Approaches and Methods of English Language Teaching
Grammar Translation Method (GTM) হলো ভাষা শিক্ষার অন্যতম প্রাচীন পদ্ধতি। এটি Classical Method থেকে এসেছে, যা সপ্তদশ ও অষ্টাদশ শতকে ল্যাটিন ও গ্রিক শেখাতে ব্যবহার করা হতো। এর মূল উদ্দেশ্য ছিল শিক্ষার্থীদের সাহিত্য পড়া ও পাঠ অনুবাদে সহায়তা করা। পরে এই পদ্ধতি আধুনিক ভাষা যেমন ইংরেজি, ফরাসি ও জার্মান শেখাতেও ব্যবহার করা হয়। এতে মূলত ব্যাকরণ, শব্দভান্ডার ও অনুবাদের ওপর জোর দেওয়া হতো, কিন্তু কথা বলা ও শোনাকে উপেক্ষা করা হতো।
Characteristics of GTM: Grammar Translation Method-এর কিছু স্পষ্ট বৈশিষ্ট্য আছে। এটি শিক্ষক-কেন্দ্রিক পদ্ধতি, যেখানে শিক্ষক ক্লাস নিয়ন্ত্রণ করেন এবং শিক্ষার্থীরা অনুসরণ করে। ক্লাস মূলত মাতৃভাষায় পরিচালিত হয়। শিক্ষার্থীরা বিস্তারিতভাবে ব্যাকরণ নিয়ম শেখে এবং সেগুলো লিখিত অনুশীলনে প্রয়োগ করে। পড়া ও লেখা কথা বলা ও শোনার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এখানে accuracy বা শুদ্ধতার মূল্য দেওয়া হয়, fluency বা সাবলীলতার চেয়ে। শব্দভান্ডার মাতৃভাষায় সরাসরি অর্থ দিয়ে শেখানো হয়। উচ্চারণ ও যোগাযোগ দক্ষতা প্রায়ই উপেক্ষিত হয়।
Techniques of GTM: এই পদ্ধতিতে কয়েকটি কৌশল ব্যবহার করা হয়। একটি হলো passage translation, যেখানে একটি লেখা লাইন বাই লাইন পড়ে অনুবাদ করা হয়। আরেকটি হলো filling the blanks, যেখানে শিক্ষার্থীরা ব্যাকরণ নিয়ম ব্যবহার করে শূন্যস্থান পূরণ করে। শব্দভান্ডার শেখানো হয় শব্দতালিকা ও মুখস্থ করার মাধ্যমে। শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের নতুন শব্দ দিয়ে বাক্য গঠন করতেও বলেন। Topic composition ব্যবহৃত হয় ছোট লেখা লিখতে। সারসংক্ষেপ লেখা ও অনুমান তৈরি করাও প্রচলিত কৌশল। এসব কৌশল মূলত পড়া, লেখা ও ব্যাকরণের ওপর জোর দেয়, বাস্তব যোগাযোগের ওপর নয়।
আরো পড়ুনঃ The Origin and History of Language
Strengths of GTM: সমালোচনা সত্ত্বেও Grammar Translation Method-এর কিছু শক্তি আছে। এটি শিক্ষার্থীদের ব্যাকরণ ও শব্দভান্ডারে শক্ত ভিত্তি গড়ে দেয়। শিক্ষার্থীরা পড়া ও লেখার দক্ষতা অর্জন করে, যা একাডেমিক পড়াশোনায় সাহায্য করে। ভিড়ভাট্টার ক্লাসে এই পদ্ধতি সহজে প্রয়োগ করা যায়, কারণ এতে অতিরিক্ত উপকরণের দরকার হয় না। এটি পরীক্ষা-নির্ভর ব্যবস্থার জন্যও কার্যকর, কারণ শিক্ষার্থীরা ব্যাকরণ ও অনুবাদ প্রশ্ন ভালোভাবে উত্তর দিতে পারে। মাতৃভাষা ব্যবহারের কারণে শিক্ষার্থীরা স্বস্তি বোধ করে এবং সহজে প্রশ্ন করতে পারে।
Weaknesses of GTM: এই পদ্ধতির দুর্বলতা অনেক। এটি শোনা ও বলাকে উপেক্ষা করে, অথচ ভাষা শেখার প্রাকৃতিক দক্ষতা হলো শোনা ও বলা। ভাষা শেখার প্রাকৃতিক ক্রম (শোনা, বলা, পড়া ও লেখা) এটি অনুসরণ করা হয় না। বরং আগে পড়া ও লেখা শেখানো হয়। শিক্ষার্থীরা নিষ্ক্রিয় হয়ে যায় এবং শিক্ষকের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। তারা লক্ষ্যভাষায় চিন্তা করতে পারে না এবং অনুবাদের ওপর নির্ভর করে। ক্লাস ভারী ব্যাকরণ অনুশীলনে নিরস ও যান্ত্রিক হয়ে পড়ে। সঠিক উচ্চারণ ও কথোপকথন দুর্বল থেকে যায়। Wilhelm Viëtor এবং অন্যান্য সংস্কারকরা GTM-কে তীব্রভাবে সমালোচনা করেন, কারণ এটি শিক্ষার্থীদের বাস্তব যোগাযোগের জন্য প্রস্তুত করতে ব্যর্থ।
