Theories of Second Language Development

 Theories of Second Language Development

১. ভূমিকা: দ্বিতীয় ভাষা অর্জন (Second-Language Acquisition) বা SLA অধ্যয়ন করে মানুষ কীভাবে প্রথম ভাষার পরে আরেকটি ভাষা শেখে। এই ক্ষেত্রটি আন্তঃবিষয়ক (interdisciplinary)। এটি ভাষাবিজ্ঞান, মনোবিজ্ঞান, জ্ঞানবিজ্ঞান, সমাজভাষাবিজ্ঞান, স্নায়ুবিজ্ঞান এবং শিক্ষাবিদ্যার ধারণা ব্যবহার করে। গবেষকরা অনুসন্ধান করেন কী শেখাকে সহায়তা করে এবং কেন শেখায় অসুবিধা দেখা দেয়। কোনো একক তত্ত্ব সব কিছু ব্যাখ্যা করতে পারে না। প্রতিটি তত্ত্ব শেখার প্রক্রিয়ার একটি দিককে আলোকিত করে। একত্রে তারা দ্বিতীয় ভাষা শেখার একটি পূর্ণাঙ্গ চিত্র তৈরি করে।

২. ঐতিহাসিক মাইলফলক: আধুনিক SLA-এর বিকাশ শুরু হয় ১৯৬০-এর দশকের শেষ ভাগে এবং ১৯৭০-এর দশকের শুরুতে। ১৯৬৭ সালে এস. পি. কর্ডার (S. P. Corder) তাঁর প্রবন্ধ “The Significance of Learners’ Errors” প্রকাশ করেন। তিনি দেখান যে শিক্ষার্থীদের ভুল শুধুমাত্র ব্যর্থতা নয়, বরং অভ্যন্তরীণ শেখার প্রমাণ। ১৯৭২ সালে ল্যারি সেলিংকার (Larry Selinker) “ইন্টারল্যাঙ্গুয়েজ” (Interlanguage) ধারণা উপস্থাপন করেন। তিনি যুক্তি দেন যে শিক্ষার্থীরা একটি স্বতন্ত্র ব্যবস্থা তৈরি করে, যা না তাদের প্রথম ভাষা (L1), না দ্বিতীয় ভাষা (L2), বরং নিজস্ব নিয়মসমৃদ্ধ একটি বিকাশমান ব্যাকরণ। ১৯৭০-এর দশকে “মর্ফিম-অর্ডার স্টাডিজ” এবং অভিবাসী শিক্ষার্থীদের উপর প্রাকৃতিক গবেষণা (naturalistic research) শুরু হয়। ১৯৮০-এর দশকে স্টিফেন ক্রাশেন (Stephen Krashen) ইনপুট-ভিত্তিক (input-driven) ধারণাগুলোকে জনপ্রিয় করেন। পরবর্তীতে মাইকেল লং (Michael Long), মেরিল সুয়াইন (Merrill Swain), এবং রিচার্ড শ্মিড্ট (Richard Schmidt) যথাক্রমে যোগাযোগ (interaction), আউটপুট (output), এবং লক্ষ্যনির্ভরতা (noticing) ধারণা যোগ করেন। ১৯৯০-এর দশকে ইউনিভার্সাল গ্রামার (Universal Grammar)-ভিত্তিক গবেষণা, দক্ষতা অর্জন (skill acquisition), কানেকশনিজম (connectionism), প্রসেসেবিলিটি থিওরি (Processability Theory), এবং ইনপুট প্রসেসিং (Input Processing)-এর ধারণা উদ্ভব হয়। ২০০০ সালের পর থেকে সমাজসাংস্কৃতিক তত্ত্ব (sociocultural theory), ব্যবহার-ভিত্তিক পদ্ধতি (usage-based approach), এবং জটিল গতিশীল ব্যবস্থা তত্ত্ব (complex dynamic systems approach) গুরুত্ব পেতে থাকে।

