Theories of First Language Acquisition

Theories of First Language Acquisition

১. বেহেভিয়ারিজম (Behaviorism)

Behaviorist Theory বা আচরণবাদী তত্ত্ব হলো মানুষের ভাষা শেখার প্রথম দিকের ব্যাখ্যাগুলোর একটি। এটি বিংশ শতাব্দীর শুরুতে উদ্ভূত হয় এবং এর বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন মনোবিজ্ঞানী John B. Watson, Ivan Pavlov, এবং B. F. Skinner। এই তত্ত্বটি মন বা চেতনার ভেতরের প্রক্রিয়ার পরিবর্তে মানুষের দৃশ্যমান আচরণের ওপর গুরুত্ব দেয়। আচরণবাদীরা বিশ্বাস করেন যে ভাষা শেখা অন্য যেকোনো অভ্যাস শেখার মতোই — অনুকরণ, অনুশীলন এবং পুনর্বলনের (reinforcement) মাধ্যমে ঘটে।

মূল ধারণা (Main Ideas): আচরণবাদীদের মতে, ভাষা শেখা হলো অভ্যাস গঠনের ফলাফল। একটি শিশু প্রাপ্তবয়স্কদের কথা শোনে এবং তারা যা বলে তা অনুকরণ করে। যখন সেই অনুকরণটি সঠিক হয়, তখন প্রাপ্তবয়স্করা প্রশংসা বা মনোযোগ দিয়ে শিশুটিকে পুরস্কৃত করে। এই পুরস্কার শিশুটিকে উৎসাহ দেয় যেন সে একই পরিস্থিতিতে আবারও একইভাবে বলে। এভাবে সঠিক উচ্চারণ বা বাক্যগুলো অভ্যাসে পরিণত হয়। ভুল প্রতিক্রিয়াগুলো পুরস্কৃত না হওয়ায় বা সংশোধিত হওয়ায় সেগুলো ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হয়।

এই দৃষ্টিকোণ থেকে ভাষা শেখা নির্ভর করে উদ্দীপনা (stimulus) ও প্রতিক্রিয়া (response)-এর ওপর।

  • Stimulus: যা শিশু শোনে।
  • Response: যা শিশু বলে।
  • Reinforcement: পরিবেশ থেকে পাওয়া প্রতিক্রিয়া (ইতিবাচক বা নেতিবাচক)।

সুতরাং, ভাষা অর্জনের প্রক্রিয়াকে এখানে ব্যাখ্যা করা হয় এভাবে — Stimulus → Response → Reinforcement।

আরো পড়ুনঃ  Theory of Language

গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা ও অবদানকারীরা (Important Experiments and Contributors): এই তত্ত্বের ভিত্তি গঠিত হয় Ivan Pavlov এবং John B. Watson-এর পরীক্ষার ওপর।

Pavlov (১৯০৩) কুকুরের ওপর classical conditioning-এর পরীক্ষা পরিচালনা করেন। তিনি দেখান যে যখন ঘণ্টার শব্দ (neutral stimulus) খাবার দেওয়ার আগে বারবার বাজানো হয়, তখন কিছু সময় পর কুকুর শুধু ঘণ্টার শব্দ শুনেই লালারস নিঃসরণ শুরু করে।

Watson (১৯১৩) এই ধারণাকে মানুষের আচরণের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করেন। তাঁর বিখ্যাত “Little Albert” পরীক্ষায় তিনি দেখান যে মানুষের আবেগীয় প্রতিক্রিয়াগুলোকেও শর্তাধীন (conditioned) করা সম্ভব।

B. F. Skinner, এই তত্ত্বের আরেক বিশিষ্ট মনোবিজ্ঞানী, operant conditioning ধারণার মাধ্যমে আচরণবাদকে সম্প্রসারিত করেন। তাঁর গ্রন্থ Verbal Behavior (১৯৫৭)-এ তিনি ব্যাখ্যা করেন যে ভাষা শেখা পুরস্কার ও শাস্তির মাধ্যমে বিকশিত হয়।

  • ইতিবাচক পুনর্বলন (Positive reinforcement) যেমন প্রশংসা, সঠিক কথাবার্তার অভ্যাসকে দৃঢ় করে।
  • নেতিবাচক পুনর্বলন বা শাস্তি (Negative reinforcement) ভুল উচ্চারণ বা বাক্যকে নিরুৎসাহিত করে।

