প্রশ্নঃ অখণ্ড স্বাধীন বাংলা গঠনের উদ্যোগ ও তার চূড়ান্ত ফলাফল ব্যাখ্যা করো।
ভূমিকা: উপমহাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে অভিন্ন বাংলা গঠনের প্রয়াস একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচ্য বিষয়। ১৯৪৭ সালে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ‘স্বাধীন বাংলা’ পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। তবে এ পরিকল্পনার বিষয়বস্তু ছিল বাংলায় একটি মন্ত্রিপরিষদ গঠন করা হবে, যার প্রধানমন্ত্রী হবে মুসলমান। হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর এ প্রস্তাবে তৎকালীন পার্লামেন্টের অনেকেই সাড়া দেয়। এ অখণ্ড বাংলার প্রস্তাবে মুসলিম লীগের একটি গ্রুপ বিরোধিতা শুরু করে। তারা লাহোর প্রস্তাবের দোহাই দিয়ে পত্রিকায় সোহরাওয়ার্দীর ও হাশিম গ্রুপের বিরুদ্ধে নানারকম অপপ্রচার শুরু করে। নিম্নে অখণ্ড বাংলা গঠনের প্রয়াসে নানারকম পদক্ষেপ ধারাবাহিকভাবে আলোচনা করা হলো:
অখণ্ড বাংলা গঠনের প্রয়াস: পাকিস্তান লাহোর প্রস্তাবের ভিত্তিতে হলেও বাংলার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা অনুযায়ী স্বাধীন অখণ্ড ন বাংলা প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। অখণ্ড বাংলা গঠনে যেসব মূলনীতিগুলো গ্রহণ করেছিলেন তা ধারাবাহিকভাবে আলোচনা করা হলো।
উদ্দেশ্য: ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের কারণ ও তাৎপর্য ব্যাখ্যা কর
- উপমহাদেশের সকল বাঙালিকে একত্রিত করে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র গঠন করা।
- বাঙালি জাতির স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠা করা।
- উপমহাদেশের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অগ্রগতি সাধন করা।
পটভূমি:
- ব্রিটিশ শাসনের অবসান ও উপমহাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে অখণ্ড স্বাধীন বাংলা গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
- ভারত ও পাকিস্তান নামের দুটি স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের পরিকল্পনা বাঙালি জাতির মধ্যে উদ্বেগ ও ক্ষোভের সৃষ্টি করে।
- বাঙালি জাতীয়তাবাদী নেতারা উপমহাদেশের সকল বাঙালিকে একত্রিত করে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের জন্য উদ্যোগ নেন।
প্রধান কার্যক্রম:
- অখণ্ড বাংলার পক্ষে জনমত গঠন ও প্রচারণা চালানো।
- ভারত ও পাকিস্তানের সাথে আলোচনার মাধ্যমে অখণ্ড বাংলা গঠনের সম্ভাবনা যাচাই করা।
- অখণ্ড বাংলা গঠনের জন্য রাজনৈতিক ও সামরিক সংগ্রাম গড়ে তোলা।
চূড়ান্ত ফলাফল: অখণ্ড স্বাধীন বাংলা রাষ্ট্র গঠনের প্রস্তাব যেসব সুনির্দিষ্ট কারণে ব্যর্থ হয় তা নিম্নে আলোচনা করা হলো :
আরো পড়ুনঃ ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের কারণ ও তাৎপর্য ব্যাখ্যা কর
- অখণ্ড বাংলা গঠনের উদ্যোগ সফল হয়নি।
- ভারত ও পাকিস্তান নামের দুটি স্বাধীন রাষ্ট্র গঠিত হয়।
- অখণ্ড বাংলা গঠনের আন্দোলন বাঙালি জাতির মধ্যে স্বাধীনতা চেতনার উন্মেষ ঘটায়।
উপসংহার: পরিশেষে বলা যায় যে, লাহোর প্রস্তাবের পর অখণ্ড বাংলা গঠনের যে উদ্যোগ গ্রহণ করে তা বাস্তবায়ন হলে কংগ্রেসের ক্ষমতা এবং মুসলিম লীগের ক্ষমতার সমাধি রচিত হতো। তাই কংগ্রেস ও মুসলিম লীগের হাইকমান্ড বাংলাকে কখনই সমর্থন করতে পারেনি। বাংলা বিভক্তি হলে পশ্চিম বাংলার ক্ষতি হত না, বরং সেখানে চিরকাল হিন্দুদের পক্ষে চিরকালই প্রাদেশিক সরকার গঠন করা সম্ভব কিন্তু ব্রিটিশরা বঙ্গভঙ্গ করে এটা চিরতরে ধূলিসাৎ করে দেন।