৩. আচরণবাদী তত্ত্ব (Behaviorist Theory) এবং SLA: আচরণবাদ (Behaviorism) শেখাকে অভ্যাস গঠনের প্রক্রিয়া হিসেবে দেখে। এটি উদ্দীপনা (stimulus), প্রতিক্রিয়া (response), এবং পুনর্বলন (reinforcement)-এর মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন করে। দ্বিতীয় ভাষা শ্রেণিকক্ষে এই তত্ত্বটি অডিও-লিংগুয়াল পদ্ধতিকে (Audio-Lingual Method) সমর্থন করেছিল। সংলাপ ও অনুশীলনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পুরনো L1 অভ্যাস নতুন L2 অভ্যাসে রূপান্তরিত করার চেষ্টা করা হতো। এই তত্ত্বটি অনুশীলনের গুরুত্ব এবং প্রতিক্রিয়ার ভূমিকা ব্যাখ্যা করে। তবে এটি সৃজনশীল বাক্য বা শেখার ধাপভিত্তিক বিকাশকে ব্যাখ্যা করতে পারে না। পরবর্তী গবেষণায় প্রমাণিত হয় যে শিক্ষার্থীরা নিজস্ব নিয়ম তৈরি করে এবং কেবল পুনরাবৃত্তি যথেষ্ট নয়।

৪. অন্তর্জাত তত্ত্ব (Innatist Theory) এবং ইউনিভার্সাল গ্রামার (UG): অন্তর্জাত মতবাদটি (innatist view) নোয়াম চমস্কি (Noam Chomsky)-এর ধারণা থেকে উদ্ভূত। তিনি ব্যাকরণের জন্য মানুষের মধ্যে একটি জন্মগত ক্ষমতা (inborn capacity) থাকার কথা বলেন। ইউনিভার্সাল গ্রামার (UG) এমন কিছু নীতি দেয় যা সব ভাষায় সাধারণ, পাশাপাশি কিছু প্যারামিটারও থাকে যা ভাষাভেদে ভিন্নভাবে প্রয়োগ হয়। SLA-তে গবেষকেরা প্রশ্ন তোলেন—বয়স্ক শিক্ষার্থীরা এখনো কি UG-তে প্রবেশাধিকার রাখে? কেউ কেউ বলেন এই প্রবেশাধিকার আংশিক বা পরোক্ষ, আবার কেউ বিশ্বাস করেন এর শক্তিশালী প্রভাব কেবল শৈশবকালেই দেখা যায়। UG-ভিত্তিক গবেষণা “প্রাথমিক অবস্থা” (initial state), L1 থেকে বৈশিষ্ট্য স্থানান্তর (feature transfer), এবং চূড়ান্ত দক্ষতার সীমাবদ্ধতা (limits of ultimate attainment) নিয়ে কাজ করে।

৫. ক্রাশেনের মনিটর মডেল (Krashen’s Monitor Model): স্টিফেন ক্রাশেন (Stephen Krashen) পাঁচটি মূল ধারণা উপস্থাপন করেন। অর্জন বনাম শেখা (Acquisition vs. Learning) পার্থক্য করে অবচেতনে ভাষা অর্জন (subconscious acquisition) ও সচেতনভাবে ভাষা অধ্যয়ন (conscious study)-এর মধ্যে। মনিটর (The Monitor) শেখা নিয়মগুলিকে ব্যবহার করে ভাষা আউটপুট সম্পাদনা বা সংশোধন করে। ইনপুট হাইপোথিসিস (The Input Hypothesis) বলে যে শেখার অগ্রগতি নির্ভর করে এমন বোধগম্য ইনপুটের ওপর যা শিক্ষার্থীর বর্তমান স্তর থেকে এক ধাপ উঁচু, অর্থাৎ i+1। ন্যাচারাল অর্ডার (The Natural Order) মতবাদটি দাবি করে যে ভাষার কিছু গঠন পূর্বনির্ধারিত ও পূর্বাভাসযোগ্য ক্রমে শেখা হয়। অ্যাফেকটিভ ফিল্টার (The Affective Filter) ধারণা অনুযায়ী উদ্বেগ (anxiety) ও নিম্ন প্রেরণা (low motivation) শেখার প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করে। এই মডেলটি ভাষা শিক্ষাদানকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে। এটি শিক্ষার মূল জোরকে সমৃদ্ধ ইনপুট ও কম উদ্বেগপূর্ণ পরিবেশের দিকে সরিয়ে নিয়েছে। তবে সমালোচকেরা বলেন যে i+1 ধারণাটি অস্পষ্ট এবং মডেলটি আউটপুট বা মনোযোগের (attention) ভূমিকা যথাযথভাবে ব্যাখ্যা করতে পারে না।