স্কিনারের মতে ভাষা শেখা (Language Learning According to Skinner): Skinner বিশ্বাস করতেন, যখন কোনো শিশু সঠিকভাবে কিছু বলে এবং অনুমোদন বা আনন্দ পায়, তখন সেই আচরণটি পুনরায় ঘটে। যেমন—শিশু যদি “milk” বলে এবং মা হাসে বা দুধ দেয়, তাহলে শিশু বুঝে নেয় যে “milk” শব্দটি বললে সে দুধ পায়। এভাবে বহু অভিজ্ঞতার মাধ্যমে শিশুটি বিপুল পরিমাণ কথার অভ্যাস গড়ে তোলে।

সমালোচনা (Criticisms): Behaviorist Theory-এর বিরুদ্ধে পরবর্তীতে কয়েকটি সমালোচনা ওঠে।

  • এটি অত্যধিক যান্ত্রিক এবং সীমাবদ্ধ বলে সমালোচিত হয়।
  • এটি শিশুর ভাষা শেখার অন্তর্নিহিত ক্ষমতাকে অস্বীকার করে।
  • এটি ব্যাখ্যা করতে পারে না কীভাবে শিশু এমন নতুন ও সৃজনশীল বাক্য তৈরি করে যা সে আগে কখনও শোনেনি।
  • এটি শিক্ষার্থীকে সক্রিয় চিন্তাশীল সত্তা হিসেবে নয়, বরং এক নিষ্ক্রিয় গ্রহীতা হিসেবে দেখে।
  • এটি শিশুর ভাষা শেখার গতি ও জটিলতাকে যথাযথভাবে ব্যাখ্যা করতে ব্যর্থ।

উপসংহার (Conclusion): যদিও Behaviorist Theory-কে পরবর্তীতে Innatism ও Cognitivism-এর মতো উন্নত তত্ত্ব দ্বারা প্রতিস্থাপিত করা হয়, তবুও এর প্রভাব ছিল গভীর। এটি ভাষা শেখানোর জন্য একটি বাস্তব ও সুস্পষ্ট মডেল প্রদান করেছিল, বিশেষত বিদেশি ভাষা শিক্ষায় ব্যবহৃত Audio-Lingual Method-এ। আজও অনুকরণ, অনুশীলন ও পুনর্বলনের নীতি নবীন ও অল্পবয়সী শিক্ষার্থীদের ভাষা শেখানোর ক্ষেত্রে কার্যকরভাবে ব্যবহৃত হয়।

২. মানসবাদী তত্ত্ব (Mentalist Theory / Innatism)

ভূমিকা (Introduction): Mentalist Theory ব্যাখ্যা করে যে ভাষা শেখা একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া, যা মানুষের মস্তিষ্কের ভেতরে ঘটে। এটি ১৯৫০ ও ১৯৬০-এর দশকে Behaviorist Theory-এর প্রতিক্রিয়া হিসেবে বিকশিত হয়। এই তত্ত্বের প্রধান ব্যক্তিত্ব হলেন আমেরিকান ভাষাবিজ্ঞানী Noam Chomsky। তিনি আচরণবাদীদের “অনুকরণ ও পুনর্বলনের মাধ্যমে ভাষা শেখা” ধারণার তীব্র সমালোচনা করেন। বরং তিনি যুক্তি দেন যে, শিশু জন্মগতভাবেই ভাষা শেখার এক বিশেষ ক্ষমতা নিয়ে জন্মায়। এই দৃষ্টিভঙ্গি Innatism বা Nativist Theory নামেও পরিচিত। এই তত্ত্ব অনুযায়ী, মানুষের মধ্যে এমন একটি জৈবিক ক্ষমতা রয়েছে যা তাকে স্বাভাবিকভাবে ভাষা বুঝতে ও ব্যবহার করতে সাহায্য করে।

