fbpx

ব্রিটিশ সংবিধানের উৎসগুলো কী কী?

প্রশ্নঃ ব্রিটিশ সংবিধানের উৎসগুলো কী কী?

ভূমিকা: ব্রিটিশ সংবিধান পৃথিবীর প্রাচীনতম সংবিধান গুলোর মধ্যে অন্যতম। এটি একটি অলিখিত সংবিধান। বিভিন্ন প্রথা, প্রচলিত সামাজিক রীতি নীতি এবং বিধিবদ্ধ কিছু আইন মাধ্যমে এই সংবিধান এর ভিত্তি। ব্রিটেনের সংবিধান অলিখিত হলেও এর কিছু কিছু লিখিত অংশও রয়েছে। এই আলোচনায় আমরা ব্রিটিশ সংবিধানের বিভিন্ন উৎসসমূহ আলোচনা করবো।

ব্রিটিশ সংবিধানের উৎসগুলোকে সাধারণত দুটি ভাগে ভাগ করা যায়। এগুলো নিম্নরূপ:

লিখিত উৎস:

ম্যাগনা কার্টা (১২১৫)

ইউটিউবে ভিডিও লেকচার দেখুনঃ


অধিকারের বিল (১৬৮৯)

অ্যাক্ট অব সেটেলমেন্ট (১৭০১)

সংসদীয় আইন

ইউরোপীয় কমিউনিটি ল

অলিখিত উৎস:

সাংবিধানিক রীতিনীতি

google news

বিচারবিভাগীয় সিদ্ধান্ত

আদর্শসমূহ ও মূল্যবোধ

ব্রিটিশ সংবিধানকে অলিখিত সংবিধান বলা হয় কারণ এর অধিকাংশ উৎসই লিখিত নয়। বরং, এটি ঐতিহাসিক ঘটনা, রীতিনীতি, বিচারবিভাগীয় সিদ্ধান্ত এবং আদর্শসমূহের সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে।

লিখিত উৎস

ব্রিটিশ সংবিধানের লিখিত উৎসগুলো হলো ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ কিছু দলিল। এই দলিলগুলো ব্রিটিশ শাসনব্যবস্থার মৌলিক নীতিসমূহ নির্ধারণ করে।

আরো পড়ুনঃ ব্রিটিশ পার্লামেন্ট সার্বভৌম উক্তিটি ব্যাখ্যা কর।

ম্যাগনা কার্টা: ম্যাগনা কার্টা (মহান চুক্তি) হল ১২১৫ সালের ১৫ জুন ইংল্যান্ডের রাজা দ্বিতীয় জন কর্তৃক স্বাক্ষরিত একটি দলিল। এটি ইংরেজ আইন এবং গণতন্ত্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল। এটি রাজার ক্ষমতাগুলিকে সীমিত করে এবং নাগরিকদের অধিকারগুলিকে সুরক্ষিত করে। এটি ব্রিটিশ সংবিধানের ভিত্তি এবং বিশ্বের অন্যান্য অনেক দেশের সংবিধানের উপর প্রভাব ফেলেছে। 

অধিকারের বিল: অধিকারের বিল (১৬৮৯) হলো একটি আইন যা ১৬৮৯ সালের ২২শে জানুয়ারি ইংল্যান্ডের সংসদ-এ গৃহীত হয়। এই আইনটি ইংল্যান্ডের রাজতন্ত্রের ক্ষমতা সীমিত করে এবং সংসদের ক্ষমতা বাড়ায়। অধিকারের বিলের প্রভাব ইংল্যান্ডের রাজনীতিতে ব্যাপক ছিল। এই আইনটি ইংল্যান্ডে সংসদীয় শাসন ব্যবস্থার ভিত্তি স্থাপন করে। অধিকারের বিলের মূল বৈশিষ্ট্যগুলি পরবর্তীতে অন্যান্য দেশের সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হয়।

অ্যাক্ট অব সেটেলমেন্ট: ১৭০১ সালে ইংল্যান্ড ও স্কটল্যান্ডের মধ্যে একীকরণের পর গৃহীত একটি দলিল। এই দলিলে রাজ্যের উত্তরাধিকারের নিয়ম নির্ধারণ করা হয়। এটি ইংরেজ গৃহযুদ্ধের পরে এবং ১৬৮৮ সালের গৌরবময় বিপ্লবের পরে ব্রিটিশ রাজনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ছিল।

সংসদীয় আইন: বিভিন্ন সময়ে রাষ্ট্রের প্রয়োজনে সংসদে নানাবিধ আইন গৃহীত হয়। সংখ্যা গরিষ্ঠতার ভিত্তিতে এই আইন তৈরী হয়। ব্রিটিশ সংবিধানের এটিও একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস। 

অলিখিত উৎস

ব্রিটিশ সংবিধানের অলিখিত উৎসগুলো হলো ঐতিহাসিকভাবে গড়ে ওঠা রীতিনীতি, বিচারবিভাগীয় সিদ্ধান্ত এবং আদর্শসমূহ।

সাংবিধানিক রীতিনীতি: ব্রিটিশ শাসনব্যবস্থায় অনেক রীতিনীতি রয়েছে যা দীর্ঘদিন ধরে অনুসৃত হয়ে আসছে। এই রীতিনীতিগুলো আইনের মতোই কার্যকর।

বিচারবিভাগীয় সিদ্ধান্ত: ব্রিটিশ আদালতগুলো ব্রিটিশ সংবিধানের ব্যাখ্যা ও প্রয়োগের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আদালতের সিদ্ধান্তগুলো ব্রিটিশ সংবিধানের অলিখিত উৎস হিসেবে গণ্য হয়।

আদর্শসমূহ ও মূল্যবোধ: ব্রিটিশ সংবিধানে কিছু আদর্শ ও মূল্যবোধের প্রতিফলন রয়েছে। যেমন, আইনের শাসন, গণতন্ত্র, ব্যক্তিগত স্বাধীনতা ইত্যাদি। এই আদর্শ ও মূল্যবোধগুলো ব্রিটিশ সংবিধানের অলিখিত উৎস হিসেবে গণ্য হয়।

ব্রিটিশ সংবিধানের উৎসগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক রয়েছে। লিখিত উৎসগুলো অলিখিত উৎসগুলোকে ব্যাখ্যা ও সমর্থন করে। আবার, অলিখিত উৎসগুলো লিখিত উৎসগুলোকে পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করতে পারে।

আরো পড়ুনঃ প্রথা বলতে কী বোঝো? বৃটেনের রাজনৈতিক ব্যবস্থায় প্রথা কেন মান্য করা হয়?

উপসংহার: সবশেষে, বলা যায় পৃথিবীর এই প্রাচীনতম সংবিধান বিভিন্ন ঐতিহাসিক ঘটনা সমূহের একটি সম্মিলিত রূপ। অনেক লিখিত আইনের পাশাপাশি সেখানকার প্রচলিত রীতিনীতি এর সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে এই সংবিধানটি।

Shihabur Rahman
Shihabur Rahman
Hey, This is Shihabur Rahaman, B.A (Hons) & M.A in English from National University.

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

ফেসবুক পেইজ

কোর্স টপিক