আরো পড়ুনঃ Teachers’ and Students’ Roles in Language Education

৬. ইন্টারঅ্যাকশন হাইপোথিসিস (Interaction Hypothesis): মাইকেল লং (Michael Long) যুক্তি দেন যে ইনপুট সবচেয়ে কার্যকর হয় যখন তা যোগাযোগের মাধ্যমে আসে। বক্তারা যখন অর্থ পরিষ্কার করতে চেষ্টা করেন—প্রশ্ন করে, পুনরাবৃত্তি করে বা বাক্য পুনর্গঠন করে—তখন ইনপুট আরও স্পষ্ট ও লক্ষ্যনির্দিষ্ট হয়। এই পারস্পরিক যোগাযোগ (interaction) শিক্ষার্থীদের শেখার ফাঁকগুলো উপলব্ধি করতেও সাহায্য করে। এটি সামাজিক ব্যবহারের সঙ্গে মানসিক প্রক্রিয়াকে যুক্ত করে। শ্রেণিকক্ষে জোড়া কাজ (pair work), টাস্কভিত্তিক কার্যক্রম (tasks), এবং আলোচনামূলক প্রতিক্রিয়া (negotiated feedback) ব্যবহার করে এই তত্ত্বের সুফল বাস্তবায়িত করা হয়।

৭. আউটপুট হাইপোথিসিস (Output Hypothesis): মেরিল সুয়াইন (Merrill Swain) বলেন যে comprehensible output বা বোধগম্য আউটপুটও গুরুত্বপূর্ণ। ভাষা উৎপাদনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা তাদের ধারণা যাচাই করতে পারে। এটি তাদের শেখার ঘাটতিগুলো বুঝতে সাহায্য করে। আউটপুট শিক্ষার্থীদের ভাষার গঠন (form)-এর দিকে মনোযোগ দিতে এবং প্রতিক্রিয়া (feedback) গ্রহণে উৎসাহিত করে। গবেষণায় দেখা গেছে যে কেবল আউটপুটই যথেষ্ট নয়, কিন্তু ইনপুট ও ইন্টারঅ্যাকশনের সঙ্গে একত্রে এটি ব্যাকরণ পরিশীলিত করে এবং সাবলীলতা (fluency) বৃদ্ধি করে।

৮. নোটিসিং হাইপোথিসিস (Noticing Hypothesis): রিচার্ড শ্মিড্ট (Richard Schmidt) যুক্তি দেন যে ইনপুট তখনই intake বা শেখার উপযোগী জ্ঞান হয়ে ওঠে যখন শিক্ষার্থী তা লক্ষ্য করে বা “noticing” করে। রূপের প্রতি মনোযোগ (attention to form)—যা গুরুত্ব (salience), প্রয়োজন (need), বা নির্দেশনার (instruction) মাধ্যমে উদ্দীপ্ত হতে পারে—শেখার প্রক্রিয়াকে সহায়তা করে। নোটিসিং সম্পূর্ণ ব্যাকরণ বিশ্লেষণ বা মেটালিঙ্গুইস্টিক জ্ঞান (metalinguistic knowledge) প্রয়োজন করে না, তবে ভাষার কিছু বৈশিষ্ট্যের প্রতি সচেতনতা তথ্য সংরক্ষণ (encoding) ও পরবর্তী পুনরুদ্ধারে (retrieval) সহায়তা করে।

