটের তুলনায় অদ্ভুত দেখাচ্ছে। জাদুঘরটি দেখে বিরক্ত হয়ে, রোকেন্টিন চলে যান।

অধ্যায় ২৩: সোমবার: রোকেন্টিন মনে করেন তিনি আর রোলেবনের উপর কাজ চালিয়ে যেতে পারবেন না। তার মনে হয়, রোলেবনের স্মৃতি জীবিত রাখতে গিয়ে তিনি নিজের জীবন ত্যাগ করেছেন। নিজের লেখার দিকে তাকিয়ে, রোকেন্টিন বিশ্বাস করেন যে অতীত সত্যিকার অর্থে বিদ্যমান নয় এবং কেবলমাত্র যেসব জিনিস আমরা এখন দেখতে ও ছুঁতে পারি সেগুলোই বাস্তব। তিনি রোলেবনের মুখ কল্পনা করার চেষ্টা করেন, কিন্তু এমনকি যখন তিনি তা কল্পনা করতে পারেন, তখনও এটি আর “বাস্তব” মনে হয় না।

এখন রোলেবনের কাজ থেকে মুক্ত হয়ে, রোকেন্টিন নিজের অস্তিত্ব সম্পর্কে বেদনাদায়কভাবে সচেতন হয়ে ওঠেন। তিনি রাস্তায় হাঁটতে থাকেন, আর তার চিন্তাগুলো অস্পষ্ট এবং বিশৃঙ্খল হয়ে ওঠে। তিনি নিজের শরীর নিয়ে ভাবতে শুরু করেন, তারপর এমন একটি খবরের গল্পের কথা ভাবেন, যেখানে একটি শিশুকে ধর্ষণ করা হয়েছিল। রোকেন্টিন কল্পনা করতে থাকেন যে তিনি একদিকে ধর্ষক এবং অন্যদিকে সেই শিশু, দুই চরিত্রের মধ্যে পাল্টা পাল্টি অবস্থান করছেন।

অবশেষে, রোকেন্টিন একটি দেহপল্লিতে পৌঁছান, যেখানে একটি গ্রামোফোনে গান বাজছে। যখন তিনি গায়কের কণ্ঠস্বর শোনেন, তখন তিনি অনুভব করেন “অস্তিত্বের জগত” মুছে যাচ্ছে। তার মনে হয়, গান নিজেই বাস্তব নয়, যদিও এটি বাস্তব জিনিস দিয়ে তৈরি হয়েছিল।

অধ্যায় ২৪: মঙ্গলবার: রোকেন্টিন একটি খুব সংক্ষিপ্ত এন্ট্রি লেখেন: “কিছুই ছিল না। বিদ্যমান ছিল না।”

অধ্যায় ২৫: বুধবার: রোকেন্টিন সেল্ফ-টট ম্যানের সাথে লাঞ্চ করেন। সেল্ফ-টট ম্যান কর্সিকান রক্ষকের সাথে কোনো সমস্যার ইঙ্গিত দেন, কিন্তু বিস্তারিত বলেন না। একটি তরুণ দম্পতি রেস্টুরেন্টে আসে, আর রোকেন্টিন তাদের পরস্পরের প্রতি ভালোবাসা দেখে ঘৃণা অনুভব করেন। তার মনে হয় রুমে থাকা সবাই তাদের নিজ অস্তিত্ব এড়িয়ে চলছে, আর তিনি হাসতে শুরু করেন। সেল্ফ-টট ম্যান জানতে চান কেন, আর রোকেন্টিন স্বীকার করেন যে তিনি বিশ্বাস করেন জীবনে কোনো কারণ নেই। এরপর তারা একটি দার্শনিক কথোপকথন শুরু করেন।