মূল ধারণা (Main Concepts of the Theory): Mentalist Theory-এর মূল ধারণা হলো Language Acquisition Device (LAD)। Chomsky প্রস্তাব করেন যে প্রতিটি শিশু এই বিশেষ মানসিক ব্যবস্থাটি নিয়ে জন্মায়। এই LAD শিশুকে তার আশপাশে শোনা ভাষার নিয়ম আবিষ্কার করতে সক্ষম করে। পরে তিনি এই ধারণাটিকে বিকশিত করে Universal Grammar (UG)-এর তত্ত্বে রূপ দেন। Universal Grammar-এর অর্থ হলো—সব ভাষার মধ্যেই কিছু মৌলিক ব্যাকরণিক কাঠামো বিদ্যমান থাকে, যা মানুষের মস্তিষ্কের অংশ, অভিজ্ঞতা থেকে শেখা নয়। এই কারণেই পৃথিবীর সব সংস্কৃতির শিশুরা একই ধরণের ভাষা শেখার পর্যায় অতিক্রম করে এবং একই ধরণের ব্যাকরণগত ভুল করে। LAD তাদের এমন বাক্য তৈরি করতে সাহায্য করে যা তারা আগে কখনও শোনেনি—অর্থাৎ এটি ভাষাকে সৃজনশীলভাবে ব্যবহারের ক্ষমতা প্রদান করে।

‘Poverty of the Stimulus’ এবং ভাষার সৃজনশীলতা: Chomsky-এর সবচেয়ে শক্তিশালী যুক্তিগুলোর একটি হলো “Poverty of the Stimulus”। তিনি দেখান যে শিশুরা প্রাপ্তবয়স্কদের কাছ থেকে অসম্পূর্ণ ও ভুলভাল ভাষা শোনে, তবুও তারা ব্যাকরণসম্মত ও নতুন বাক্য তৈরি করতে সক্ষম হয়। এটি প্রমাণ করে যে অনুকরণ ও পুনর্বলন ভাষা শেখার পূর্ণ ব্যাখ্যা দিতে পারে না। বরং শিশুর মস্তিষ্কে ব্যাকরণের নিয়ম সংক্রান্ত অন্তর্নিহিত জ্ঞান আগে থেকেই বিদ্যমান থাকতে হবে। Chomsky আরও বলেন, ভাষা ব্যবহারের একটি সৃজনশীল প্রকৃতি আছে। মানুষ কেবল অন্যের বাক্য পুনরাবৃত্তি করে না, বরং ব্যাকরণিক নিয়ম প্রয়োগ করে অসংখ্য নতুন বাক্য তৈরি করতে পারে। এই সৃজনশীলতা প্রমাণ করে যে ভাষা শেখা একটি মানসিক ও নিয়মনির্ভর প্রক্রিয়া।

Competence এবং Performance: Chomsky ভাষাবিজ্ঞানে দুটি গুরুত্বপূর্ণ ধারণা প্রবর্তন করেন — Competence ও Performance।

  • Competence হলো একজন বক্তার মনের ভেতরে থাকা ভাষাব্যবস্থার জ্ঞান — অর্থাৎ সঠিকভাবে বাক্য গঠন ও বুঝতে পারার ক্ষমতা।
  • Performance হলো বাস্তব জীবনে সেই ভাষার ব্যবহার।

কখনও মানুষ নার্ভাসনেস বা মনোযোগহীনতার কারণে ভুলভাবে কথা বলতে পারে, কিন্তু তাতে তার ভাষাগত দক্ষতা কমে যায় না। এই পার্থক্যটি দেখায় যে ভাষা কেবল দৃশ্যমান আচরণ নয়, এটি মনের ভেতরে সংরক্ষিত এক মানসিক ব্যবস্থা।

তত্ত্বের সমর্থক ও বিকাশ (Supporters and Development): Chomsky-এর মানসবাদী ধারণাগুলোকে শক্তিশালী করতে আরও কয়েকজন গবেষক অবদান রাখেন।

Eric Lenneberg, তাঁর বই Biological Foundations of Language (১৯৬৭)-এ দেখান যে ভাষা একটি জৈবিক প্রক্রিয়া এবং এটি মস্তিষ্কের একটি নির্দিষ্ট বিকাশকালেই ঘটে। তিনি দেখান যে কেবল মানুষেরই ভাষা শেখার জন্য প্রয়োজনীয় মানসিক ও শারীরবৃত্তীয় কাঠামো রয়েছে।

