fbpx

পেশা বলতে কী বুঝ? পেশার বৈশিষ্ট্যসমূহ আলোচনা কর।

প্রশ্নঃ পেশা বলতে কী বুঝ? পেশার বৈশিষ্ট্যসমূহ আলোচনা কর। পেশাদার সমাজকর্মের বিবর্তন আলোচনা কর।

ভূমিকাঃ সমাজকর্ম একটি সাহায্যকারী পেশা। শিল্পায়ন ও শহরায়নজনিত নানাবিধ আর্থ-সামাজিক সমস্যা সমাধান কার্যকর কর্মপন্থা উদ্ভাবনের জন্য সনাতন সমাজকল্যাণ বা সমাজকর্মের পরিবর্তে আধুনিক পেশাভিত্তিক সমাজকর্মের প্রয়োজন অনুভূত হবার প্রেক্ষিতে এর বিকাশ ঘটে। কেননা পেশা ভিত্তিক হবার কারণে সমাজকর্ম মানুষের বিভিন্ন সংকটে কার্যকরভূমিকা পালনের সুযোগ লাভ করে। সমাজকর্ম পেশাগত মর্যাদা চূড়ান্তভাবে অর্জন করে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে। এ সময়ে সমাজকর্মের জ্ঞান ও দক্ষতার ব্যাপক অনুশীলন হয়েছে, উদ্ভাবন হয়েছে নতুন নতুন সমস্যা সমাধানের কৌশল, সর্বোপরি সমাজকর্মীরা কর্মক্ষেত্রে মর্যাদা অর্জন করার সুযোগ পেয়েছে।

পেশা কী: ‘পেশা’ শব্দটি ফরাসি শব্দ থেকে উদ্ভূত। এর আভিধানিক অর্থ ‘বৃত্তি’, (Occupation) বা কাজ (Job)। জীবিকা নির্বাহের উপায়কে বৃত্তি বলা হয়। অর্থাৎ, ‘বৃত্তি’ বলতে কায়িক শ্রম নির্ভর কাজকে বুঝায়। যেমন: দিনমজুরি, রিকশা চালনা ইত্যাদি।

অন্যদিকে পেশার ইংরেজি প্রতিশব্দ ‘Profession’ ল্যাটিন শব্দ Professor শব্দের সমার্থক শব্দ। যার অর্থ to make a public declaration.

প্রামাণ্য সংজ্ঞাঃ  

ইউটিউবে ভিডিও লেকচার দেখুনঃ


Dictionary of social welfare প্রদত্ত সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, “Profession is an occupation based upon specialized education, skills and techniques governed by general Principles of action and a special code of ethics.” (অর্থাৎ, পেশা হলো বিশেষায়িত শিক্ষা, দক্ষতা ও কৌশল ভিত্তিক এক বৃত্তি যা সাধারণ মূলনীতি এবং বিশেষ নৈতিক মানদণ্ড দ্বারা পরিচালিত)

A. E Genn তাঁর ‘Dictionary of Management’ গ্রন্থে বলেন, “Profession is a calling in which one professes to have acquired specialized knowledge which is used either in structing, guiding or advising others.” (অর্থাৎ, পেশা হচ্ছে এমন একটি সেবা যার জন্য একজন পেশাজীবিকে অন্যকে শিক্ষাদান, নির্দেশনা বা উপদেশ প্রদানের জন্য বিশেষায়তি জ্ঞান অর্জন করতে হয়।)

আরো পড়ুনঃ বেকারত্ব কি? বাংলাদেশের বেকারত্ব দূরীকরণের উপায় সমূহ বর্ণনা কর।

সামাজিক বিজ্ঞানের অভিধান-এর মতে, (1983: 162) পেশা হচ্ছে নৈপুণ্যতা ভিত্তিক বৃদ্ধিদীপ্ত কৌশল দ্বারা বেশিষ্ট্য মণ্ডিত বৃত্তি। (Occupation Characteried by skilled intellectual technique.)