সেল্ফ-টট ম্যান, যিনি একজন মানবতাবাদী, রোকেন্টিনকে বোঝানোর চেষ্টা করেন যে এমনকি ঈশ্বর ছাড়াও, মানুষ জীবনের অর্থ দিতে পারে। তিনি রোকেন্টিনকে বলেন যে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় একটি ভিড়ভরা বন্দিশিবিরে বন্দী থাকার পর, তিনি মানবজাতির প্রতি ভালোবাসা অনুভব করেন এবং মানবতাবাদী ও সমাজতন্ত্রী হন। সেল্ফ-টট ম্যান রোকেন্টিনকে প্রশ্ন করেন কেন তিনি তার বই লিখেছিলেন এবং তাকে নিজেকে চিহ্নিত করার জন্য বলেন। রোকেন্টিন অস্বস্তিতে বলেন যে তিনি শুধুমাত্র লেখার জন্য লিখেন এবং মানবতাবাদ বা অন্য কোনো লেবেলের সাথে একমত নন।

রোকেন্টিন বিশ্বাস করেন মানবতাবাদ মানুষকে এক ধরনের হালকা ভাবে বিবেচনা করে। এটি সব ধরনের মানুষকে গ্রহণ করে, কিন্তু একই সাথে মানুষকে প্রতীক হিসেবে দেখে, বাস্তব ব্যক্তিদের মতো নয়। সেল্ফ-টট ম্যান জোর দেন যে রোকেন্টিনের অবশ্যই গভীরভাবে মানবজাতিকে ভালোবাসা উচিত। কিন্তু হঠাৎ রোকেন্টিন একটি প্রবল নজিয়ার তরঙ্গে আক্রান্ত হন এবং তাড়াতাড়ি রেস্টুরেন্ট ছেড়ে চলে যান। রেস্টুরেন্টে থাকা অন্যান্য লোকজন তাকে ঘৃণাভরে দেখেন যখন তিনি বেরিয়ে আসেন।

রোকেন্টিন রাস্তায় হাঁটতে থাকেন, নিজেকে মানুষের মধ্যে একটি কাঁকড়ার মতো মনে করতে থাকেন। তিনি ভাবেন যে ঈশ্বরের ধারণাটি শুধুমাত্র একটি পাতলা আবরণ, যা সমস্ত কিছুর আসল অস্তিত্বের উপর রয়েছে। এক ধরনের বিভ্রান্তির মধ্যে, রোকেন্টিন একটি ট্রামে ওঠেন এবং তার পাশে থাকা সিটের দিকে তাকান। তিনি অনুভব করেন যে তার চারপাশের সবকিছু বিদ্যমান, কিন্তু তিনি বস্তুগুলোর নাম বা অর্থের সাথে তাদের সংযোগ করতে পারছেন না। রোকেন্টিন দ্রুত ট্রাম থেকে নেমে যান এবং একটি পার্কে যান, যেখানে তিনি বসে অনুভব করেন যেন তিনি আটকে আছেন। তারপর হঠাৎ, তার একটি উপলব্ধি ঘটে।

অধ্যায় ২৬: সন্ধ্যা ৬.০০: বাগানে বসে, রোকেন্টিন অবশেষে অস্তিত্বের প্রকৃত স্বরূপ বুঝতে পারেন। হঠাৎ করে, তার অভিজ্ঞতার সবকিছু তার কাছে অর্থপূর্ণ মনে হতে শুরু করে। তিনি নজিয়াকে তার নিজের অংশ হিসেবে দেখে আরও স্বস্তি বোধ করেন। রোকেন্টিন উপলব্ধি করেন যে অস্তিত্ব নির্দিষ্ট, স্থির এবং এর সাথে কোনো অর্থ বা বর্ণনা সংযুক্ত নয়। প্রথমে, এই আবিষ্কার তাকে উত্তেজিত করে, কিন্তু শীঘ্রই তিনি অস্তিত্বের ভারে বিব্রত ও বিরক্ত বোধ করতে থাকেন। তিনি আর অস্তিত্বকে এমন কিছু মনে করেন না যা জিততে, সৃষ্টি করতে বা এর জন্য লড়াই করতে হবে। বরং, তিনি বিশ্বাস করেন যে সবকিছু “কারণ ছাড়াই” বিদ্যমান, দুর্বলতার কারণে চলতে থাকে, এবং ঘটনাচক্রে মারা যায়। এইভাবে বিশ্বকে বুঝে রোকেন্টিন রাগান্বিত ও কলুষিত বোধ করেন। তিনি মনে করেন তিনি এখন যথেষ্ট শিখেছেন, তাই তিনি চলে যান।