J. J. Katz (১৯৬৪) তুলনামূলকভাবে Taxonomic ও Mentalist দৃষ্টিভঙ্গি বিশ্লেষণ করেন। তিনি ব্যাখ্যা করেন যে Taxonomic ভাষাবিজ্ঞান কেবল ভাষার দৃশ্যমান দিকগুলো নিয়ে কাজ করে, কিন্তু Mentalism ভাষা অর্জনের মানসিক প্রক্রিয়াগুলোকে ব্যাখ্যা করে। এভাবে এই গবেষণাগুলো Mentalist Theory-কে শক্তিশালী ও যৌক্তিক তত্ত্বে পরিণত করে।

তত্ত্বের সীমাবদ্ধতা (Limitations of the Theory): যদিও Mentalist Theory ভাষা গবেষণায় এক বিপ্লব ঘটায়, তবুও এর কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। এটি ভাষা শেখার ক্ষেত্রে পরিবেশ ও সামাজিক যোগাযোগের ভূমিকা প্রায় উপেক্ষা করে। এটি Language Acquisition Device (LAD) কীভাবে কাজ করে, সেটিও বিস্তারিত ব্যাখ্যা করে না। সমালোচকরা বলেন, ভাষা শেখা কেবল মানসিক প্রক্রিয়া নয়; এটি যোগাযোগ, অনুশীলন এবং সামাজিক পরিবেশের ওপরও নির্ভর করে। পরবর্তীতে Cognitive Theory ও Interactionism এই ঘাটতিগুলো পূরণ করার চেষ্টা করে, যেখানে মানসিক ও সামাজিক উপাদান উভয়কেই ভাষা শেখার সঙ্গে যুক্ত করা হয়।

আরো পড়ুনঃ  Teaching Vocabulary

উপসংহার (Conclusion): Mentalist Theory ভাষা গবেষণার ধারা পরিবর্তন করে দেয় — এটি আচরণ থেকে মনস্তত্ত্বের দিকে মনোযোগ স্থানান্তর করে। এই তত্ত্ব প্রমাণ করে যে ভাষা কেবল শেখা কোনো দক্ষতা নয়, বরং এটি মানুষের স্বাভাবিক ও অন্তর্নিহিত ক্ষমতা। এই দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী, শিশু তাদের প্রথম ভাষা শেখে কারণ তাদের মস্তিষ্ক ভাষা শেখার জন্যই পরিকল্পিত। Chomsky ও তাঁর অনুসারীদের ধারণা এখনো আধুনিক ভাষাবিজ্ঞান ও ভাষা শিক্ষার মূল ভিত্তি হিসেবে কাজ করছে। যদিও পরবর্তীতে নানা তত্ত্ব এই ধারণাকে সম্প্রসারিত বা সংশোধন করেছে, তবুও Mentalist বা Innatist Theory ভাষা শেখার প্রক্রিয়া বোঝার অন্যতম ভিত্তি হিসেবে আজও অটল।

৩. Cognitive Theory (জ্ঞানতত্ত্বভিত্তিক তত্ত্ব)

Introduction (ভূমিকা): Cognitive Theory ব্যাখ্যা করে যে ভাষা শেখা একটি শিশুর মানসিক বিকাশের সামগ্রিক প্রক্রিয়ার অংশ। এই তত্ত্ব চিন্তা ও ভাষার মধ্যে সম্পর্কের উপর গুরুত্ব দেয়। এটি মূলত সুইস মনোবিজ্ঞানী Jean Piaget-এর কাজের উপর ভিত্তি করে গঠিত। তার মতে, শিশু প্রথমে চারপাশের জগৎকে বুঝতে শেখে, তারপর সেই বোঝাপড়াকে ভাষার মাধ্যমে প্রকাশ করে। অর্থাৎ, ভাষা চিন্তার উপর নির্ভরশীল। Piaget মনে করতেন, ভাষা অনুকরণ বা জন্মগত নিয়মের ফল নয়; বরং এটি শিশুর পরিবেশের সঙ্গে সক্রিয় মানসিক মিথস্ক্রিয়ার মাধ্যমে ধীরে ধীরে বিকশিত হয়।