W. E. Moor এর মতে, “পেশা একটি সার্বক্ষণিক কর্ম, সেবাপ্রদানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, সমকক্ষদের সাথে পৃথক পরিচিতি, বিশেষায়িত শিক্ষা, সেবামুখিতা এবং দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে সংযত স্বাতন্ত্র্যবোধ।

পরিশেষে বলা যায়, যখন কোনো প্রযুক্তি ও দক্ষতাসম্পন্ন ব্যক্তিবিশেষ শিক্ষাগত যোগ্যতা ও কলাকৌশলকে বিশেষ মানদণ্ড ও নীতি অনুযায়ী বাস্তবে প্রয়োগ করে জীবিকা নির্বাহ করতে সক্ষম হয় তখন। তাকে ঐ ব্যক্তির পেশা বলে। যেমন-চিকিৎসক, আইনজ্ঞ ইত্যাদি।

google news

পেশার বৈশিষ্ট্যসমূহঃ সকল পেশারই নিজস্ব কিছু স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য থাকে। সমাজকর্ম পেশা তার ব্যতিক্রম নয়। যে সকল বৈশিষ্ট্য বা মানদণ্ডের কোনো বৃত্তি বা কাজকে পেশা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া যায় বা বৃত্তিসমূহকে পেশা হিসেবে চিহ্নিত করা সম্ভব হয়। সে সকল বৈশিষ্ট্যসমূহকে নিচে তুলে ধরা হলো- 

সমাজবিজ্ঞানী William E. Wickened এর মতে,

  • নিজস্ব জ্ঞান ও দক্ষতা যার মাধ্যমে পেশাদার ব্যক্তি জনসেবায় নিয়োজিত হবে।
  •  পেশায় প্রবেশের জন্য চারিত্রিক গুণাবলি, প্রশিক্ষণ এবং
  • যোগ্যতা থাকতে হবে। ৩. বিশেষ নীতিমালা থাকতে হবে।
  • রাষ্ট্র বা সহকর্মী কর্তৃক পেশাগত মর্যাদার আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি।
  •  নিজস্ব জ্ঞান ও দক্ষতার ভিত্তিতে বিশেষ শিক্ষা কার্যক্রম থাকতে হবে।
  • পেশাগত সংগঠন থাকতে হবে যার উদ্দেশ্য হবে পেশার উন্নয়ন সাধন ও সামাজিক কর্তব্য পালন, অর্থনৈতিক মনোপলি রক্ষা করা নয়।

Ernest Greenwood -এর মতে, (NASW, 17) ১. সুশৃঙ্খল জ্ঞান, ২. পেশাগত কর্তৃত্ব, ৩. সামাজিক স্বীকৃতি, ৪. নৈতিক মানদণ্ড ও ৫. পেশাগত সংগঠন।

Warner Bochm এর মতে, ১. জনকল্যাণমুখী: ২. ধারাবাহিক; সুসংহত বিজ্ঞানভিত্তিক জ্ঞান যা প্রচারযোগ্য: ৩. নির্দিষ্ট দক্ষতা ও কর্মপদ্ধতি; ৪. পেশাগত সংগঠন।

মনীষী W. A. Friellander এর মতে, (P-485-86) 

  • বিশেষ যোগ্যতা: 
  • প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার মাধ্যমে কৌশল ও দক্ষতা অর্জন; 
  • পেশাগত সংগঠন; 
  • নৈতিক মানদণ্ড, 
  • পেশাগত দায়িত্ব।

নিম্নে পেশাদার সমাজকর্মের বিবর্তন সম্পর্কে আলোচনা করা হলো:

১. প্রাচীনরূপঃ সুপ্রাচীন কাল থেকেই মানুষ ভ্রাতৃত্ববোধে অনুপ্রাণিত হয়ে একে অপরের সহযোগিতায় এগিয়ে, একে অন্যের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করত। কালের বিবর্তনে মানবজীবনে ধর্মের আবির্ভাব ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ ও ধর্মপ্রাণ ব্যক্তিবর্গ অসহায়, দুস্থ, গরীব, অনাথ, বিধবা প্রভৃতি শ্রেণির সাহায্যার্থে এগিয়ে আসে। জনসেবায় তারা পরকালের আত্মার মুক্তি ও স্রষ্টার করুণা লাভের উপায় মনে করতো। ফলে ধর্মীয় অনুপ্রেরণায় বিভিন্ন সমাজকল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত হয়। যেমন: অনাথ আশ্রম, দুস্থ নিবাস, শিক্ষালয় প্রভৃতি।