অধ্যায় ২৭: রাত: রোলেবনের উপর গবেষণা বন্ধ করার পর রোকেন্টিন অনুভব করেন যে তার আর বুভিলে থাকার কোনো কারণ নেই। তিনি সিদ্ধান্ত নেন যে অ্যানিকে দেখার পর তিনি প্যারিসে চলে যাবেন।

অধ্যায় ২৮: শুক্রবার: রোকেন্টিন রঁদেভু দে শেমিনোতে প্যারিসের ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করার সময় গ্রামোফোনের গান শোনেন। তিনি একটি অ্যাডভেঞ্চারের অনুভূতি পেতে শুরু করেন।

অধ্যায় ২৯: শনিবার: রোকেন্টিন অ্যানির হোটেল রুমে তাকে দেখতে যান। তিনি সাথে সাথে লক্ষ্য করেন যে ঘরটি কতটা ফাঁকা, যা তাকে অবাক করে, কারণ অ্যানি সবসময় তার ঘর সাজানোর জন্য একটি বড় ট্রাঙ্কে মুখোশ এবং শাল নিয়ে আসতেন। অ্যানির চেহারাও বদলে গেছে—সে এখন বয়স্ক, মোটা এবং ক্লান্ত। অ্যানি আনন্দের সাথে রোকেন্টিনকে বলেন যে তিনি এখনও পরিবর্তিত হননি, তারা ছয় বছর আগে শেষবার দেখা করার পর থেকে। অ্যানি বলেন, তিনি রোকেন্টিনের অপরিবর্তিত স্বভাবকে ব্যবহার করে নিজের কতটা পরিবর্তন হয়েছে তা অনুভব করেন।

অ্যানি স্বীকার করেন যে তিনি থিয়েটার ছেড়ে দিয়েছেন এবং এখন একজন বয়স্ক পুরুষের “রক্ষিতা” হিসেবে আছেন। তিনি আরও বলেন যে আর তার কাছে সেই “নিখুঁত মুহূর্তগুলো” গুরুত্বপূর্ণ নয়, যা তাকে একসময় প্রেরণা জোগাত। রোকেন্টিন তাকে আরও ব্যাখ্যা করতে বলেন, এবং অ্যানি রোকেন্টিনের নজিয়ার মতোই কিছু বর্ণনা করেন। তিনি একসময় “বিশেষ পরিস্থিতি” নিয়ে ভাবতেন, যেগুলো নিখুঁত হতে পারত। রোকেন্টিনের সাথে তার সম্পর্ক ছিল এমন একটি পরিস্থিতি, কিন্তু রোকেন্টিন সাধারণত বুঝতে পারতেন না কীভাবে সেই মুহূর্তগুলোকে অ্যানির জন্য নিখুঁত করে তোলা যায়। এখন, অ্যানির কাছে এসব ধারণা আর গুরুত্বপূর্ণ নয়, এবং তিনি এগুলো নিয়ে আর ভাবেন না।