Main Concepts of the Theory (তত্ত্বের মূল ধারণা): জ্ঞানতত্ত্ববাদীরা বিশ্বাস করেন যে ভাষা বিকাশ অন্য মানসিক ক্ষমতার বিকাশের মতোই একটি ধারা অনুসরণ করে — যেমন স্মৃতি, যুক্তি, এবং সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা। শিশুরা এই জ্ঞানীয় দক্ষতাগুলি ব্যবহার করে নতুন তথ্য বুঝতে শেখে এবং শব্দের সঙ্গে অর্থের সম্পর্ক স্থাপন করে। উদাহরণস্বরূপ, একটি শিশু প্রথমে “dog” কী তা বোঝে, তারপর সে “dog” শব্দটি ব্যবহার করতে শেখে। অর্থাৎ, ধারণা শেখা হয় আগে, শব্দ শেখা হয় পরে। ভাষা ও চিন্তা একসঙ্গে বিকাশ লাভ করে, এবং শিশুর মানসিক বৃদ্ধি যত এগোয়, তার ভাষা ব্যবহারের ক্ষমতাও তত জটিল ও অর্থবহ হয়ে ওঠে। তাই ভাষা শেখা মূলত একটি মানসিক সংগঠন ও বোঝাপড়ার প্রক্রিয়া, শুধু অভ্যাস গঠনের ফল নয়।

Stages of Cognitive and Language Development (জ্ঞানীয় ও ভাষাগত বিকাশের ধাপসমূহ): Piaget চারটি ধাপে শিশুদের মানসিক বিকাশ ব্যাখ্যা করেন, যার প্রথম দুটি ধাপ ভাষা শেখার সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত: 

(১) Sensory-Motor Stage (জন্ম থেকে ২ বছর পর্যন্ত): এই পর্যায়ে শিশু ইন্দ্রিয় ও শারীরিক ক্রিয়ার মাধ্যমে শেখে। তারা স্পর্শ, দেখা ও শোনার মাধ্যমে পৃথিবীকে আবিষ্কার করে। ধীরে ধীরে তারা বস্তু ও মানুষের মানসিক চিত্র গঠন করতে শেখে। তাদের প্রথম শব্দগুলো সাধারণত পরিচিত বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কিত হয় — যেমন “মা,” “দুধ,” বা “কুকুর।”

(২) Pre-Operational Stage (২ থেকে ৭ বছর পর্যন্ত): এই পর্যায়ে শিশুর চিন্তাভাবনা প্রতীকী রূপ পায়। তারা এখন শব্দ ব্যবহার করে বস্তু ও ধারণাকে প্রকাশ করতে পারে। তাদের শব্দভাণ্ডার দ্রুত বৃদ্ধি পায়, এবং তারা ছোট বাক্য ও সরল বাক্য রচনা করতে শেখে। এই সময়ে তারা বর্তমান সময়ের বাইরের বিষয় নিয়েও কথা বলতে পারে — যেমন অতীত বা ভবিষ্যৎ সম্পর্কে।

এই ধাপগুলো দেখায় যে ভাষা ও মানসিক বিকাশ পাশাপাশি এগিয়ে চলে। শিশুর চিন্তাশক্তি যত বিকশিত হয়, তার ভাষা তত সমৃদ্ধ হয়।

Contribution of Jean Piaget (Jean Piaget-এর অবদান): Jean Piaget (১৮৯৬–১৯৮০) Cognitive Theory-এর প্রতিষ্ঠাতা ব্যক্তিত্ব। তিনি Behaviorist-দের ধারণা — অর্থাৎ ভাষা কেবল অনুকরণ ও পুরস্কারের মাধ্যমে শেখা হয় — তা প্রত্যাখ্যান করেন। আবার তিনি Chomsky-র মতের সঙ্গেও একমত ছিলেন না, যিনি বলেছিলেন ভাষা সম্পূর্ণ জন্মগত।

Piaget মনে করতেন, শিশু এক সক্রিয় শিক্ষার্থী (active learner), যে নিজের অভিজ্ঞতা ও আবিষ্কারের মাধ্যমে জ্ঞান গড়ে তোলে। তিনি ব্যাখ্যা করেন যে শিশুরা schemas (মানসিক কাঠামো) গঠন করে, যা তাদের নতুন তথ্য সংগঠিত করতে সাহায্য করে। নতুন অভিজ্ঞতার মাধ্যমে এই schemas-গুলো পরিবর্তিত ও সম্প্রসারিত হয়। এই প্রক্রিয়াকে বলা হয়: 

