fbpx

গণতন্ত্রের সংজ্ঞা দাও। গণতন্ত্রের সফলতার শর্তগুলো লেখ।

প্রশ্নঃ গণতন্ত্রের সংজ্ঞা দাও। গণতন্ত্রের সফলতার শর্তগুলো লেখ।

ভুমিকা: বর্তামান বিশ্বে সবচেয়ে প্রচলিত ও জনপ্রিয় সরকার ব্যবস্থা হচ্ছে গণতন্ত্র। গণতেন্ত্র সাধারণ মানুষের অধিকার রক্ষিত হয়। ফলে, নাগরিকগণ গণতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থার প্রতি অনেকটাই আস্হাশীল। তবে, বিভিন্ন দেশে এই গণতন্ত্রের স্বরুপ ভিন্নতা লক্ষ্য করা যায়। যদিও, এই সরকার ব্যবস্থার মূল উদ্দেশ্য থাকে জনগণের স্বত:স্ফূর্ত অংশগ্রহণ। নিম্মে আমরা গণতন্ত্র কি এবং এর সফলতার শর্তসমূহ আলোচনা করবো।

গণতন্ত্র কি: ‘গণতন্ত্র’ শব্দের উৎপত্তি গ্রীক ভাষায় ডেমোক্র্যাটিয়া থেকে। এর অর্থ, ‘জনগণের দ্বারা শাসন।’ এটি দুটি সংক্ষিপ্ত শব্দকে একত্রিত করেছে: ‘ডেমো(Demo)’ অর্থ একটি নির্দিষ্ট নগর-রাষ্ট্রের মধ্যে বসবাসকারী সমগ্র নাগরিক এবং ‘ক্র্যাটোস(Kratos)’ অর্থ ক্ষমতা বা শাসন। খ্রিস্টপূর্ব ৫ম শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে কিছু গ্রীক নগর-রাজ্যে বিদ্যমান রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে বোঝানোর জন্য এটি ব্যবহৃত হয়েছিল। বিশ্বের প্রথম গণতন্ত্র সৃষ্টি হয় গ্রিসের একটি শহর-রাষ্ট্র এথেন্সে। গণতন্ত্রের জনক বলা হয় এরিষ্টটলকে। তবে, আধুনিক গণতন্ত্রের জনক হলেন জন লক।

আরো পড়ুনঃ ব্রিটিশ পার্লামেন্ট সার্বভৌম উক্তিটি ব্যাখ্যা কর।

গণতন্ত্রের প্রামাণ্য সংজ্ঞা: গণতন্ত্র হল একটি সরকার ব্যবস্থা যেখানে আইন, নেতৃত্ব, নীতি এবং রাষ্ট্র পরিচালনা, পররাষ্ট্রনীতি ইত্যাদি প্রণয়ন করতে জনগণ দ্বারা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। গণতন্ত্র হল এমন একটি সমাজ যেখানে নাগরিকরা সার্বভৌম এবং সরকারকে নিয়ন্ত্রণ করে। গণতন্ত্র সম্পর্কে বিভিন্ন রাষ্ট্র বিজ্ঞানী বিভিন্ন সংজ্ঞা প্রদান করেছেনগ

ইউটিউবে ভিডিও লেকচার দেখুনঃ


সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রপতি আব্রাহাম লিঙ্কন এর মতে, “Democracy is the government of the people, by the people, for the people.”। ‘‘গণতন্ত্র হল জনগণের, জনগণের দ্বারা এবং জনগণের জন্য সরকার।’’

ডাইসির (Dicey) মতে, ‘‘গণতন্ত্র হল সরকারের একটি রূপ যেখানে পরিচালনা পরিষদে সমগ্র জাতির একটি বড় অংশ অন্তর্ভুক্ত।’’

লর্ড ব্রাইস (Lord Bryce) তার ‘Modern Demoracies’ গ্রন্থে বলেছেন, “যেখানে শাসনব্যবস্থা কোন শ্রেণির উপর ন্যস্ত না থেকে সমগ্র সমাজের সদস্যদের উপর ন্যস্ত থাকে তাই গণতন্ত্র।”