রোকেন্টিন, তার অনুভূতিগুলোর সাথে অ্যানির অনুভূতির মিল দেখে উত্তেজিত হয়ে, তাকে সবকিছু বলেন যা তিনি পার করেছেন। অ্যানি তাকে জিজ্ঞাসা করেন এখন তাকে কী বাঁচিয়ে রাখে, এবং রোকেন্টিন কেবল বলতে পারেন যে সংগীত তাকে খুশি করে। অ্যানি স্বীকার করেন যে তিনি অতীতে বেঁচে থাকার চেষ্টা করেন এবং তার স্মৃতিগুলোকে নিখুঁত মুহূর্তে পরিণত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু এটাও তাকে সন্তুষ্ট করে না। তারা কিছুক্ষণ নীরবে বসে থাকেন, তারপর অ্যানি রোকেন্টিনকে চলে যেতে বলেন। রোকেন্টিন পরের দিন আবার দেখা করতে চান, কিন্তু অ্যানি বলেন না। অ্যানি তাকে শেষবারের মতো স্মৃতির জন্য চুমু খান। তারপর তিনি তাকে দূরে ঠেলে দেন এবং বলেন যে অবশেষে তিনি একটি নিখুঁত মুহূর্ত তৈরি করতে পেরেছেন। এরপর দরজা বন্ধ করে দেন।

অধ্যায় ৩০: রবিবার: রোকেন্টিন ভাবেন অ্যানিকে প্যারিসে তার সাথে থাকার প্রস্তাব দেবেন কিনা। তিনি অ্যানির ট্রেনের সময় চেক করেন এবং অপেক্ষা করার সময় পর্নোগ্রাফিক বইগুলো দেখেন। সময় দ্রুত কেটে যায়, এবং রোকেন্টিন ঠিক সময়মতো ট্রেন স্টেশনে পৌঁছান, যখন অ্যানি এবং তার সঙ্গী ট্রেনে ওঠেন। পুরুষটি যুবক, শ্যামবর্ণ এবং বিদেশি। অ্যানি নীরবে রোকেন্টিনের চোখের দিকে তাকিয়ে থাকেন যতক্ষণ না ট্রেন চলে যায়। অসন্তুষ্ট বোধ করে, রোকেন্টিন একটি ক্যাফেতে যান এবং ঘুমিয়ে পড়েন। যখন তিনি জেগে ওঠেন, তখন বুভিলে পরের দিন ফিরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। তিনি ভাবেন প্যারিসে যাওয়া তার পরিস্থিতি বদলাতে সাহায্য করবে কি না।

অধ্যায় ৩১: মঙ্গলবার, বুভিলে: অ্যানির সাথে দেখা করার পর, রোকেন্টিন মনে করেন তিনি জীবনের কারণ খোঁজা বন্ধ করে দিয়েছেন। তিনি তার সম্পূর্ণ স্বাধীনতা এবং একাকীত্ব সম্পর্কে ভাবেন এবং মনে করেন তার জীবন শেষ হয়ে গেছে। রোকেন্টিন একটি পাহাড়ে উঠে বুভিলের দিকে তাকান, এবং নিচে থাকা মানুষের তুলনায় নিজেকে একজন অপরিচিত ব্যক্তি মনে করেন। তাদের জীবন পূর্বনির্ধারিত এবং একটি নির্দিষ্ট নিয়ম অনুসরণ করে, কিন্তু রোকেন্টিন শহরে একটি হুমকির কল্পনা করেন। তিনি ভাবেন, যদি বুভিলের প্রত্যেকেই তার মতো অনুভব করত, তাহলে কী হতো। তার মাথায় অদ্ভুত এবং ভীতিকর চিন্তা আসে—শরীরের অঙ্গগুলো কীভাবে পোকামাকড়ে পরিণত হচ্ছে এবং ফোঁড়াগুলো কীভাবে অতিরিক্ত চোখে পরিণত হচ্ছে। রোকেন্টিন নিজেকে ক্যাসান্দ্রার মতো অনুভব করেন, যিনি মানুষদের সতর্ক করতে অক্ষম যে কী ঘটতে চলেছে।