আরো পড়ুনঃ কিশোর অপরাধ কি? কিশোর অপরাধের কারণ গুলো আলোচনা কর।

২. মধ্যযুগীয় ব্যক্তিবর্গের ভূমিকাঃ সমাজকল্যাণমূলক তৎপরতা বিকাশ লাভ কিেবশ্বের বিভিন্ন অংশে সেবাদের আবির্ভাবে ইসলামি অনুশাসনের ভিত্তিেেক্ষত্রে মধ্যপ্রাচ্যে সেবামূলক কার্যক্রম গৃহীত হয় অবৎসেনের ভিত্তিতে ব্যাপক সমাজ উঠে। ইউরোপের বিভিন্ন স্থানে সামাজিক নিরাপত্তা ভিত্তি গড়ে সমাজকল্যাণের পথনির্দেশ করে। উদাহরণ স্বরূপ-গির্জাভিত্তিক সমাজসেবা কার্যক্রম মঠ, প্যারিস, এতিমখানা, দুস্থ নিবাস প্রভৃতি। এক্ষেত্রে জার্মানির প্রখ্যাত সমাজসংস্কায়ামা দুই নিবরাস প্রভৃতির জুয়ান লইস ভিভস, ফ্রান্সের ভিথিন ভারকপমার্টিন লুথারা কেম্পনের উল্লেখযোগ্য মাইলফলক স্থাপন করেন। 

৩. আধুনিক সমাজকল্যাণের সূত্রপাতঃ অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষার্থে ইংল্যান্ডে সংঘটিত শিল্প বিপ্লব ও বিশ্বের অনয়ায় পা কিভারের ফলে সমাজ জীবনে এক জটিল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। যার ফলস্বরূপ আধুনিক করা সমাজকল্যাণের সূত্রপাত ঘটে। আধুনিক সমাজকল্যাণের ভিত রচিত হয় প্রথমে ইংল্যান্ডে। সমাজকল্যাণনিক সমাজ সংস্কারমূলক বিভিন্ন আইন প্রণয়নের মাধ্যমে ইংল্যান্ড এক্ষেত্রে পাজ করে বামকা পালন করেন। এ প্রসঙ্গে ১৫৪৯ সাল থেকে শুরু করে ১৬০১ ও ১৮৩৪ সালের দরিদ্র আইনসমূহ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। 

৪. যুক্তরাষ্ট্রের অবদানঃ সমাজকর্মকে পেশাদারি অধিষ্ঠিত করার ক্ষেত্রে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের অবদান ট্রেন স্বীকার্য। ইংল্যান্ডের অনুকরণে বিভিন্ন সমাজকল্যাণমূলক কার্যক্রম গৃহীত হয় যা পেশাদার সমাজকর্মের বিবর্তনের বিশেষ ভূমিকা রাখে। 

৫. দান সংগঠন সমিতি (Charity Organization Society ১৮৭৩ সালে আমেরিকায় অর্থনৈতিক মন্দার ফলে আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি হয় যার ভুক্তভোগী হয় সেখানকার সাধারণ মানুষ। তাদের সমস্যা মোকাবেলার লক্ষ্যে এবং অচলাবস্থা নিরসনে সম-সামকিকালে ইংল্যান্ডে উদ্ভাবিত ও প্রচলিত দান সংগঠন সমিতির (Chrity Organization Society- COS) এর ভিত্তিতে Humphreys S. Gurteen এর নেতৃত্বে নিউইয়র্কের বা ফেলো শহরে ১৮৭৭ সালে প্রথম আমেরিকায় ‘দান সংগঠন সমিতি বা COS গঠিত হয়। এ সমিতির উদ্দেশ্য ছিল দরিদ্রদের কার্যকরভাবে সাহায্যদান। কর্মসূচির পুনরাবৃত্তির রোধ এবং আর্থিক অপচয় রোধ করা। যার ফলশ্রুতিতেই আমেরিকায় সমাজকর্ম পেশার আবির্ভাব ঘটতে শরু করে।