৯. স্বয়ংক্রিয়তা ও দক্ষতা অর্জন (Automaticity and Skill Acquisition): জন আর. অ্যান্ডারসন (John R. Anderson)-এর ACT Theory শেখাকে ব্যাখ্যা করে একটি পরিবর্তন হিসেবে—ঘোষণামূলক জ্ঞান (declarative knowledge) থেকে প্রক্রিয়াগত জ্ঞান (procedural knowledge)-এ, এবং সেখান থেকে স্বয়ংক্রিয় ব্যবহারে (automatic use)। অনুশীলনের মাধ্যমে শেখা নিয়মগুলো দ্রুত ও স্বতঃস্ফূর্ত অভ্যাসে পরিণত হয়। SLA-তে এর অর্থ হলো, সচেতনভাবে শেখা নিয়মও অনুশীলনের মাধ্যমে সাবলীল ভাষা ব্যবহারে সহায়তা করতে পারে। রবার্ট ডি-কেইসার (Robert DeKeyser)-এর গবেষণায় দেখা গেছে, শেখার প্রক্রিয়ায় এমন বক্ররেখা (learning curve) দেখা যায় যা জটিল দক্ষতা অর্জনের বৈশিষ্ট্য বহন করে। এই ধারণাটি সেই কঠোর মতবাদকে চ্যালেঞ্জ করে যা বলে শেখা জ্ঞান কখনো পারফরম্যান্স উন্নত করতে পারে না।

১০. কম্পিটিশন মডেল (Competition Model): ব্রায়ান ম্যাকউইনি (Brian MacWhinney), এলিজাবেথ বেটস (Elizabeth Bates), এবং তাঁদের সহকর্মীরা দেখান যে বিভিন্ন ভাষা ভিন্ন ভিন্ন উপায়ে অর্থ নির্দেশ করে। শিক্ষার্থীরা শব্দক্রম (word order), সমন্বয় (agreement), জীবন্ততা বা প্রাণবাচকতা (animacy), এবং উচ্চারণের জোর (stress) — এই ধরনের সংকেত বা cues-এর প্রতি মনোযোগ দেয়। দ্বিতীয় ভাষা (L2)-তে এই সংকেতগুলো পরস্পরের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে। শিক্ষার্থীদের এই সংকেতগুলোর ওজন পুনর্নির্ধারণ করতে হয় যাতে তা লক্ষ্যভাষার (target language) নিয়মের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়। এই তত্ত্ব ব্যাখ্যা করে কেন প্রথম ভাষা (L1) থেকে স্থানান্তর (transfer) ঘটে এবং কেন শেখা কঠিন হয় যখন দুই ভাষায় সংকেতের অগ্রাধিকার ভিন্ন হয়।

১১. কানেকশনিজম (Connectionism): কানেকশনিজম শেখাকে ব্যাখ্যা করে এমন এক প্রক্রিয়া হিসেবে যেখানে ইনপুটের পুনরাবৃত্তি (frequency) ও সহাবস্থান (co-occurrence) থেকে সম্পর্ক তৈরি হয়। এখানে কোনো বিশেষ ভাষা-মডিউল নেই। শিক্ষার্থীরা বিতরণ (distribution) পর্যবেক্ষণ করে প্যাটার্ন বা নিয়ম আবিষ্কার করে। যেসব গঠন বা শব্দ বেশি ব্যবহৃত হয়, সেগুলো আগে শেখা হয় এবং বেশি সাবলীলভাবে ব্যবহৃত হয়। এই দৃষ্টিভঙ্গি ধীরগতির শেখা, বৈচিত্র্য, এবং ব্যবহারের প্রতি সংবেদনশীলতাকে ব্যাখ্যা করে।

১২. প্রসেসেবিলিটি থিওরি (Processability Theory): ম্যানফ্রেড পিয়েনেমান (Manfred Pienemann) প্রস্তাব করেন যে শিক্ষার্থীরা কেবল সেই ভাষাগত গঠনই উৎপাদন করতে পারে যা তাদের প্রক্রিয়াজাতকরণ ব্যবস্থা (processing system) সামলাতে সক্ষম। বিকাশ একটি নির্দিষ্ট ক্রম অনুসরণ করে, যা বাস্তব সময়ের (real-time) বাক্যগঠন (syntax) ও রূপবিজ্ঞান (morphology)-এর সঙ্গে সম্পর্কিত। উদাহরণস্বরূপ, প্রশ্ন তৈরি (question formation) ও সমন্বয় চিহ্নায়ন (agreement marking) ধাপে ধাপে বিকশিত হয়। শিক্ষাদান সবচেয়ে কার্যকর হয় যখন তা শিক্ষার্থীর পরবর্তী “প্রসেসেবল” স্তরকে লক্ষ্য করে পরিচালিত হয়।