অধ্যায় ৩২: বুধবার: বুভিলে আমার শেষ দিন: রোকেন্টিন তার এন্ট্রির শুরুতেই বলেন যে তিনি সেল্ফ-টট ম্যানের জন্য দুঃখিত বোধ করেন, যিনি এখন চিরকালের জন্য একা। সেই দিন রোকেন্টিন পাঠাগারে গিয়েছিলেন এবং একটি স্থানীয় সংবাদপত্র পড়েছিলেন। তিনি সেল্ফ-টট ম্যানকে দেখেন, কিন্তু সেল্ফ-টট ম্যান কথা বলতে চাননি। দুইজন হাই স্কুলের ছাত্র এসে সেল্ফ-টট ম্যানের পাশে বসে। রোকেন্টিন লক্ষ্য করেন যে এক ছেলের মুখে অহংকারী ও দুষ্টুমি মিশ্রিত একটি অভিব্যক্তি ছিল। সেল্ফ-টট ম্যান ছেলেদের সাথে ফিসফিস করে কথা বলতে শুরু করেন এবং অহংকারী ছেলেটির হাত স্পর্শ করতে থাকেন। রোকেন্টিন চিন্তিত হয়ে পড়েন যে সেল্ফ-টট ম্যান ধরা পড়তে পারেন, কিন্তু সেল্ফ-টট ম্যান ছেলেটিকে স্পর্শ করতে থাকেন।

যখন সেল্ফ-টট ম্যান আরও স্পর্শ করার জন্য টেবিলের নিচে হাত বাড়ান, কর্সিকান গার্ড পিছন থেকে এসে জোরে হুমকি দেন। সেল্ফ-টট ম্যান তা অস্বীকার করার চেষ্টা করেন, কিন্তু রুমে থাকা এক মহিলা গার্ডের পক্ষ নেন এবং সেল্ফ-টট ম্যানকে “দানব” বলেন। কর্সিকান গার্ড সেল্ফ-টট ম্যানের মুখে দুইবার আঘাত করেন। রোকেন্টিন সেল্ফ-টট ম্যানের চোখে ভয় এবং কোমলতা দেখতে পান যখন তিনি আঘাত পান। রোকেন্টিন গার্ডের গলা ধরেন, কিন্তু যখন গার্ড তাকে প্রশ্ন করেন, তখন তাকে ছেড়ে দেন। রোকেন্টিন সেল্ফ-টট ম্যানকে তার ক্ষত সারাতে সাহায্য করার চেষ্টা করেন, কিন্তু সেল্ফ-টট ম্যান শহরের মধ্যে দৌড়ে পালিয়ে যান।

অধ্যায় ৩৩: এক ঘণ্টা পরে: রোকেন্টিনের ট্রেন ছাড়ার দুই ঘণ্টা আগে, তিনি শহর ঘুরে রঁদেভু ডি শেমিনোতে যান। তার মনে হয় বুভিল তাকে আর মনে করে না, যেন শহরটি তাকে ইতোমধ্যে ভুলে গেছে। রোকেন্টিন ভাবেন কেবল তিনিই তার নিজ অস্তিত্ব সম্পর্কে সচেতন। তিনি চেতনা নিয়ে ভাবতে শুরু করেন এবং নিজের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বিচ্ছিন্ন হতে থাকেন। তিনি ভাবেন সেল্ফ-টট ম্যান এবং অ্যানি এখন কোথায় আছেন।

রোকেন্টিন যখন রঁদেভু ডি শেমিনোতে পৌঁছান, তখন তিনি ফ্রাঁসোয়াজ এবং মাদেলিনকে বিদায় জানান। মাদেলিন রোকেন্টিনের প্রিয় গানটি চালান, আর তিনি সংগীতের বিশুদ্ধতা নিয়ে ভাবেন এবং মনে করেন সংগীত আসলে সত্যিকার অর্থে বিদ্যমান নয়। রোকেন্টিন কল্পনা করেন গানটির সুরকার এবং গায়ককে, এবং তার মাথায় একটি ধারণা আসে। তিনি ভাবেন, যদি তিনি কিছু নতুন সৃষ্টি করেন, যেমন একটি উপন্যাস, তাহলে হয়তো তিনি তার নিজের অস্তিত্বকে “ন্যায়সঙ্গত” করতে পারবেন। উত্তেজিত হয়ে, রোকেন্টিন একটি উপন্যাস লেখার কথা ভাবেন যখন রাত বুভিলের উপর নেমে আসে।