জে. এস. মিলের মতে, “রাষ্ট্রের সার্বভৌম ক্ষমতায় সকলের প্রবেশাধিকার হচ্ছে গণতন্ত্র।”

অধ্যাপক সিলির (Prof. Selley) মতে, “গণতন্ত্র হলাে এমন এক শাসনব্যবস্থা যেখানে প্রত্যেকেরই অংশগ্রহণ রয়েছে।”

গণতন্ত্রের সাফল্যের শর্তাবলী: তত্ত্বগত বিচারে গণতন্ত্র আদর্শ ও সর্বোৎকৃষ্ট শাসনব্যবস্থা হিসাবে রাষ্ট্রনৈতিক চিন্তাজগতে স্বীকৃত। ধনতান্ত্রিক ও সমাজতান্ত্রিক নির্বিশেষে সকল রাষ্ট্রেই গণতন্ত্রের প্রতি সমান আগ্রহ দেখা যায়। আদর্শগত বিচারে গণতন্ত্র হল প্রকৃষ্ট শাসনব্যবস্থা। তবে এর সাফল্যের জন্য কতকগুলি শর্ত পালন করা আবশ্যক।

google news

আরো পড়ুনঃ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটের গঠন, ক্ষমতা ও কার্যাবলী আলোচনা কর।

(১) গণতান্ত্রিক জনগণ: জন স্টুয়ার্ট মিল গণতন্ত্রের সাফল্যের শর্ত হিসাবে বিশেষ লক্ষণযুক্ত বা গুণান্বিত জনগণের কথা বলেছেন। অর্থাৎ গণতন্ত্রের সাফল্যের জন্য প্রয়োজন গণতান্ত্রিক জনগণ। গণতান্ত্রিক চেতনা ও দৃষ্টিসম্পন্ন নাগরিকগণই গণতান্ত্রিক জনগণ হিসাবে বিবেচিত হন। গণতান্ত্রিক চেতনা জনগণকে শাসনকার্যে অংশগ্রহণের জন্য উৎসাহিত করে। এই সচেতনার ভিত্তিতে ব্যক্তি সরকারের ত্রুটি-বিচ্যুতির সমালোচনা করে এবং জনসাধারণের স্বার্থ রক্ষায় সক্রিয় ভূমিকা গ্রহণ করে। 

(২) গণতান্ত্রিক পরিবেশ: আবার গণতান্ত্রিক জনগণ সৃষ্টির জন্য প্রয়োজন বিশেষ এক অবস্থা বা পরিবেশের। একে গণতান্ত্রিক পরিবেশ হিসাবে অভিহিত করা যায়। অধিকার ও স্বাধীনতার ব্যাপক স্বীকৃতির ভিত্তিতেই এই পরিবেশ গড়ে উঠতে পারে। অর্থাৎ মানুষের ব্যক্তিসত্তার পরিপূর্ণ বিকাশের উপযোগী পরিবেশই হল গণতান্ত্রিক পরিবেশ। এর জন্য প্রয়োজন সকল সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অধিকারের স্বীকৃতি ও সংরক্ষণ। বৈষম্যমূলক সমাজব্যবস্থায় জনগণের ব্যক্তিত্বের বিকাশ অসম্ভব। সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্য এবং অন্যায় ও শোষণ গণতন্ত্রের সমাধি খনন করে। এর জন্য প্রয়োজন অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সাম্য, ব্যক্তিগত সম্পত্তির অধিকারের অবলুপ্তি এবং উৎপাদন ও বণ্টন ব্যবস্থার উপর সামাজিক নিয়ন্ত্রণ। অর্থাৎ সমাজতান্ত্রিক পরিবেশ ছাড়া গণতন্ত্রের সাফল্য সুনিশ্চিত হতে পারে না।

(৩) গণতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থা: গণতন্ত্রের সাফল্যের জন্য জনগণের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা একান্তভাবে অপরিহার্য। এর জন্য উৎপাদনের উপাদানসমূহের সামাজিক মালিকানা প্রতিষ্ঠিত হওয়া দরকার। তা ছাড়া অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সকলের সমানাধিকার থাকা আবশ্যক। এ হল গণতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থা। এর ভিত্তিতেই জনগণের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা ও স্বাচ্ছন্দ্য নিশ্চয়তা লাভ করে এবং ব্যক্তির সঙ্গে ব্যক্তির সম্পর্ক পরিপূর্ণ সাম্যের উপর প্রতিষ্ঠিত হয়। তবেই সামাজিক ও রাষ্ট্রনৈতিক অধিকার অর্থপূর্ণ ও বাস্তবে কার্যকর হয়। 

(8) পরমতসহিষ্ণুতা: গণতন্ত্রে জনগণের মধ্যে পরমতসহিষ্ণুতা (toleration) একান্তভাবে কাম্য। এই শাসনব্যবস্থায় জনগণের বাক্য ও মতামত প্রকাশের পরিপূর্ণ স্বাধীনতা থাকে। ফলে নানা তত্ত্ব ও মতবাদের সৃষ্টি হয়। এদের মধ্যে বহু পরস্পর-বিরোধী মতবাদও থাকে। কিন্তু গণতন্ত্রে সকল মতবাদের অস্তিত্বকে স্বীকার করা হয়। সেজন্য এখানে প্রত্যেক ব্যক্তিকে বিরোধী মতবাদগুলির প্রতিও সহিষ্ণুতার মনোভাব পোষণ করতে হয়। 

(৫) ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ: অনেকে গণতন্ত্রের সাফল্যের জন্য ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণকে অন্যতম শর্ত হিসাবে গণ্য করে থাকেন। ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে জনগণ রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ক্ষেত্রে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণের সুযোগ পায়। এ ক্ষেত্রে স্বায়ত্তশাসনমূলক প্রতিষ্ঠানগুলি বিশেষভাবে সহায়ক। 

(৬) উপযুক্ত নেতৃত্ব: রাষ্ট্রনৈতিক নেতৃবর্গের ন্যায়নীতি ও বিবেকবোধের উপর গণতন্ত্রের সাফল্য বহুলাংশে নির্ভরশীল। রাষ্ট্রবিজ্ঞানী শুমপিটার (J. A. Schumpeter) -এর মতে, রাষ্ট্রনায়কগণ ন্যায়পরায়ণ এবং যুক্তি ও বিবেকবোধসম্পন্ন হবেন। রাষ্ট্রনেতাগণের মধ্যে এইসব গুণাবলীর অভাব ঘটলে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা আদর্শভ্রষ্ট ও পক্ষপাতদুষ্ট হতে বাধ্য। রাষ্ট্রনৈতিক কর্তৃত্ব স্বার্থপর হীনমনোবৃত্তিসম্পন্ন ব্যক্তিবর্গের করায়ত্ত হলে জনসাধারণের বৃহত্তর কল্যাণ ব্যাহত হবে। এই কারণে রাষ্ট্রনেতাদের ন্যায়পরায়ণতা, সততা, উদারচিত্ত, বিবেকবোধ প্রভৃতি গুণাবলী গণতন্ত্রের সাফল্যের প্রয়োজনীয় শর্ত হিসাবে গণ্য হয়।

(৭) সৎ ও দক্ষ সরকারী কর্মচারী: গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার সাফল্যের জন্য সৎ, সুদক্ষ ও উৎসাহী সরকারী কর্মচারী আবশ্যক। গণতন্ত্রে প্রশাসনিক দায়-দায়িত্ব জনগণের দ্বারা নির্বাচিত প্রতিনিধিগণের উপর ন্যস্ত থাকে। তাঁরাই হলেন রাষ্ট্রের প্রকৃত শাসক ও কর্ণধার। তাঁরা রাষ্ট্রনৈতিক নেতা হিসাবে সফল হলেও সরকারী কার্য পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় বিশেষীকৃত জ্ঞান প্রায় ক্ষেত্রেই তাঁদের থাকে না। ফলে শাসনকার্য পরিচালনার জন্য প্রয়োজন হয় দক্ষ ও যোগ্য এবং অভিজ্ঞ ও উদ্যমশীল সরকারী কর্মচারীর। তাঁদের সততা, গুণগতযোগ্যতা এবং উৎসাহ-উদ্দীপনার উপর গণতান্ত্রিক সরকারের সাফল্য বিশেষভাবে নির্ভরশীল।

আরো পড়ুনঃ প্রথা বলতে কী বোঝো? বৃটেনের রাজনৈতিক ব্যবস্থায় প্রথা কেন মান্য করা হয়?

(৮) উপযুক্ত শিক্ষার ব্যবস্থা: শিক্ষার ব্যাপক বিস্তারকে গণতন্ত্রের সাফল্যের মূলমন্ত্র হিসাবে গণ্য করা হয়। গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে কার্লাইল যে তীব্র কটাক্ষ করেছেন, তা ভিত্তিহীন বলে নস্যাৎ করা যায় না। গণতন্ত্র হল সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের শাসন। আর জনগণের অধিকাংশই যদি অশিক্ষিত হয়, তবে তাদের পক্ষে যোগ্য ও বিজ্ঞ প্রতিনিধি নির্বাচিত করা সম্ভব হয় না। ফলে অজ্ঞ ও অযোগ্য ব্যক্তির হাতে পড়ে গণতান্ত্রিক শাসন ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। আবার অশিক্ষিত জনগণের মধ্যে রাজনৈতিক সচেতনতা বড়ো একটা থাকে না। এতে নির্বাচিত নেতৃবৃন্দ স্বেচ্ছাচারী হওয়ার সুযোগ পান। সেজন্য বলা হয়, প্রতিনিধিমূলক শাসনব্যবস্থার সাফল্যের জন্য জনগণের মধ্যে শিক্ষার ব্যাপক বিস্তার প্রয়োজন। 

(৯) লিখিত সংবিধান: অনেকের মতে লিখিত সংবিধান গণতন্ত্রের সাফল্যের জন্য দরকার। এ প্রসঙ্গে হেনরী মেইন, লেকি প্রমুখ রাষ্ট্রবিজ্ঞানীর অভিমত হল সংবিধান লিখিত হলে জনসাধারণ সরকারের কর্তৃত্বের পরিধি এবং নিজেদের অধিকার ও কর্তব্য সম্পর্কে অবহিত থাকতে পারে। ফলে জনগণ সতর্ক থাকে এবং সরকার স্বৈরাচারী হতে পারে না। গণতন্ত্রের সাফল্যের জন্য সদা সতর্ক, সক্রিয় ও দৃঢ় জনমতের কথা বলা হয়।

(১০) রাজনৈতিক দল: গণতন্ত্রের সাফল্যের স্বার্থে একাধিক রাজনৈতিক দল ও বিরোধী দলের ভূমিকাও বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। সুস্থ ও সক্রিয় জনমত গঠন ও প্রকাশের জন্য এর অস্তিত্ব অপরিহার্য। একটি শক্তিশালী ও সুসংহত বিরোধী দল থাকলে সরকার সব সময় সতর্ক থাকে, জনস্বার্থ সাধনে আত্মনিয়োগ করতে বাধ্য হয় এবং স্বৈরাচারী হতে পারে না।

(১১) গণতান্ত্রিক ঐতিহ্য: অনেকে আবার গণতন্ত্রের সাফল্যের স্বার্থে গণতান্ত্রিক ঐতিহ্যের প্রয়োজনীয়তার কথা বলে থাকেন। গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার স্বরূপ ও সার্থকতা সঠিকভাবে অনুধাবন করার ক্ষেত্রে গণতান্ত্রিক ঐতিহ্য জনসাধারণকে সাহায্য করে। এই ঐতিহ্যই দেশবাসীকে গণতান্ত্রিক জনগণ হিসাবে গড়ে তুলতে সাহায্য করে।

(১২) সংখ্যালঘুর প্রতিনিধিত্ব: মিলের মতানুসারে গণতন্ত্রকে সার্থক করে তোলার জন্য সংখ্যালঘুর প্রতিনিধিত্বের ব্যবস্থা থাকা দরকার। সংখ্যাগরিষ্ঠের ভোটে গণতন্ত্রে প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়। সংখ্যালঘু সম্প্রদায় তাদের প্রতিনিধি পাঠাতে পারে না। তার ফলে জনগণের একটি অংশ সরকারী সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া থেকে দূরে থাকে। এই অবস্থায় গণতান্ত্রিক সরকার সফল হতে পারে না। তাই গণতন্ত্রের সাফল্যের জন্য সংখ্যালঘুর প্রতিনিধিত্বের ব্যবস্থা থাকা দরকার।

(১৩) জনমত: গণতন্ত্রের সাফল্যের জন্য আর একটি অপরিহার্য শর্ত হল সুস্থ, সবল ও সদাজাগ্রত জনমত। সদা সতর্ক ও সক্রিয় জনমত সরকারের স্বৈরাচারিতা রোধ করে এবং সরকারকে গণমুখী করে। আবার জনমতকে সুসংহত করার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলের ভূমিকা অপরিহার্য বিবেচনা করা হয়। 

(১৪) সামাজিক দায়িত্ববোধ: জনসাধারণের মধ্যে সামাজিক দায়িত্ববোধ থাকা দরকার। দেশবাসী নিজেদের সংকীর্ণ স্বার্থ সাধনের পরিবর্তে সমাজের সার্বিক ও বৃহত্তর স্বার্থ সাধনের ব্যাপারে যত্নবান হবে। জনসাধারণের মধ্যে সৌভ্রাত্র ও মৈত্রীর বন্ধন থাকতে হবে। 

(১৫) জাতীয় সংহতি ও ঐক্য: গণতন্ত্রের জন্য জাতীয় সংহতি ও ঐক্য আবশ্যক। মিলের মতানুসারে জাতির ভিত্তিতে রাষ্ট্র গঠন গণতন্ত্রের বিকাশের পক্ষে সহায়ক। জনগণের মধ্যে জাতীয় ও সামাজিক ঐক্যবোধ ছাড়া গণতন্ত্র সফল হতে পারে না। সামাজিক ঐক্যবোধ সৃষ্টির স্বার্থে জাতিভেদ প্রথা ও অন্যান্য সামাজিক বৈষম্য দূর করা দরকার।

(১৬) স্বাধীন ও নিরপেক্ষ গণমাধ্যম: একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে গণমাধ্যমকে স্বাধীনতা দিতে হয় এবং গণমাধ্যম যাতে নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারে তার সুযোগ সৃষ্টি করতে হয়। প্রচার মাধ্যমগুলোর উপর সরকারি নিয়ন্ত্রণ গণতন্ত্রকে বাধাগ্রস্ত করে। তাই স্বাধীন গণমাধ্যম গণতন্ত্রের সাফল্যের অন্যতম শর্ত।

উপসংহার: পরিশেষে বলা যায় যে, কোন একক শর্ত পালনের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রের সাফল্য আশা করা যায় না। গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ছাড়া গণতন্ত্র স্থায়ী হতে পারে না। বস্তুত: জনগণ ও শাসনকারী গোষ্ঠীর মধ্যে যে কোন একদিকে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের অনুপস্থিতি থাকলে টেকসই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হতে পারে না।

Shihabur Rahman
Shihabur Rahman
Hey, This is Shihabur Rahaman, B.A (Hons) & M.A in English from National University.

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

ফেসবুক পেইজ

কোর্স টপিক