১৩. ইনপুট প্রসেসিং (Input Processing): বিল ভ্যানপ্যাটেন (Bill VanPatten) যুক্তি দেন যে শিক্ষার্থীরা ইনপুট প্রক্রিয়াকরণের সময় প্রথমে অর্থের (meaning) প্রতি মনোযোগ দেয়, রূপের (form) প্রতি নয়। এর ফলে রূপবিজ্ঞানের (morphology) দিকটি অনুধাবন বিলম্বিত হতে পারে। তিনি কিছু কৌশল প্রস্তাব করেন যা নির্দেশ করে শিক্ষার্থীরা কীভাবে ইনপুট প্রক্রিয়া করে। শিক্ষাদান এমনভাবে পরিকল্পিত হওয়া উচিত যাতে গুরুত্বপূর্ণ রূপগুলো অর্থ বহন করে এবং বোঝার সময় সহজে লক্ষ্য করা যায়।

১৪. ঘোষণামূলক/প্রক্রিয়াগত মডেল (Declarative/Procedural Model): মাইকেল টি. উলম্যান (Michael T. Ullman) ভাষাকে দুটি স্মৃতিতন্ত্রের (memory systems) সঙ্গে যুক্ত করেন। ঘোষণামূলক স্মৃতি (Declarative Memory) তথ্য ও অনিয়মিত শব্দরূপ (যেমন: irregular verbs) সংরক্ষণ করে। প্রক্রিয়াগত স্মৃতি (Procedural Memory) নিয়ম ও ক্রম (যেমন: syntax) সংরক্ষণ করে। প্রাপ্তবয়স্কদের দ্বিতীয় ভাষা শেখায় প্রাথমিক পর্যায়ে ঘোষণামূলক স্মৃতির ভূমিকা বড় হতে পারে। তবে অনুশীলনের মাধ্যমে প্রক্রিয়াগত স্মৃতি সক্রিয় হয়, যা সাবলীল ব্যাকরণ বিকাশে সহায়তা করে।

আরো পড়ুনঃ Group Work Vs. Whole Class Activities and Teaching Large Classes

১৫. অন্তর্নিহিত ও প্রকাশ্য জ্ঞান; ইন্টারফেস দৃষ্টিভঙ্গি (Implicit and Explicit Knowledge; Interface Views): SLA অন্তর্নিহিত জ্ঞান (implicit knowledge)—যা অব্যক্ত, দ্রুত, ও ব্যাখ্যা করা কঠিন—এবং প্রকাশ্য জ্ঞান (explicit knowledge)—যা সচেতন নিয়মভিত্তিক—এর মধ্যে পার্থক্য করে। এই বিষয়ে তিনটি মতবাদ বিদ্যমান। নো-ইন্টারফেস দৃষ্টিভঙ্গি (no-interface view) বলে যে প্রকাশ্য নিয়ম কখনো অন্তর্নিহিত জ্ঞানে রূপান্তরিত হয় না। স্ট্রং ইন্টারফেস দৃষ্টিভঙ্গি (strong interface view) অনুযায়ী, অনুশীলনের মাধ্যমে প্রকাশ্য জ্ঞান অন্তর্নিহিত জ্ঞান হয়ে উঠতে পারে। উইক ইন্টারফেস দৃষ্টিভঙ্গি (weak interface view) বলে যে প্রকাশ্য জ্ঞান মনোযোগ ও অনুশীলনকে পরিচালনা করতে পারে, যা অন্তর্নিহিত জ্ঞানের বিকাশে সহায়তা করে। সাম্প্রতিক গবেষণা প্রস্তাব করে যে এই দুই ধরনের জ্ঞানের মধ্যে একটি গতিশীল সম্পর্ক রয়েছে, যা নির্ভর করে কাজের ধরন (task) ও প্রেক্ষাপটের (context) ওপর।