থিমসমূহ:

  • অস্তিত্ব এবং অর্থ: বইটি দেখায় যে জীবনের কোনো স্পষ্ট উদ্দেশ্য বা অর্থ নেই। প্রধান চরিত্র রোকেন্টিন “নজিয়া” অনুভব করেন যখন তিনি উপলব্ধি করেন যে সবকিছু কোনো কারণ ছাড়াই বিদ্যমান। তিনি শিখেন যে মানুষকে জীবনের অর্থ নিজেই তৈরি করতে হয়।
  • স্বাধীনতা এবং দায়িত্ব: রোকেন্টিন শিখেন যে মানুষ নিজের ইচ্ছেমতো সিদ্ধান্ত নিতে স্বাধীন। কিন্তু এই স্বাধীনতার সাথে দায়িত্বও আসে। আমাদের স্বীকার করতে হবে যে আমরা আমাদের সিদ্ধান্তের জন্য দায়ী, এবং এটি ভীতিকর হতে পারে।
  • একাকীত্ব এবং বিচ্ছিন্নতা: রোকেন্টিন পৃথিবীতে খুব একা অনুভব করেন। তিনি অন্যদের সাথে সংযোগ করতে পারেন না এবং মনে করেন কেউই তাকে বোঝে না। এই থিমটি দেখায় যে জীবনের কঠিন সত্যের মুখোমুখি হলে মানুষ কীভাবে বিচ্ছিন্ন অনুভব করতে পারে।
  • জীবনের অযৌক্তিকতা: জীবন কখনো কখনো অদ্ভুত এবং অর্থহীন মনে হতে পারে। রোকেন্টিন অনুভব করেন যে সবকিছুই অস্বাভাবিক এবং অর্থহীন, যা তাকে অস্বস্তি দেয়। বইটি অনুসন্ধান করে যে জীবন কেমন অযৌক্তিক মনে হতে পারে, তবুও আমাদের বাঁচতে হয়।

Most Important Quotes:

  • “I am alone in the midst of these happy, reasonable voices.” (Chapter 2, Antoine Roquentin)

Explanation: Roquentin reflects on his loneliness, feeling disconnected from the people around him while sitting in a café and listening to conversations.

আরো পড়ুনঃ Brave New World Bangla Summary (বাংলায়)

“আমি আনন্দিত এবং যুক্তিসঙ্গত কথোপকথনের মাঝে একা।”

ব্যাখ্যা: রোকেন্টিন তার একাকীত্ব নিয়ে চিন্তা করেন, যখন তিনি একটি ক্যাফেতে বসে অন্যদের কথোপকথন শুনছেন এবং নিজেকে তাদের থেকে বিচ্ছিন্ন অনুভব করছেন।

  • “I am alone in this white, garden-rimmed street. Alone and free.” (Chapter 12, Antoine Roquentin)

Explanation: Roquentin walks through the streets of Bouville and contemplates his freedom and solitude.

“আমি এই সাদা, বাগানবেষ্টিত রাস্তায় একা। একা এবং স্বাধীন।”

ব্যাখ্যা: রোকেন্টিন বুভিলের রাস্তায় হাঁটতে থাকেন এবং তার স্বাধীনতা ও একাকীত্ব নিয়ে ভাবতে থাকেন।

  • “I no longer existed in myself, but in him; I ate for him, breathed for him.” (Chapter 12, Antoine Roquentin)

Explanation: Roquentin reflects on his loss of personal identity in a past relationship, where his existence revolved around someone else.

“আমি আর নিজের জন্য অস্তিত্ব ছিলাম না, বরং শুধুই তার জন্য বাঁচতাম; আমি তার জন্য খেতাম এবং তার জন্য শ্বাস নিতাম।”

ব্যাখ্যা: রোকেন্টিন তার ব্যক্তিগত পরিচয় হারানোর কথা স্মরণ করেন, যখন তার অস্তিত্ব অন্য কারও চারপাশে ঘুরপাক খেত।

  • “Existence … must invade you suddenly, master you, weigh heavily on your heart.” (Chapter 12, Antoine Roquentin)

Explanation: Roquentin experiences a profound awareness of existence, which he finds overwhelming and inescapable.