৬. সেটেলমেন্ট হাউস আন্দোলন (Settlement House Movement) দান সংগঠন সমিতির পাশাপাশি আমেরিকাতে সেটেলমেন্ট আন্দোলন সমাজকর্ম বিকাশে এক গুরুত্ববহ ভূমিকা পালন করে। Samuel Augustus Barnett -এর নেতৃত্বে ১৮৮৪ সালে লন্ডনে Toynbee Hall নামক বিশ্বের প্রথম সেটেলমেন্ট হাউস স্থাপিত হয়। পরবর্তীতে ১৮৮৭ সালে Stanton Coit and Chartes B. Stover -এর সুপরিবেশের ভিত্তিতে নিউইয়র্ক শহারে Neighborhood Guild নামে আরো একটি সেটেলমেন্ট হাউস গড়ে ওঠে। একই সময়ে আরেকটি সেটেলমেন্ট হাউস গড়ে ওঠে। এ সমস্ত হাউসগুলো পেশাগত সামজকর্মের বিকাশে বিশেষ অবদান রাখে। সেটেলমেন্ট কর্মীর বস্তিবাসীদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পুষ্টি, পরিপেটোদেক্ষতা ইত্যাদি বিষয়ে মানোন্নয়নের জন্য শিক্ষা ও পরিবেশ, কার্যক্রম এর উদ্যোগ গ্রহণ করে। উদ্যোগকে কার্যকর পুনর্বাসন কার্যে প্রয়োগের জন্য সমাজকর্ম অনুশীলনের ক্ষেত্রে পেশাগত প্রশিক্ষণের অপরিহার্যতা পরিলক্ষিত হয়।

আরো পড়ুনঃ কল্যাণ রাষ্ট্র কি? কল্যাণ রাষ্ট্রের কার্যাবলী আলোচনা কর।

৭. নিউইয়র্ক স্কুল (New York School) এর অবদানঃ সমাজকর্ম পেশার অন্যতম রূপকার ও ব্যক্তি সমান্নাকর্মের May Ellen Richmond ১৮৯৭ সালে টরেন্টোতে অনুষ্ঠিত জাতীয় দানশীলতা ও সংশোধন সম্মেলনে চা পেশায়ারদা সমাজকর্ম অনুশীলনের জন্য একটি স্বতন্ত্র স্কুল প্রতিষ্ঠার জন্য উদাত্ত আহ্বান জানান। তার এ আহ্বানের ভিত্তিতে সমাজকর্ম পেশাগত শিক্ষার জন্য ১৮৯৮ সালে New York School of Philanthropy প্রতিষ্ঠা হয়। প্রথমে এ স্কুলে এ প্রশিক্ষণ মেয়াদ (১) এক প্রশিক্ষণ কোর্স চালু করে। পরবর্তীতে এ প্রশিক্ষণ মেয়াদ (১) এক বছর এবং পরে দুই বছরে সম্প্রসারণ করা হয়। নিউইয়র্ক স্কুল (New York School) সমাজকর্মের উপর শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের মাইলফলক হিসেবে কাজ করে। পরবর্তী সময়ে আমেরিকার বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজকর্ম শিক্ষা চালু হয়।

৮. পত্রিকা প্রকাশঃ দান সংগঠন সমিতি তার কর্মতৎপরতা এবং আর্থ-সামাজিক ও স্বাস্থ্যগত বিভিন্ন সমস্যার উপর ভিত্তিকরে ১৮৯১ সালে Charities Review নামে একটি পত্রিকা প্রকাশ করে। ১৯১০ সালে অন্যান্য পত্রিকার সাথে মিশে এটি The Survey ১৯১০ নামে প্রকাশিত হয়। যা সমাজকর্ম মুখপাত্র হিসেবে অবদান রাখে।

৯. দরিদ্রের অবস্থা উন্নয়ন সমিতি (Association for improving the condition of the poor) দান সংগঠন সমিতির মত এ সমিতিও বন্ধুসুলভ পরিদর্শকের মাধ্যমে সরজমিনে দরিদ্রদের আর্থ-সামাজিক অবস্থা অনুসন্ধান করে ত্রাণ-সাহায্যের ব্যবস্থা করে। পরবর্তীতে এটিই ব্যক্তি সমাজকর্মের পথ নির্দশিকা দান করে।