১৬. মৌলিক পার্থক্য ও সংশ্লিষ্ট অনুমানসমূহ (Fundamental Difference and Related Hypotheses): ফান্ডামেন্টাল ডিফারেন্স হাইপোথিসিস (Fundamental Difference Hypothesis)—যা ব্লে-ভ্রোমান (Bley-Vroman) প্রস্তাব করেন—বলে যে প্রাপ্তবয়স্কদের দ্বিতীয় ভাষা শেখা মূলত সাধারণ জ্ঞানীয় ক্ষমতার (general cognition) ওপর নির্ভর করে, সম্পূর্ণ ইউনিভার্সাল গ্রামার (UG) অ্যাক্সেসের ওপর নয়। অন্যান্য প্রস্তাবগুলো নির্দিষ্ট সমস্যাগুলিকে ব্যাখ্যা করে। ওয়াইল্ড গ্রামার মতবাদ (Wild Grammar view) বলে প্রাথমিক interlanguage বা শিক্ষার্থী-ভাষা নিয়মহীন হতে পারে। মিসিং সারফেস ইনফ্লেকশন হাইপোথিসিস (Missing Surface Inflection Hypothesis) মতে, শিক্ষার্থীরা ব্যাকরণিক বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে সচেতন হলেও সেগুলোকে সঠিক রূপের সঙ্গে যুক্ত করতে অসুবিধা হয়। রিপ্রেজেন্টেশনাল ডেফিসিট ও ইন্টারপ্রিটেবিলিটি হাইপোথিসিস (Representational Deficit and Interpretability Hypotheses) দাবি করে যে কিছু অনুবোধনযোগ্য নয় এমন বৈশিষ্ট্য (uninterpretable features) যা প্রথম ভাষায় অনুপস্থিত, তা সম্পূর্ণভাবে অর্জন করা কঠিন বা অসম্ভব। ফিচার রি-অ্যাসেম্বলি হাইপোথিসিস (Feature Reassembly Hypothesis), যা লারডিয়েরে (Lardiere) প্রস্তাব করেন, বলে যে সফল শেখা নির্ভর করে L1-এর বৈশিষ্ট্যগুলো পুনর্গঠন ও পুনঃসংযোজন করে L2-এর প্রয়োজন অনুযায়ী গঠন করতে পারার ওপর। ইন্টারফেস হাইপোথিসিস (Interface Hypothesis) ব্যাখ্যা করে কেন সিনট্যাক্স (syntax) ও প্র্যাগম্যাটিকস (pragmatics)-এর সংযোগস্থলে সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হয়। বটলনেক হাইপোথিসিস (Bottleneck Hypothesis), যা স্লাবাকোভা (Slabakova) প্রস্তাব করেন, চিহ্নিত করে যে ব্যাকরণিক বিকাশে প্রধান সীমাবদ্ধতা আসে কার্যকরী রূপবিজ্ঞান (functional morphology) থেকে।

১৭. সমাজসাংস্কৃতিক তত্ত্ব (Sociocultural Theory): লেভ ভিগোৎস্কির (Lev Vygotsky) চিন্তার ওপর ভিত্তি করে সমাজসাংস্কৃতিক তত্ত্ব শেখাকে সামাজিকভাবে মধ্যস্থতাপূর্ণ (socially mediated) একটি প্রক্রিয়া হিসেবে দেখে। জ্ঞান বৃদ্ধি পায় নির্দেশিত অংশগ্রহণের (guided participation) মাধ্যমে, যা ঘটে Zone of Proximal Development-এর মধ্যে। ভাষা শেখা কোনো একক বা সর্বজনীন রূপে ঘটে না। এটি নির্ভর করে ইতিহাস, সংস্কৃতি, পরিচয় ও ক্ষমতার সম্পর্কের ওপর। সহযোগিতা (collaboration), সহায়ক কাঠামো বা scaffolding, এবং বিভিন্ন শিক্ষণ-উপকরণের (tool use, যেমন প্রথম ভাষা L1) ব্যবহার শেখার প্রক্রিয়াকে সহায়তা করে। শ্রেণিকক্ষের আলোচনা ও যৌথভাবে সমস্যা সমাধান (joint problem-solving) শেখার মূল প্রক্রিয়া হিসেবে কাজ করে।