“অস্তিত্ব,,, হঠাৎ করে তোমাকে গ্রাস করতে হবে, তোমাকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, এবং তোমার হৃদয়ে ভারী বোঝার মতো অনুভূত হতে হবে।”

ব্যাখ্যা: রোকেন্টিন অস্তিত্বের গভীর উপলব্ধি করেন, যা তাকে অপ্রতিরোধ্য এবং অপরিহার্য বলে মনে হয়।

  • “I felt my body harden and the Nausea vanish.” (Chapter 11, Antoine Roquentin)

Explanation: Roquentin experiences a moment of clarity, where his overwhelming feelings of nausea disappear for a short time.

“আমি অনুভব করলাম আমার শরীর শক্ত হয়ে গেল, আর নজিয়া চলে গেল।”

ব্যাখ্যা: রোকেন্টিন একটি পরিষ্কার মুহূর্ত অনুভব করেন, যেখানে তার নজিয়ার অসহনীয় অনুভূতি কিছু সময়ের জন্য চলে যায়।

  •  “When his place empties his head empties too..” (Chapter 4, Antoine Roquentin)

Explanation: Roquentin observes the café owner, Monsieur Fasquelle, who becomes mentally vacant when the café is quiet. 

“যখন তার ক্যাফেটি খালি হয়ে যায়, তার মনও খালি হয়ে যায়।”

ব্যাখ্যা: রোকেন্টিন ক্যাফের মালিক মসিয়ে ফাসকেলকে লক্ষ্য করেন, যিনি ক্যাফে ফাঁকা হলে মানসিকভাবে ফাঁকা হয়ে যান।

  • “I wanted the moments of my life to follow and order themselves like those of a life remembered.” (Chapter 12, Antoine Roquentin)

Explanation: Roquentin says this because he wishes his life could be as clear and organized as memories from the past.

“আমি চাইতাম আমার জীবনের মুহূর্তগুলো স্মৃতির মতো একের পর এক ঘটুক এবং সুশৃঙ্খলভাবে সাজানো থাকুক।”

ব্যাখ্যা: রোকেন্টিন এটি বলেন কারণ তিনি চান তার জীবন অতীতের স্মৃতির মতো স্পষ্ট এবং সুশৃঙ্খল হোক।

Literary Terms:

  • Existentialism: This is the main idea in the book. It says life has no set meaning, and people must create their own meaning.
  • Stream of Consciousness: The book shows Roquentin’s thoughts as they come to him without any order.

Symbols/Symbolism:

  • Nausea: The feeling of nausea is a symbol of Roquentin’s realization that life has no meaning. It shows his discomfort with existence.
  • The Stone: When Roquentin picks up a stone and feels sick, the stone symbolizes how objects, and life itself, can feel meaningless and strange to him.
  • The Sea: The sea represents the vast and empty nature of existence. Roquentin feels lost when he looks at the sea, just like he feels lost in life.
  • The Diary: Roquentin’s diary symbolizes his attempt to understand his life and himself. It’s his way of trying to find meaning.
  • The Portraits: The portraits in the museum represent people who lived with a sense of purpose, which makes Roquentin feel even more disconnected from his own life.

Figures of Speech:

  • Metaphor: Sartre uses metaphors, like “nausea,” to explain Roquentin’s deep feelings about life.
  • Symbolism: Some things in the book, like the stone and the sea, stand for deeper ideas, like the emptiness of life.

Moral Lesson: 

  • Create your own life’s meaning.
Share your love
Shihabur Rahman
Shihabur Rahman

Hey, This is Shihabur Rahaman, B.A (Hons) & M.A in English from National University.

Articles: 927

4 Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *