জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে মাস্টার্সে ভাইভা পরীক্ষা রয়েছে ৫০ মার্কের। ভাইভা ও টার্ম পেপার মিলে ১০০। ভাইভা পরীক্ষাতে ভালো মার্ক পাওয়া সম্ভব। তবে একবারে বেশি না পারলেও B or B+ সহজেই পাওয়া যায়, আলহামদুলিল্লাহ। একেবারেই না পারলে ভাইভা পরীক্ষায় ফেল করানো হয় না । তো চলুন গুরুত্বপূর্ণ টিপস গুলো জেনে নেওয়া যাক।
ভাইভার জন্য মূলত ৩ টা বিষয়ের উপরে টিপস হয়ে থাকে
১. পোশাক সংক্রান্ত টিপস
২. পড়াশোনা সংক্রান্ত টিপস
৩. আচরণবিধি সংক্রান্ত টিপস
চলুন, এই টিপস গুলো পর্যায়ক্রমে আলোচনা করা যাক,
১. পোশাক সংক্রান্ত টিপস
১) প্রত্যেকটা জায়গায় আলাদা ট্রেডিশন রয়েছে। ভাইভার জন্য সবচেয়ে উৎকৃষ্ট হবে সাদা শার্ট আর কালো প্যান্ট, সাথে সু পড়ে নেবেন। শার্ট ইন করে পড়তে হবে।(ছেলেদের ক্ষেত্রে)
২) চুল ছোট করে কাটবেন, দাড়ি শেভ করবেন। যারা দাড়ি রাখেন, তারা সাইজ করে নেবেন। এক কথায় আপনাকে যেন সভ্য মনে হয়। (ছেলেদের জন্য)
৩) ছেলেরা স্বাভাবিকভাবেই ঘড়ি পড়ে থাকে। আর বারবার ঘড়ির দিকে তাকায়। বারবার যেন ঘড়ির দিকে না তাকানো হয়। ঘড়ির দিকে তাকালে শিক্ষক বিরক্ত হন।(ছেলেদের জন্য)
৪) একটু ফ্রেশ লাগে এমন ভাবে নিজেকে তৈরি করবেন। এতে করে আপনি কম্ফোর্টেবল ফিল করবেন।
৫) মেয়েদের ক্ষেত্রে শাড়ি পড়াটাই বেস্ট। হালকা কালারের শাড়ি পড়তে হবে। শাড়িটা যেন মার্জিত হয়। যারা বোরখা পড়েন, তারা বোরখা পড়বেন, কোন সমস্যা নেই। তবে রুমে ঢোকার আগে মুখ খুলে ঢুকবেন। কান পর্যন্ত যেন দেখা যায়।
৬) হালকা সাজতে হবে বেশি নয়। নিজেকে বেশি জাঁকজমকপূর্ণ ভাবে উপস্থাপন করবেন না। (মেয়েদের ক্ষেত্রে)
২. পড়াশোনা সংক্রান্ত টিপস
১) সবচাইতে বেশি ধরা হয় সামারি থেকে। অর্থাৎ সামারির যেকোনো জায়গা থেকে যেকোন ব্রিফপ্রশ্ন আপনাকে স্যার ধরবেন। তাই বাংলা সামারি ও ইংলিশ সামারিটা একটু ভালো করে পড়ুন। বিশেষ করে চসার, শেক্সপিয়ার ও prose কে বেশি প্রাধান্য দিয়ে পড়বেন।
২) টেক্সট থেকে Brief প্রশ্নগুলো ধরা হয় (প্রায় ৭০%)। তাই এই প্রশ্নগুলো বেশি বেশি করে পড়ে নেবেন। আপনাদের যেই সাজেশন দেওয়া ছিল, ওগুলো পড়লেই যথেষ্ট ইনশাল্লাহ। এর পাশাপাশি এবারে যেসব Brief এসেছিল, এগুলোতে একনজর বুলিয়ে নেবেন। সবচেয়ে বেশি সামারিকে প্রাধান্য দিন।
৩) স্বাভাবিকভাবে এই প্রশ্নটি করা হয় ,আপনার প্রিয় লেখক কে বা আপনার প্রিয় সাহিত্যকর্ম কোনটি? আপনি যে লেখককে ভালোভাবে বিশ্লেষণ করতে পারবেন ,সেই লেখক এর নাম বলবেন। যে সাহিত্যকর্মটি আপনার ভালো লাগবে সেই সাহিত্যকর্মটা ডিটেলস সব জানতে হবে। কারণ এখান থেকেই আপনাকে স্যার প্রশ্ন ধরবেন।
৪) স্যার এমন প্রশ্ন করতে পারেন যে, আপনি কোন টপিক সিলেক্ট করবেন, নাকি আমি আমার ইচ্ছামত ধরবো? এই অবস্থায় নিজেই একটা টপিক সিলেক্ট করবেন। স্যারকে টপিক সিলেক্ট করতে দিলে, স্যার কোথায় থেকে ধরবেন, তার ঠিক নেই। তাই স্যারকে টপিক পছন্দ করতে দিয়ে Bamboo 🙄 নেওয়ার কোন দরকার নেই। আর হ্যাঁ, যেটা আপনার কাছে সহজ মনে হবে, সেই টপিকটা বলবেন।
৫) চসার ও এলিজাবেথান পিরিয়ডের ফিচারস জানতে হবে। তবে সবচেয়ে বেশি জানা দরকার মর্ডান পিরিয়ড এর ফিচারর্স। কারণ মাস্টার্সে শুধুমাত্র মডার্ন পিরিয়ড থেকেই বেশিরভাগ কোর্স সাজানো হয়েছে।
৫) কিছু লেখক এর রাইটিং ক্যাপাসিটি সম্পর্কে জানতে হবে। Shakespeare – tragy comedy. Chaucer এর রাইটিং ফিচারস। চসারের “দা জেনারেল প্রলগ” থেকেই বেশি প্রশ্ন হয়, তাই এটা সম্পর্কে ক্লিয়ার কনসেপশন নেবেন। বিশেষ করে চরিত্রগুলো সম্পর্কে কনসেপশন ক্লিয়ার করবেন।
৬) উইলিয়াম শেক্সপিয়ার এর “ড্রামা গুলো সম্পর্কে একটু ভালো করে পড়বেন। তার প্রতিটা ড্রামার মূল সামারি ও মেসেজ দুই সেন্টেন্সে পড়ে নেবেন।
৭) কে কিসের জন্য বিখ্যাত তা জেনে নেবেন। বিখ্যাত সাহিত্যকর্ম গুলো লেখক এর নাম সহ পড়ে নেবেন। কে কিসের জনক তা পড়বেন। (সিলেবাসের মধ্যে)
৮) স্যার অনেক সময় আপনাকে কনফিউজড করার চেষ্টা করবে। নিজের উপর কনফিডেন্স রাখবেন।
৩. আচরণবিধি সংক্রান্ত টিপস
১) আপনার নাম ডাকা মাত্রই আপনাকে উপস্থিত হতে হবে। তাই সজাগ থাকবেন।
২) রুমে ঢুকেই May I come in ,Sir? বলবেন। অনুমতি নিয়ে প্রবেশ করবেন।
৩) কাছে গিয়ে সালাম দেবেন। স্যার বসতে বললে বসবেন।
৪) নিজেকে স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করবেন।
৫) স্যার ইংলিশে প্রশ্ন করলে, ইংলিশে উত্তর দেবেন। বাংলায় প্রশ্ন করলে, বাংলায় উত্তর দেবেন।
৬) স্যার যে প্রশ্ন করবেন, শুধু সে প্রশ্নের উত্তর দেবেন। ওভারস্মার্ট হওয়ার চেষ্টা করবেন না।
৭) উত্তর বলার সময় অঙ্গভঙ্গি করবেন না, হাত নিচে রাখবেন। স্যারের দিকে তাকিয়ে উত্তর দেবেন। দেয়ালে বা মাথার উপরে তাকিয়ে নয় ,মুখে হালকা হাসি রাখবেন।
৮) হেলান দিয়ে বসবেন না। একদম সামনের দিকে ঝুঁকে পড়বেন না। স্বাভাবিকভাবে সোজা হয়ে বসবেন। হাত টেবিলের উপর রাখবেন না, নিচে রাখবেন।
৯) কোন প্রশ্ন না পারলে সরাসরি বলে দেবেন,,,, “সরি স্যার পারবোনা”. ভুল উত্তর করার চেষ্টা করবেন না।
১০) কিছু প্রশ্ন আপনার যোগ্যতা যাচাই করার জন্য করা হয়। এগুলো হচ্ছে ক্রিয়েটিভ প্রশ্ন। এখানে আপনি আপনার ব্যক্তিগত মতামত ক্রিয়েটিভিটির আলোকেই দেবেন, যেন স্যার ইমপ্রেস হয়।
১১) স্যারের প্রশ্ন করা শেষ হলে যদি বলে, “”এবার আসুন”” তাহলে আপনি হাসিমুখে সালাম দিয়ে নিজে ঘুরবেন না। কয়েক কদম স্যারের সামনে থেকে পেছনে চলে আসবেন। এরপর স্বাভাবিকভাবে বের হবেন। কারণ চেয়ার থেকে উঠেই পশ্চাৎদেশ দেখানো বেয়াদবি।
এই টিপসগুলো অনুসরন করুন ইনশাল্লাহ ভাইভা পরীক্ষা খুব ভালো হবে। এই টিপসগুলো চাকরির ভাইভা পরীক্ষার এর জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি অনেক কিছু শিখতে পেরেছেন ,জানতে পেরেছেন।
সুস্থ থাকুন ,সুন্দর থাকুন।
Literature Xpres
LX