১৮. জটিল গতিশীল ব্যবস্থা তত্ত্ব (Complex Dynamic Systems Theory): লার্সেন-ফ্রিম্যান (Larsen-Freeman) ও অন্যান্য গবেষকেরা এই তত্ত্বটি বিকাশ করেন। এটি ভাষা বিকাশকে একটি অরৈখিক (nonlinear) ও পরিবর্তনশীল (variable) প্রক্রিয়া হিসেবে ব্যাখ্যা করে। ছোট ছোট পরিবর্তন বড় ধরনের স্থিতিশীল অবস্থার (stable states) সৃষ্টি করতে পারে। দীর্ঘমেয়াদি কেস স্টাডি (longitudinal case studies) ব্যবহার করে গবেষকেরা সময়ের সঙ্গে ভাষা বিকাশের গতিপ্রকৃতি পর্যবেক্ষণ করেন। এখানে মনোযোগ দেওয়া হয় প্যাটার্ন, পরিবর্তনশীলতা (variability), এবং স্ব-সংগঠন (self-organization)-এর ওপর। সমালোচকেরা বলেন এই তত্ত্বে আনুষ্ঠানিক মডেলিং কম এবং পরীক্ষার জটিলতা বেশি। তবুও এটি শেখার বাস্তব জীবনের জটিলতাকে উজ্জ্বলভাবে তুলে ধরে।

১৯. ব্যবহারভিত্তিক মডেল (Usage-Based Model): মাইকেল টোমাসেলো (Michael Tomasello) ও জোয়ান বাইবি (Joan Bybee)-এর সঙ্গে যুক্ত এই ব্যবহারভিত্তিক তত্ত্বটি বলে ব্যাকরণ (grammar) ব্যবহার থেকেই উদ্ভূত হয়। শিক্ষার্থীরা ঘন ঘন ব্যবহৃত ক্রম (frequent sequences) ও অর্থপূর্ণ বাক্যাংশ (meaningful chunks) থেকে গঠন তৈরি করে। সাধারণ জ্ঞানীয় প্রক্রিয়া—যেমন প্যাটার্ন খোঁজা, তুলনা (analogy), ও শ্রেণিবিন্যাস (categorization)—বিকাশকে চালিত করে। সমৃদ্ধ ইনপুট (rich input), প্রস্তুত বাক্যাংশ (formulaic language), এবং অর্থপূর্ণ পুনরাবৃত্ত ব্যবহার (repeated meaningful use) ভাষা বিকাশে সহায়তা করে।

২০. দ্বিতীয় ভাষা শিক্ষায় সংকটকাল (Critical Period in SLA): এরিক লেনেনবার্গ (Eric Lenneberg) প্রথম ভাষার (L1) জন্য একটি সংকটকাল (critical period) ধারণা দেন। দ্বিতীয় ভাষা শেখায় বয়সজনিত প্রভাব (age effects) বিশেষ করে উচ্চারণ (pronunciation) ও কিছু রূপবাক্যতাত্ত্বিক (morphosyntactic) দিকের ওপর প্রবল। যারা অল্প বয়সে শেখা শুরু করে তারা প্রায়-স্থানীয় (near-native) উচ্চারণে দক্ষ হয়। প্রাপ্তবয়স্করাও উচ্চ দক্ষতা অর্জন করতে পারে, বিশেষ করে শব্দভান্ডার (lexicon) ও পাঠে (reading), তবে সম্পূর্ণ স্থানীয় উচ্চারণ খুবই বিরল। প্রেরণা (motivation), ইনপুটের মান (input quality), এবং নিয়মিত ভাষা ব্যবহার (continued use) শেখার ফলাফল নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। প্রমাণ বলে শেখার নির্দিষ্ট কোনো কঠোর সীমা নেই, বরং সংবেদনশীল সময়কাল (sensitive period) বিদ্যমান।