  • Assimilation (অন্তর্ভুক্তি): নতুন তথ্যকে পুরনো জ্ঞানের সঙ্গে মিলিয়ে নেওয়া।
  • Accommodation (সমন্বয়): নতুন অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে পুরনো জ্ঞানকে সংশোধন করা।

এই দুই প্রক্রিয়া একত্রে শিশুর বুদ্ধিবৃত্তিক ও ভাষাগত বিকাশকে ত্বরান্বিত করে।

Relationship between Language and Thought (ভাষা ও চিন্তার সম্পর্ক): Cognitive Theory-এর মতে, ভাষা হচ্ছে মানসিক বিকাশের প্রতিফলন। একটি শিশু যা বোঝে না, তা কখনো প্রকাশ করতে পারে না। উদাহরণস্বরূপ, “গতকাল” বা “আগামীকাল” নিয়ে কথা বলার আগে শিশুকে সময়ের ধারণা বুঝতে হবে। তাই চিন্তা আগে, ভাষা পরে। এই সম্পর্ক নির্দেশ করে যে শিক্ষক ও অভিভাবকদের উচিত শিশুর চিন্তাশক্তি ও যুক্তি বিকাশে সহায়তা করা — কেবল শব্দ মুখস্থ করানো নয়।

Criticisms of the Cognitive Theory (Cognitive Theory-এর সমালোচনা): এই তত্ত্ব কিছু সীমাবদ্ধতার জন্য সমালোচিতও হয়েছে। অনেকে মনে করেন এটি সামাজিক মিথস্ক্রিয়ার গুরুত্বকে অবহেলা করেছে। পরবর্তী মনোবিজ্ঞানী Lev Vygotsky-র মতে, অন্যদের সঙ্গে যোগাযোগই ভাষা ও চিন্তার বিকাশে প্রধান ভূমিকা রাখে।

আরেকটি সমালোচনা হলো, Piaget ভাষা শেখার গতি ব্যাখ্যা করতে পারেননি। অনেক শিশু কথা বলা শুরু করে যুক্তিসঙ্গত চিন্তা গঠনের আগেই।

তবুও Cognitive Theory-এর গুরুত্ব অস্বীকার করা যায় না, কারণ এটি ভাষা শিক্ষার মানসিক দিককে ব্যাখ্যা করে এবং দেখায় যে ভাষা শেখা আসলে বোঝার ও চিন্তার এক অন্তর্গত প্রক্রিয়া।

Conclusion (উপসংহার): Cognitive Theory ভাষা শেখাকে মানসিক বিকাশের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে তুলে ধরে। এটি দেখায় যে শিশুরা প্রথমে তাদের চারপাশের জগৎকে বোঝে, তারপর ভাষার মাধ্যমে তা প্রকাশ করতে শেখে। Piaget-এর কাজ আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে কার্যকর ভাষা শিক্ষা মানে হচ্ছে — শিশুকে চিন্তা করতে, পর্যবেক্ষণ করতে ও অর্থ খুঁজে পেতে সাহায্য করা। এই তত্ত্ব একটি ভারসাম্যপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি দেয়। এটি মন, অভিজ্ঞতা ও প্রকাশ — এই তিনটি উপাদানকে একত্রিত করে, এবং প্রমাণ করে যে ভাষা কেবল যোগাযোগের মাধ্যম নয়, এটি মানুষের চিন্তার আয়নাও বটে।

৪. Critical Period Hypothesis (সঙ্কটকালীন পর্যায় তত্ত্ব)

Introduction (ভূমিকা): Critical Period Hypothesis (CPH) ভাষা অর্জনবিজ্ঞানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ধারণা। এটি ব্যাখ্যা করে যে জীবনের প্রাথমিক এক নির্দিষ্ট সময়ে মানুষের মস্তিষ্ক স্বাভাবিকভাবে ভাষা শেখার জন্য প্রস্তুত থাকে। এই সময়ের পর ভাষা শেখা — তা প্রথম ভাষাই হোক বা দ্বিতীয় — অনেক কঠিন হয়ে যায়। তত্ত্বটি ভাষা শেখাকে জৈবিক বিকাশ ও মস্তিষ্কের পরিপক্বতা-র সঙ্গে যুক্ত করে। এটি বলে যে ভাষা শেখার সহজতা মস্তিষ্কের plasticity (স্থিতিস্থাপকতা)-র ওপর নির্ভরশীল, যা বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কমে যায়।