Evaluation of GTM: Grammar Translation Method ভাষা শিক্ষার ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এটি শিক্ষার্থীদের বিদেশি সাহিত্য পড়া ও বোঝায় সহায়তা করেছে। এটি তাদের ব্যাকরণ ও শব্দভান্ডারের পরিষ্কার জ্ঞান দিয়েছে। কিন্তু এটি বাস্তব জীবনের যোগাযোগের জন্য প্রস্তুত করতে পারেনি। এজন্য Reform Movement ও Direct Method অনেক স্কুলে এটিকে প্রতিস্থাপন করেছে। তবুও, বাংলাদেশসহ অনেক দেশে GTM এখনো প্রচলিত, কারণ পরীক্ষায় ব্যাকরণ ও অনুবাদের ওপর জোর দেওয়া হয়। এটি একাডেমিক পড়াশোনার জন্য কার্যকর, কিন্তু যোগাযোগের জন্য যথেষ্ট নয়।
Grammar Translation Method একটি প্রাচীন ও প্রভাবশালী পদ্ধতি। এর ব্যাকরণ, শব্দভান্ডার ও অনুবাদের ওপর জোর শিক্ষার্থীদের পড়া ও লেখায় দক্ষ করে তোলে। কিন্তু এটি কথা বলা, শোনা ও প্রাকৃতিক যোগাযোগকে উপেক্ষা করে। এটি পরীক্ষা-নির্ভর ও যান্ত্রিক হয়ে ওঠে। Viëtor ও Sweet-এর মতো সংস্কারকরা এর সমালোচনা করেন এবং পরে অন্যান্য পদ্ধতি এটি প্রতিস্থাপন করে। তবুও, এটি অনেক শ্রেণিকক্ষে টিকে আছে কারণ এটি সহজ, কম খরচে সম্ভব এবং পরীক্ষাভিত্তিক ব্যবস্থার সঙ্গে মানানসই। শেষ পর্যন্ত, GTM মূল্যবান হলেও অসম্পূর্ণ। এটি আধুনিক communicative methods-এর সহায়তা ছাড়া পূর্ণাঙ্গ নয়।
ডাইরেক্ট মেথড, যাকে ন্যাচারাল মেথডও বলা হয়, উনবিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে দেখা দেয়। এটি গঠিত হয়েছিল গ্রামার ট্রান্সলেশন মেথডের প্রতিক্রিয়া হিসেবে। উইলহেম ভিয়েটর এবং ম্যাক্সিমিলিয়ান বার্লিৎজের মতো সংস্কারকরা এটিকে যোগাযোগের নতুন পদ্ধতি হিসেবে প্রচার করেন। মূল ধারণা ছিল ভাষা অনুবাদের মাধ্যমে নয়, বরং ব্যবহারিক প্রয়োগের মাধ্যমে সরাসরি শেখানো। এই পদ্ধতিতে শ্রেণিকক্ষে লক্ষ্যভাষা ব্যবহার করা হয়, এবং শিক্ষার্থীরা স্বাভাবিক প্রেক্ষাপটে সাবলীলতা অর্জন করে।
ডাইরেক্ট মেথডের মূল বৈশিষ্ট্যসমূহ: ডাইরেক্ট মেথডের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য রয়েছে। সবচেয়ে কেন্দ্রীয় হলো কেবলমাত্র লক্ষ্যভাষার ব্যবহার। মাতৃভাষা যতটা সম্ভব এড়ানো হয়। বক্তৃতাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়, যেখানে পড়া ও লেখার আগে শোনা ও বলা শেখানো হয়। গ্রামার শেখানো হয় ইনডাক্টিভ পদ্ধতিতে, যেখানে নিয়মগুলো শিক্ষার্থীরা উদাহরণ থেকে নিজেরাই আবিষ্কার করে। শব্দভান্ডার শেখানো হয় প্রেক্ষাপটে—বস্তু, ছবি বা বাস্তব পরিস্থিতির মাধ্যমে। উচ্চারণ ও সাবলীলতার উপর শুরু থেকেই জোর দেওয়া হয়। শিক্ষার্থীদেরকে সম্পূর্ণভাবে শিক্ষকের উপর নির্ভর না করে নিজেরাই ভুল সংশোধন করতে উৎসাহিত করা হয়।
