History of Language Teaching Methodology
অধ্যায় ৫: ভাষা শিক্ষণ পদ্ধতির ইতিহাস
১. ভূমিকা: ভাষা শিক্ষণের ইতিহাস আসলে একটি ক্রমাগত পরিবর্তনের গল্প—যেখানে নিয়ম-কানুনের চর্চা থেকে বাস্তব ব্যবহারের দিকে অগ্রগতি ঘটেছে। এটি একইসাথে দেখায় কীভাবে ভাষাতত্ত্ব ও মনোবিজ্ঞানের ধারণাগুলো শ্রেণিকক্ষের শিক্ষণকে প্রভাবিত করেছে। বিভিন্ন পদ্ধতি জন্ম নিয়েছে, ছড়িয়ে পড়েছে, এবং সময়ের সাথে সাথে সংশোধিত হয়েছে। শিক্ষকরা যেগুলো কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে সেগুলো গ্রহণ করেছেন, আর যেগুলো ফলপ্রসূ হয়নি সেগুলো পরিত্যাগ করেছেন। আজকের ভাষা শিক্ষণ পদ্ধতি এই দীর্ঘ যাত্রার বিভিন্ন ধাপের এক সমন্বিত রূপ।
২. উনিশ শতকের সূত্র ও Grammar–Translation Method: উনিশ শতকে স্কুলগুলোতে বিদেশি ভাষা, যেমন লাতিন ও গ্রিক, শিক্ষা দেওয়া হতো। এই ঐতিহ্য থেকেই Grammar–Translation Method-এর উদ্ভব। এতে গুরুত্ব দেওয়া হতো ব্যাকরণের নিয়ম, শব্দভান্ডারের তালিকা এবং পাঠ অনুবাদের ওপর। এর মূল লক্ষ্য ছিল সাহিত্য পাঠ করা, কথা বলা নয়। পাঠ্যক্রমে মাতৃভাষা ব্যবহৃত হতো, এবং নির্ভুলতা ছিল যোগাযোগের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এই পদ্ধতি ইউরোপসহ বিশ্বের বহু অঞ্চলে প্রভাব বিস্তার করে। এটি পরীক্ষার প্রস্তুতিতে সহায়ক ছিল, কিন্তু বাস্তব যোগাযোগের জন্য শিক্ষার্থীদের তৈরি করতে ব্যর্থ হয়।
আরো পড়ুনঃ Methodology: Approach, Design, and Procedure
৩. সংস্কার আন্দোলন ও প্রাথমিক ধ্বনিতত্ত্ব: উনিশ শতকের শেষ দিকে ভাষা শিক্ষায় সংস্কারের ডাক ওঠে। The Reform Movement জোর দেয় মৌখিক ভাষা ও সঠিক উচ্চারণের ওপর। ইংল্যান্ডের Henry Sweet এবং জার্মানির Wilhelm Viëtor ছিলেন এই আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। ধ্বনিতত্ত্ববিদেরা International Phonetic Alphabet (IPA) বা আন্তর্জাতিক ধ্বনিতালিকার প্রচার করেন। তাঁরা শিক্ষকদের ক্লাসে লক্ষ্যভাষা ব্যবহারের পরামর্শ দেন এবং ধ্বনিতত্ত্ব ও কথোপকথনে প্রশিক্ষণের পক্ষে কথা বলেন। এই আন্দোলন Grammar–Translation Method-এর একঘেয়ে অনুশীলনের বিরোধিতা করে এবং নতুন শিক্ষণ-পদ্ধতির দ্বার উন্মুক্ত করে।
৪. The Direct Method: ১৮৯০ থেকে ১৯১০ সালের মধ্যে Direct Method সংস্কার আন্দোলনের ধারনা থেকে বিকশিত হয়। Berlitz School-এর মতো প্রতিষ্ঠানগুলো এটিকে জনপ্রিয় করে তোলে। এই পদ্ধতিতে শিক্ষকরা কেবল লক্ষ্যভাষা ব্যবহার করতেন। দৈনন্দিন জীবনের শব্দ ও বাক্য শেখানো হতো, এবং ব্যাকরণ শেখানো হতো inductive বা ব্যবহারভিত্তিক উপায়ে। শ্রবণ ও বক্তৃতা ছিল শিক্ষণের প্রথম ধাপ; পাঠ ও লিখন পরবর্তী পর্যায়ে আসতো। এই পদ্ধতি শিক্ষার্থীদের সাবলীলতা তৈরি করলেও, এটি দক্ষ শিক্ষক ও ছোট শ্রেণির প্রয়োজন করত। তাছাড়া, উচ্চস্তরের পাঠ ও ব্যাকরণ শেখানোর জন্য এতে সুসংগঠিত পরিকল্পনা অনুপস্থিত ছিল।
৫. Structural Linguistics, Behaviorism, এবং Audio-Lingual Method: ১৯৪০ ও ১৯৫০-এর দশকে ভাষাতত্ত্বে নতুন বৈজ্ঞানিক মনোভাব গড়ে ওঠে। Structural Linguistics ভাষাকে একটি সংগঠিত গঠন বা প্যাটার্ন হিসেবে ব্যাখ্যা করে, আর Behaviorist Psychology শেখাকে অভ্যাস গঠনের ফল বলে মনে করে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়, যুক্তরাষ্ট্র দ্রুত ভাষা শিক্ষণের জন্য Army Specialized Training Program চালু করে। এই প্রেক্ষাপটে জন্ম নেয় Audio-Lingual Method (ALM)। Charles C. Fries এবং Robert Lado এই পদ্ধতির কাঠামো তৈরি করেন, আর B. F. Skinner-এর আচরণবাদী তত্ত্ব এর অনুশীলনধর্মী শিক্ষাকে সমর্থন করে। শিক্ষার্থীরা সংলাপ মুখস্থ করত এবং substitution ও transformation drill অনুশীলন করত। Pronunciation lab ও tape recorder-এর ব্যবহার সাধারণ ছিল। এই পদ্ধতি শিক্ষার্থীদের দ্রুত ব্যাকরণগত নির্ভুলতা এনে দিলেও, তারা সচরাচর স্বতঃস্ফূর্ত বা সৃজনশীলভাবে কথা বলতে পারত না।
৬. Chomskyan চ্যালেঞ্জ এবং ALM-এর পতন: ১৯৫৭ ও ১৯৫৯ সালে Noam Chomsky ভাষা শিক্ষণের ধারণায় বিপ্লব ঘটান। তিনি দেখান, ভাষা মানুষের মস্তিষ্কের একটি সৃজনশীল ও নিয়মনির্ভর প্রক্রিয়া। তিনি যুক্তি দেন যে Behaviorism দিয়ে কখনোই বোঝানো সম্ভব নয় কীভাবে শিক্ষার্থীরা আগে না শোনা বাক্য তৈরি করে। তাঁর Skinner-এর তত্ত্বের সমালোচনা Audio-Lingual Method-এর ভিত্তিকে নড়বড়ে করে দেয়। ১৯৬০-এর দশকের শেষদিকে শিক্ষকরা বুঝতে পারেন যে drill ও repetition করেও শিক্ষার্থীরা বাস্তব জীবনে কার্যকরভাবে যোগাযোগ করতে পারছে না। ফলে ভাষা শিক্ষণক্ষেত্রে আরও গভীর ও অর্থপূর্ণ শিক্ষণপদ্ধতির সন্ধান শুরু হয়।
৭. Humanistic Methods এবং শিক্ষার্থীর অভ্যন্তরীণ জগৎ: ১৯৭০-এর দশকে ভাষা শিক্ষণে এমন পদ্ধতির উদ্ভব হয় যা শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক। Caleb Gattegno-এর Silent Way শিক্ষার্থীর আবিষ্কারমূলক শিক্ষণ ও স্বনির্ভরতার ওপর জোর দেয়। Georgi Lozanov-এর Suggestopedia সংগীত ও বিশ্রামের মাধ্যমে উদ্বেগ কমিয়ে শেখার পরিবেশ তৈরি করে। Charles Curran-এর Community Language Learning কাউন্সেলিংয়ের নীতি ব্যবহার করে দলীয় শিক্ষণকে উৎসাহিত করে। James Asher-এর Total Physical Response (TPR) ভাষা শেখাকে কাজ ও শারীরিক ক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত করে। এসব পদ্ধতি আবেগ, প্রেরণা ও আত্মবিশ্বাসের গুরুত্ব তুলে ধরে। এগুলো শিক্ষক সমাজকে মনে করিয়ে দেয়—শিক্ষণ শুধু বুদ্ধির বিষয় নয়, এটি অনুভূতির সাথেও গভীরভাবে যুক্ত।
৮. The Communicative Turn: ১৯৭০-এর দশকের শুরু থেকে ভাষা শিক্ষায় এক Communicative Revolution শুরু হয়। Dell Hymes উপস্থাপন করেন Communicative Competence ধারণা, যেখানে ভাষা জানার অর্থ হলো সেটি সঠিক প্রেক্ষাপটে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারা। ইউরোপে Council of Europe ভাষা শিক্ষার পাঠ্যক্রম সংস্কারে নেতৃত্ব দেয়। D. A. Wilkins প্রস্তাব করেন Notional-Functional Syllabus, এবং H. G. Widdowson ভাষাকে Discourse and Purpose-এর সঙ্গে যুক্ত করেন। ১৯৮০ সালে Canale and Swain ভাষা দক্ষতার চারটি দিক—Grammatical, Sociolinguistic, Strategic, এবং পরে Discourse Competence—সংজ্ঞায়িত করেন। Communicative Language Teaching (CLT) শ্রেণিকক্ষে পারস্পরিক যোগাযোগ, কার্যনির্ভর শিক্ষণ ও অর্থবোধক অনুশীলনের ওপর জোর দেয়। এতে সাবলীলতা ও নির্ভুলতা একসাথে গুরুত্ব পায়। শিক্ষক হয়ে ওঠেন এক facilitator বা দিকনির্দেশক, এবং শিক্ষণসামগ্রী হয় বাস্তবজীবনভিত্তিক ও অর্থপূর্ণ।
৯. The Natural Approach এবং Input-Focused Teaching: ১৯৮০-এর দশকে Stephen Krashen ও Tracy Terrell প্রবর্তন করেন Natural Approach। এই পদ্ধতি জোর দেয় সহজবোধ্য input, কম উদ্বেগপূর্ণ পরিবেশ, এবং বিলম্বিত বক্তৃতার ওপর। Krashen ভাষা শেখাকে acquisition (অবচেতনভাবে শেখা) ও learning (সচেতনভাবে শেখা)-এ ভাগ করেন। তিনি উপস্থাপন করেন “i+1” সূত্র, যার অর্থ শিক্ষার্থীদের শেখার ইনপুট হবে একটু চ্যালেঞ্জিং কিন্তু বোধগম্য। এই ধারণা শ্রবণ ও পাঠ কার্যক্রমকে গুরুত্ব দেয় এবং উৎসাহব্যঞ্জক শ্রেণিকক্ষ পরিবেশকে প্রাধান্য দেয়।
আরো পড়ুনঃ Approaches and Methods of English Language Teaching
১০. Task-Based Language Teaching এবং পাঠ্যক্রম সংস্কার: গবেষণা প্রমাণ করে যে বাস্তব কাজের (tasks) মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা আরও ভালোভাবে যোগাযোগ করতে শেখে এবং ভাষার গঠন আয়ত্ত করে। ১৯৮০-এর দশকের শুরুতে ভারতের Bangalore Project, যার নেতৃত্ব দেন N. S. Prabhu, এই ধারণার একটি সফল উদাহরণ। পরবর্তীতে Rod Ellis, Peter Skehan, এবং Jane Willis Task-Based Language Teaching (TBLT) পদ্ধতিকে আরও পরিশীলিত করেন। এখানে শিক্ষণ, পরিকল্পনা, এবং মূল্যায়নের মূল একক হিসেবে ব্যবহৃত হয় tasks। অর্থনির্ভর কার্যক্রমের সময় বা পরে শিক্ষার্থীরা ব্যাকরণের দিকে মনোযোগ দেয়। TBLT পুরনো PPP (Presentation, Practice, Production) মডেলের একটি কার্যকর বিকল্প হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়।
১১. কনটেন্ট-ভিত্তিক নির্দেশনা এবং ইমার্শন: ১৯৬০-এর দশক থেকে কানাডিয়ান ইমার্শন প্রোগ্রামগুলো দ্বিতীয় ভাষার মাধ্যমে বিদ্যালয়ের বিষয়সমূহ শেখাতে শুরু করে। এই মডেল থেকেই Content-Based Instruction (CBI) এবং পরবর্তীতে CLIL (Content and Language Integrated Learning) পদ্ধতির উদ্ভব হয়। ১৯৯০-এর দশকে David Marsh ইউরোপে CLIL ধারণাটিকে জনপ্রিয় করেন। এই পদ্ধতিতে ভাষা শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হয় কনটেন্ট বা বিষয়বস্তু। শিক্ষার্থীরা একসাথে বিষয়জ্ঞান ও ভাষাজ্ঞান অর্জন করে। এই পদ্ধতি শিক্ষার্থীদের শেখার অনুপ্রেরণা বাড়ায় এবং তাদেরকে সমৃদ্ধ input ও output প্রদান করে।
১২. লেক্সিকাল অ্যাপ্রোচ এবং কর্পাস-ভিত্তিক শিক্ষণ: ১৯৯০-এর দশকে Michael Lewis ভাষা শিক্ষায় Lexical Approach বা শব্দভিত্তিক পদ্ধতির পক্ষে যুক্তি দেন। তিনি ভাষার chunks, collocations, এবং formulaic sequences বা নির্দিষ্ট বাক্যাংশের গুরুত্ব তুলে ধরেন। Corpus Linguistics এই ধারণাকে সমর্থন করে এবং শব্দ ও বাক্যাংশ ব্যবহারের ঘনত্বসংক্রান্ত তথ্য প্রদান করে। Tim Johns concordance ব্যবহার করে data-driven learning বা তথ্যনির্ভর শিক্ষণকে উৎসাহিত করেন। শিক্ষকরা বড় কর্পাস থেকে বাস্তব উদাহরণ শিক্ষার্থীদের সামনে উপস্থাপন করতে শুরু করেন। শিক্ষার্থীরা ভাষার ধরণ ও প্রচলিত বাক্যরীতি লক্ষ্য করতে শেখে। এর ফলে পাঠ্যসামগ্রী আরও বাস্তব ও ব্যবহারভিত্তিক হয়ে ওঠে।
১৩. সমাজসাংস্কৃতিক তত্ত্ব এবং পারস্পরিক ক্রিয়া: ভাষা শিক্ষায় Lev Vygotsky-এর ধারণা গভীর প্রভাব ফেলে। তাঁর মতে, শেখা একটি সামাজিক প্রক্রিয়া যা tools, talk, এবং community বা সামাজিক পরিবেশের মাধ্যমে ঘটে। তাঁর Zone of Proximal Development (ZPD) তত্ত্ব শিক্ষার্থীদের সহায়ক নির্দেশনা (scaffolding) দিতে সহায়তা করে। জোড়াভিত্তিক কাজ (pair work) ও দলীয় কাজ (group work) শিক্ষার্থীদের যৌথভাবে সমস্যা সমাধানের সুযোগ দেয়। অর্থের আলোচনাপূর্ণ বিনিময় (negotiation of meaning) এবং প্রতিক্রিয়া (feedback) শেখাকে আরও গভীর করে। শ্রেণিকক্ষের ভূমিকা পরিবর্তিত হয়ে সহযোগিতা ও নির্দেশিত অংশগ্রহণের ভিত্তিতে গড়ে ওঠে।
১৪. প্রোসেসএবিলিটি, প্রোসেসিং, এবং কগনিটিভ স্কিল লার্নিং: ১৯৯০-এর দশকে Manfred Pienemann প্রস্তাব করেন Processability Theory, যা ভবিষ্যদ্বাণী করে ভাষা শেখার ক্রমবিকাশ নির্ভর করে শিক্ষার্থীর মস্তিষ্ক কতটুকু প্রক্রিয়া (parser) করতে সক্ষম তার ওপর। Bill VanPatten ভাষা শিক্ষায় input processing নিয়ে গবেষণা করেন এবং দেখান যে অনেক সময় অর্থ বোঝার প্রক্রিয়া ব্যাকরণের প্রতি মনোযোগকে বাধা দেয়। John R. Anderson ও Robert DeKeyser skill learning ও automaticity-এর ধারণা তুলে ধরেন। এই তত্ত্বগুলো ব্যাখ্যা করে কেন মনোযোগ, অনুশীলন, এবং প্রতিক্রিয়া ভাষা শিক্ষায় এত গুরুত্বপূর্ণ। এগুলো আরও বোঝায় কেন fossilization ঘটে, অর্থাৎ অনুশীলন বা ইনপুটের অভাবে শেখা স্থবির হয়ে যায়।
১৫. মানদণ্ড, মূল্যায়ন, এবং CEFR: শতাব্দীর সূচনায় Common European Framework of Reference for Languages (CEFR) ভাষা শিক্ষার জন্য একটি অভিন্ন মানদণ্ড নির্ধারণ করে। এটি A1 থেকে C2 পর্যন্ত স্তর নির্ধারণ করে এবং প্রতিটি স্তরে “can-do” বর্ণনা প্রদান করে। বিভিন্ন দেশ ও শিক্ষা ব্যবস্থার পাঠ্যক্রম ও পরীক্ষাগুলো এই কাঠামোর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়। CEFR ভাষা শিক্ষায় যোগাযোগমূলক ফলাফল, কাজভিত্তিক কার্যসম্পাদন, এবং লক্ষ্য নির্ধারণে স্বচ্ছতা জোরদার করে। পরবর্তীতে এই কাঠামো বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলের মানদণ্ড ও পরীক্ষাব্যবস্থাকেও প্রভাবিত করে।
১৬. প্রযুক্তি এবং CALL থেকে মোবাইল লার্নিং পর্যন্ত: ভাষা শিক্ষায় প্রযুক্তির প্রবেশ ঘটে ধাপে ধাপে। প্রাথমিক পর্যায়ে CALL (Computer-Assisted Language Learning) ছিল drill ও behaviorism-ভিত্তিক। পরবর্তী সময়ে Communicative CALL লেখালেখি, প্রজেক্ট, এবং email exchange-এর মাধ্যমে যোগাযোগমূলক শিক্ষাকে উৎসাহিত করে। Integrative CALL যোগ করে মাল্টিমিডিয়া ও ইন্টারনেট। ২০০০-এর দশকে MALL (Mobile-Assisted Language Learning) উদ্ভাবন আনে অ্যাপ, পডকাস্ট, এবং সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে। ডিজিটাল টুলগুলো input, interaction, feedback, এবং autonomy বাড়িয়ে দেয়। শিক্ষকরা অনলাইন ও মিশ্র (blended) শিক্ষার জন্য নতুনভাবে কার্যক্রম ডিজাইন করেন।
১৭. পোস্টমেথড দৃষ্টিভঙ্গি এবং নীতিনিষ্ঠ বৈচিত্র্যবাদ (Principled Eclecticism): ১৯৯০–২০০০ দশকে গবেষকরা স্থির পদ্ধতির ধারণা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। B. Kumaravadivelu তাঁর postmethod pedagogy-তে প্রসঙ্গভিত্তিক ও কৌশলনির্ভর শিক্ষণ পদ্ধতির পক্ষে মত দেন। এতে শিক্ষকের পেশাগত জ্ঞানকে কেন্দ্রীয় স্থানে রাখা হয়। বহু শিক্ষক গ্রহণ করেন principled eclecticism, যেখানে বিভিন্ন পদ্ধতির কার্যকর উপাদান মিলিয়ে স্থানীয় প্রয়োজন ও লক্ষ্য অনুযায়ী শিক্ষণ পরিচালনা করা হয়। এখানে লেবেল নয়, বরং প্রমাণ ও প্রসঙ্গই শিক্ষণপদ্ধতির নির্বাচন নির্ধারণ করে।
১৮. বর্তমান প্রবণতা এবং সমন্বিত প্রয়োগ: আধুনিক ভাষা শিক্ষণ হলো বিভিন্ন ধারার এক সমন্বিত রূপ। এটি মূল্য দেয় সমৃদ্ধ input, লক্ষ্যনির্ভর কাজ (tasks), form-focused কার্যক্রম, এবং ধারাবাহিক output-কে। এটি noticing ও feedback-কে উৎসাহিত করে। শিক্ষণ প্রক্রিয়ায় বিষয়বস্তু, সংস্কৃতি, এবং একাডেমিক দক্ষতা একত্রে সংযুক্ত হয়। এতে ব্যবহার করা হয় corpora এবং বাস্তব পাঠ্য। শিক্ষার্থীদের অগ্রগতি মূল্যায়ন করা হয় স্বচ্ছ মানদণ্ডের মাধ্যমে। একইসাথে, এটি আবেগ, পরিচয়, এবং সমান সুযোগকেও শ্রদ্ধা করে। ভাষা শিক্ষার ক্ষেত্রটি আজও নতুন ধারণা পরীক্ষা করছে বাস্তব শ্রেণিকক্ষ গবেষণার মাধ্যমে।
আরো পড়ুনঃ History of Language Teaching Methodology
উপসংহার: ভাষা শিক্ষণ পদ্ধতির ইতিহাস মূলত এক ধারাবাহিক অগ্রগতি—যেখানে নিয়ম থেকে ব্যবহার, শিক্ষকনির্ভর বক্তৃতা থেকে শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক অংশগ্রহণ, এবং একক পদ্ধতি থেকে নমনীয় নকশার দিকে পরিবর্তন ঘটেছে। প্রতিটি পর্যায় এই যাত্রায় নতুন অন্তর্দৃষ্টি যুক্ত করেছে। Grammar–Translation Method শিক্ষার্থীদের পাঠদক্ষতা গড়ে তুলেছিল, কিন্তু মৌখিক ভাষা শিক্ষাকে উপেক্ষা করেছিল। Direct Method সেই মৌখিক দক্ষতাকে পুনরুদ্ধার করে। Audio-Lingual Method ভাষা শিক্ষায় কাঠামোগত দৃঢ়তা এনেছিল, তবে এতে অর্থপূর্ণ যোগাযোগের অভাব ছিল। Humanistic Methods ভাষা শিক্ষায় মানুষ ও তার আবেগকে কেন্দ্রস্থলে স্থান দেয়। Communicative Language Teaching (CLT) যোগাযোগকে শিক্ষার কেন্দ্রবিন্দুতে স্থাপন করে। Task-based Learning, Content-based Instruction, এবং বাস্তব ব্যবহার শেখার প্রক্রিয়াকে করে তোলে আরও বাস্তব ও অর্থবহ। Cognitive ও Sociocultural Theories ভাষা শেখার মানসিক ও সামাজিক প্রক্রিয়াকে গভীরভাবে ব্যাখ্যা করে। অপরদিকে, Technology ভাষা শিক্ষার পরিসর ও শ্রোতাদের সংখ্যা বাড়িয়ে দেয়। আজকের কার্যকর ভাষা শিক্ষা এই সব ধারার সমন্বয়ে গঠিত। এটি input, interaction, output, form-এর প্রতি মনোযোগ এবং সচেতন দিকনির্দেশনা-এর মাধ্যমে ভাষাগত দক্ষতা তৈরি করে। আধুনিক ভাষা শিক্ষণ পদ্ধতি তাই একইসাথে ইতিহাসনির্ভর প্রজ্ঞায় সমৃদ্ধ এবং সমকালীন প্রয়োগে পরিপূর্ণ।