Origin and Development of the Hypothesis (তত্ত্বটির উদ্ভব ও বিকাশ): এই ধারণাটি প্রথমে Wilder Penfield এবং Lamar Roberts তাদের বই Speech and Brain Mechanisms (১৯৫৯)-এ উপস্থাপন করেন। তারা বলেন, মস্তিষ্ক সম্পূর্ণ পরিপক্ব হওয়ার আগেই ভাষা শেখা সবচেয়ে সহজ।

পরবর্তীতে Eric Lenneberg (১৯৬৭) তার বিখ্যাত বই Biological Foundations of Language-এ এই ধারণাটিকে আরও পরিপূর্ণভাবে ব্যাখ্যা করেন। তিনি যুক্তি দেন, ভাষা অর্জন একটি জৈবিকভাবে নিয়ন্ত্রিত প্রক্রিয়া, এবং মস্তিষ্কে ভাষা শেখার একটি সীমিত সময় থাকে। এই সময় সাধারণত কৈশোরে (puberty) শেষ হয়ে যায়, যখন brain lateralization — অর্থাৎ মস্তিষ্কের দুই অর্ধগোলকের বিশেষায়ন — সম্পূর্ণ হয়।

Main Concepts of the Theory (তত্ত্বের মূল ধারণা): Critical Period Hypothesis-এর মতে, শিশু কেবল তখনই native-like fluency (স্বাভাবিক মাতৃভাষাগত সাবলীলতা) অর্জন করতে পারে, যদি সে ১২ বা ১৩ বছর বয়সের আগেই ভাষার সংস্পর্শে আসে। এই সময়ে মস্তিষ্ক অত্যন্ত নমনীয় থাকে এবং নতুন ভাষাগত সংযোগ গঠনে সক্ষম। এর পরের সময়ে এই সংযোগগুলোর স্থিতিস্থাপকতা কমে যায়, ফলে ভাষা শেখা ধীর ও কঠিন হয়ে পড়ে। অর্থাৎ, বয়স যত কম, শেখা তত সহজ ও প্রাকৃতিক। এই তত্ত্ব আরও ব্যাখ্যা করে যে Critical Period পেরিয়ে গেলে ভাষা শেখা আর স্বতঃস্ফূর্ত থাকে না — বরং সচেতন অধ্যবসায়, অনুশীলন ও আনুষ্ঠানিক শিক্ষার প্রয়োজন হয়।

Evidence Supporting the Hypothesis (তত্ত্বটির সমর্থনে প্রমাণ): Critical Period Hypothesis-এর পক্ষে অনেক গবেষণা ও বাস্তব উদাহরণ রয়েছে। সবচেয়ে পরিচিত উদাহরণ হলো “Genie” নামের এক কিশোরী, যাকে ১৩ বছর বয়স পর্যন্ত সম্পূর্ণভাবে একঘরে রাখা হয়েছিল এবং ভাষার কোনো সংস্পর্শে আনা হয়নি। পরবর্তীতে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হলেও সে কখনো স্বাভাবিক ভাষাগত দক্ষতা অর্জন করতে পারেনি। এই ঘটনা দেখায় যে Critical Period-এর পর পূর্ণ ভাষা শেখা প্রায় অসম্ভব। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ আসে বধির শিশুদের উপর করা গবেষণা থেকে। Newport ও Supalla দেখিয়েছেন, যারা জন্ম থেকেই American Sign Language (ASL) শিখেছে, তারা পূর্ণ দক্ষতা অর্জন করেছে; কিন্তু যারা পরে শেখা শুরু করেছে, তাদের ব্যাকরণগত দক্ষতা সীমিত। এইসব উদাহরণ প্রমাণ করে যে ভাষার প্রাথমিক সংস্পর্শই স্বাভাবিক বিকাশের জন্য অপরিহার্য।