২১. আবেগীয় উপাদান (Affective Factors): আবেগ শেখার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। উদ্বেগ (anxiety), প্রেরণা (motivation), এবং আত্মবিশ্বাস (self-confidence) মনোযোগ ও অধ্যবসায়কে প্রভাবিত করে। ক্রাশেনের (Krashen) Affective Filter ধারণাটি এই বিষয়টি প্রকাশ করে। সহায়ক শ্রেণিকক্ষ (supportive classroom), অর্থবহ লক্ষ্য (meaningful goals), এবং সফলতার অভিজ্ঞতা শিক্ষার্থীদের আবেগীয় প্রতিবন্ধকতা বা filter কমায়। এর ফলে ইনপুটের প্রক্রিয়াকরণ উন্নত হয় এবং কার্যকর যোগাযোগের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।

২২. শিক্ষণগত প্রয়োগ (Teaching Implications): কার্যকর ভাষা শিক্ষাদান ইনপুট, ইন্টারঅ্যাকশন, এবং আউটপুটের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখে। এটি অর্থের (meaning) ব্যাঘাত না ঘটিয়ে রূপের (form) দিকে মনোযোগ নির্দেশ করে। শিক্ষণ-লক্ষ্যগুলো এমনভাবে সাজানো হয় যাতে তা শিক্ষার্থীর প্রসেসেবিলিটি (processability)-এর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়। ইনপুট এমনভাবে তৈরি করা হয় যাতে গুরুত্বপূর্ণ রূপগুলো অর্থবহ হয় ও সহজে নজরে আসে। প্রতিক্রিয়া (feedback) এমনভাবে প্রদান করা হয় যাতে শিক্ষার্থী লক্ষ্য করতে পারে ও ভুল সংশোধন করতে পারে। ধাপে ধাপে অনুশীলনের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়তা (automaticity) তৈরি হয়। টাস্ক ও সহযোগিতামূলক কার্যক্রম শেখার প্রকৃত প্রয়োজন সৃষ্টি করে। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীর আবেগ ও পরিচয়কে (identity) সমর্থন দেওয়া হয়, যা ধারাবাহিক প্রচেষ্টা বজায় রাখে।

আরো পড়ুনঃ Approaches and Methods of English Language Teaching 

সমন্বয় ও উপসংহার (Synthesis and Conclusion): দ্বিতীয় ভাষা অর্জন (SLA) একটি জটিল প্রক্রিয়া। আচরণবাদ (Behaviorism) ব্যাখ্যা করে অনুশীলন ও প্রতিক্রিয়া। অন্তর্জাতবাদ বা ইউনিভার্সাল গ্রামার (Innatism/UG) ব্যাখ্যা করে ভাষার সীমাবদ্ধতা ও সার্বজনীনতা। ক্রাশেন (Krashen) ইনপুট ও আবেগকে কেন্দ্র করে। ইন্টারঅ্যাকশন তত্ত্ব দেখায় আলোচনার শক্তি। আউটপুট ও নোটিসিং তত্ত্ব উৎপাদন ও মনোযোগের সংযোগ স্থাপন করে। দক্ষতা, প্রতিযোগিতা, কানেকশনিজম, প্রসেসেবিলিটি, ইনপুট প্রসেসিং, ও স্মৃতি-ভিত্তিক মডেল শেখার প্রক্রিয়া ও ক্রম ব্যাখ্যা করে। সমাজসাংস্কৃতিক, ব্যবহারভিত্তিক, ও জটিল গতিশীল ব্যবস্থা তত্ত্ব দেখায় কীভাবে প্রেক্ষাপট, অভিজ্ঞতা, ও সময় শেখাকে গঠন করে। কোনো একক দৃষ্টিভঙ্গি যথেষ্ট নয়। সবগুলো মিলেই গবেষণা ও শিক্ষাদানের দিকনির্দেশনা দেয়। সর্বোত্তম শিক্ষণ-পদ্ধতি হলো এমন, যা একাধিক তত্ত্ব থেকে অনুপ্রাণিত। এটি শিক্ষার্থীদের দেয় সমৃদ্ধ ইনপুট, বাস্তব যোগাযোগ, উদ্দেশ্যপূর্ণ আউটপুট, কেন্দ্রীভূত মনোযোগ, এবং স্থায়ী সহায়তা।

Share your love
Riya Akter
Riya Akter

Hey, This is Riya Akter Setu, B.A (Hons) & M.A in English from National University.

Articles: 747