১০. আন্তর্জাতিক সম্মেলনঃ সমাজকর্মের মূল্যবোধ, নৈতিকভিত্তি প্রভৃতি সম্পর্কে আলোচনার জন্য ১৯২৮ সালে প্যারিসে প্রথম আন্ত জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৫৬ সালে জার্মানির মিউনিখে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বিশ্বের ৪০টি দেশের ২৬০০-র বেশি প্রতিনিধি অংশ নেয়। এর নাম দেয়া হয় International Congress of Social Welfare, এ সম্মেলন এ ১৯৫০ সালে গঠিত আন্তর্জাতিক সমাজকর্মী ফেডারেশন’ (IFSW) চূড়ান্ত রূপ লাভ করে।

১১. সমাজকর্ম পেশার সম্প্রসারণঃ যুক্তরাষ্ট্রে সমাজকর্ম পেশা হিসেবে স্বীকৃতির পর বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এর পেশাগত মর্যাদা স্বীকৃত হয়। অন্যান্য পেশার মতো ফ্রান্স, কানাডা, সুইডেন, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া, প্রভৃতি দেশে সমাজকর্মীদের কাজের জন্য লাইসেন্স গ্রহণ করতে হয়।১২. পেশাগত সংগঠন: ১৯১৮ সালে সর্বপ্রথম “আমেরিকান হাসপাতাল সমাজকর্মী সমিতি” গঠিত হয়। ১৯২৯ সালে ‘জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সমাজকর্মী সংগঠন’ প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৫৫ সালে ১ অক্টোবর ৭টি সংগঠন একত্রিত হয়ে আমেরিকার ‘জাতীয় সমাজকর্মী সমিতি’ (NASW National Association of Social Workers) প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সমাজকর্মের পেশাগত সংগঠনের পরিপূর্ণতা অর্জিত হয়।

আরো পড়ুনঃ মাদকাসক্তি কি? এ সমস্যার সমাধানে একজন সমাজকর্মীর ভূমিকা আলোচনা কর।

১২. পেশাগত নীতিমালা নির্ধারণ: ১৯৫১ সালে আমেরিকায় সমাজকর্মী সংঘের প্রতিনিধিদের অধিবেশনে পেশাদার সমাজকর্মীদের আচার-আচরণ নিয়ন্ত্রণের জন্য ‘পেশাগত নীতিমালা’ নির্ধারণ করা হয়। এগুলো ১৯৬০ সালে NASW এর স্বীকৃতি লাভ করে। ১৯৬৭ সালে এগুলোর আংশিক সংশোধন করা হয়।

১৩. সামাজিক স্বীকৃতিঃ ১৯৬১ সাল থেকে NASW বিশেষ যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের তালিকাভুক্তির ব্যবস্থা করে। ‘একাডেমি অব সার্টিফাইড সোশ্যাল ওয়ার্কাস’ সমাজকর্মীদের ‘পেশাগত নীতিমালা’র স্বীকৃতি প্রদান করে। বর্তমানে প্রায় সব রাজ্যে সমাজকর্মীদের অনুশীলনের জন্য অনুমতি ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।

উপসংহার: পরিশেষে বলা যায় যে, সমাজকর্ম পেশার সকল বৈশিষ্ট্য ও শর্তপূরণ করে পরিপূর্ণ পেশার মর্যাদায় অভিষিক্ত হয়েছে। এখানে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য যে, আধুনিক সমাজকর্মের মূল বীজ ইংল্যান্ডে অংকুরিত হলেও এর পেশাগত পরিপূর্ণতা আসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। সর্বশেষ সমাজকর্ম পেশাকে জাতিসংঘ আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি প্রদান করে। ১৯৪৮ সালে সমাজসেবা কার্যক্রমের পরিচালক স্যার রাফেল (Rafel) ঘোষণা করেন, “আমেরিকায় সমাজকর্ম যে পেশাগত মর্যাদা লাভ করছে তাতে বিন্দুমাত্রও সন্দেহ পোষণ করা চলেনা।

Shihabur Rahman
Shihabur Rahman
Hey, This is Shihabur Rahaman, B.A (Hons) & M.A in English from National University.

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

ফেসবুক পেইজ

কোর্স টপিক