Critical Period and Second Language Acquisition (Critical Period ও দ্বিতীয় ভাষা শেখা): Critical Period Hypothesis কেবল প্রথম ভাষার ক্ষেত্রেই নয়, দ্বিতীয় ভাষা শেখার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা কৈশোরের আগেই দ্বিতীয় ভাষা শেখা শুরু করে, তারা সাধারণত native-like উচ্চারণ ও সাবলীলতা অর্জন করে; আর যারা পরে শুরু করে, তাদের মধ্যে বিদেশি উচ্চারণ ও ব্যাকরণগত দুর্বলতা থেকে যায়। তবে অনেক পণ্ডিত মনে করেন, প্রাপ্তবয়স্করাও সফলভাবে দ্বিতীয় ভাষা শিখতে পারে — তাদের শেখা নির্ভর করে প্রেরণা (motivation), পরিবেশ, ও চর্চার উপর। ভোকাবুলারি বা শব্দভাণ্ডার যেকোনো বয়সে শেখা সম্ভব, কিন্তু উচ্চারণ (phonology) ও ব্যাকরণ (syntax) শেখা Critical Period-এর দ্বারা বেশি প্রভাবিত হয়।

আরো পড়ুনঃ Teaching The Four Language Skills 

Relationship with Other Theories (অন্য তত্ত্বগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক): Critical Period Hypothesis ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত Chomsky-র Innatist Theory-র সঙ্গে, যেখানে বলা হয়েছে যে মানুষ জন্মগতভাবে Language Acquisition Device (LAD)-এর মাধ্যমে ভাষা শেখার ক্ষমতা নিয়ে জন্মায়।

Lenneberg-এর জৈবিক ব্যাখ্যা এই ধারণাকে সমর্থন করে, কারণ তিনি দেখিয়েছিলেন যে LAD-এর কার্যক্ষমতা শিশুকালের প্রাথমিক বছরগুলোতেই সর্বাধিক।

এছাড়াও, এটি Piaget-এর Cognitive Theory-এর সঙ্গেও সম্পর্কিত, যা ভাষা বিকাশকে মস্তিষ্কের বিকাশের সঙ্গে যুক্ত করে।

এই তিনটি তত্ত্ব একত্রে প্রমাণ করে যে ভাষা শেখা শুধু অনুকরণ বা অভ্যাস নয় — এটি একটি জৈবিক ও মানসিক প্রক্রিয়া।

Criticisms of the Hypothesis (তত্ত্বটির সমালোচনা): যদিও Critical Period Hypothesis ব্যাপকভাবে স্বীকৃত, এটি কিছু সমালোচনারও মুখোমুখি হয়েছে। কিছু গবেষক বলেন, কৈশোরের পরেও ভাষা শেখা সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায় না; বরং শেখার গতি ও পদ্ধতি বদলে যায়। সফল শেখা নির্ভর করে প্রেরণা, অনুশীলন ও সুযোগের উপর, শুধুমাত্র জৈবিক সীমার উপর নয়। অন্যরা বলেন, এই তত্ত্ব সুনির্দিষ্টভাবে Critical Period-এর সময়সীমা নির্ধারণ করতে পারেনি। কিছু গবেষণায় আরও দেখা গেছে যে শব্দভাণ্ডার ও পাঠের দক্ষতা প্রাপ্তবয়স্ক বয়সেও বিকশিত হতে পারে। তাই যদিও মস্তিষ্কের স্থিতিস্থাপকতা বয়সের সঙ্গে কমে, ভাষা শেখার ক্ষমতা কখনো পুরোপুরি হারিয়ে যায় না।

Conclusion (উপসংহার): Critical Period Hypothesis ভাষা শেখা ও জীববিজ্ঞানের মধ্যে এক গভীর সম্পর্ক স্থাপন করে। এটি ব্যাখ্যা করে কেন শিশু সহজে ও স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভাষা শেখে, অথচ প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য তা অনেক কঠিন। যদিও আধুনিক গবেষণা এর কিছু দিক পরিমার্জন করেছে, মূল ধারণাটি এখনো গুরুত্বপূর্ণ — ভাষা শেখার জন্য একটি জৈবিকভাবে অনুকূল সময়কাল (biologically optimal period) বিদ্যমান। এই তত্ত্ব আমাদের মনে করিয়ে দেয়, শৈশবে ভাষার সংস্পর্শ ও ব্যবহারই স্বাভাবিক ও পূর্ণাঙ্গ ভাষা বিকাশের মূল চাবিকাঠি।

Share your love
Riya Akter
Riya Akter

Hey, This is Riya Akter Setu, B.A (Hons) & M.A in English from National University.

Articles: 747