ডাইরেক্ট মেথডের কৌশলসমূহ: এই পদ্ধতিতে শিক্ষকরা অনেক ইন্টারঅ্যাক্টিভ কৌশল ব্যবহার করেন। প্রশ্নোত্তর অনুশীলন খুবই সাধারণ, যেখানে শিক্ষক লক্ষ্যভাষায় প্রশ্ন করেন এবং শিক্ষার্থীরা পূর্ণ বাক্যে উত্তর দেয়। রোল-প্লে ব্যবহার করা হয় যাতে শিক্ষার্থীরা কেনাকাটা বা ভ্রমণের মতো বাস্তব পরিস্থিতির অনুশীলন করতে পারে। উচ্চস্বরে পড়া উচ্চারণ ও ছন্দে সাহায্য করে। ডিকটেশনও ব্যবহার করা হয় শোনা ও লেখার মধ্যে সম্পর্ক গড়ে তুলতে। বস্তু, অঙ্গভঙ্গি এবং ছবির মাধ্যমে প্রদর্শন নতুন শব্দ ব্যাখ্যা করতে সাহায্য করে অনুবাদ ছাড়াই। আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর জন্য প্রায়শই জোড়ায় বা দলে কথোপকথনের অনুশীলন করা হয়।
ডাইরেক্ট মেথডের লক্ষ্যসমূহ: ডাইরেক্ট মেথডের প্রধান লক্ষ্য হলো যোগাযোগ। শিক্ষার্থীদের লক্ষ্যভাষায় ভাবতে এবং স্বাভাবিকভাবে প্রতিক্রিয়া জানাতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। দৈনন্দিন শব্দভান্ডার এবং বাক্যগুলোকে ব্যবহারিক প্রয়োগের জন্য গুরুত্ব দেওয়া হয়। আরেকটি লক্ষ্য হলো বক্তৃতায় আত্মবিশ্বাস তৈরি করা, যাতে শিক্ষার্থীদের ভুলের ভয় ছাড়াই কথা বলার উৎসাহ দেওয়া হয়। নিরন্তর অনুশীলনের মাধ্যমে শ্রবণ দক্ষতাও উন্নত হয়। সময়ের সাথে সাথে শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা করা হয় সাবলীলতা, ভালো উচ্চারণ এবং দ্বিতীয় ভাষায় বাস্তব পরিস্থিতি সামলানোর দক্ষতা অর্জন করবে।
ডাইরেক্ট মেথডের সুবিধাসমূহ: এই পদ্ধতির অনেক শক্তি রয়েছে। এটি শিক্ষার্থীদের মৌখিক যোগাযোগে সাবলীল ও আত্মবিশ্বাসী করে তোলে। এটি প্রথম ভাষা অর্জনের মতো প্রাকৃতিক শেখার পরিবেশ তৈরি করে। এটি ভালো উচ্চারণ ও স্বরক্ষেপণ গড়ে তোলে। প্রেক্ষাপটে শেখা শব্দভান্ডার সহজে মনে থাকে। এক্সপোজারের মাধ্যমে এই পদ্ধতি শক্তিশালী শ্রবণ দক্ষতা গড়ে তোলে। এটি শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ বাড়ায় এবং নিষ্ক্রিয়তা কমায়। শ্রেণিকক্ষ প্রাণবন্ত ও ইন্টারঅ্যাক্টিভ হওয়ায় শিক্ষার্থীরা অনুপ্রাণিত হয়। জেসপারসেনের মতো ভাষাবিদরা এটিকে প্রশংসা করেছেন অনুবাদ থেকে দূরে সরে এসে যোগাযোগের উপর গুরুত্ব দেওয়ার জন্য।
ডাইরেক্ট মেথডের সীমাবদ্ধতাসমূহ: এই পদ্ধতির কিছু দুর্বলতাও রয়েছে। এর জন্য দক্ষ শিক্ষকের প্রয়োজন হয়, যারা লক্ষ্যভাষায় সাবলীলভাবে কথা বলতে পারেন। বড় বা পরীক্ষা-কেন্দ্রিক শ্রেণিকক্ষে এটি প্রয়োগ করা কঠিন। শিক্ষার্থীরা যখন একেবারেই মাতৃভাষা ব্যবহার করতে পারে না, তখন নতুনরা উদ্বিগ্ন বোধ করতে পারে। এটি সময়সাপেক্ষও, কারণ বাস্তব যোগাযোগ দীর্ঘ অনুশীলন দাবি করে। স্পষ্ট গ্রামার শেখানো প্রায়ই দুর্বল হয়, ফলে শিক্ষার্থীদের লেখায় যথার্থতা কম থাকতে পারে। ছবি ও বাস্তব উপকরণের মতো রিসোর্স প্রায়ই প্রয়োজন হয়, যা গ্রামীণ স্কুলগুলোতে পাওয়া নাও যেতে পারে।
সর্বোপরি, ডাইরেক্ট মেথড ভাষা শিক্ষায় একটি মোড় ঘোরানো পদ্ধতি ছিল। যোগাযোগ, প্রেক্ষাপট এবং মৌখিক দক্ষতার উপর এর গুরুত্ব গ্রামার ট্রান্সলেশন মেথড থেকে একে ভিন্ন করেছে। এর সুস্পষ্ট বৈশিষ্ট্য, ব্যবহারিক কৌশল এবং বাস্তবসম্মত লক্ষ্য ছিল। এটি সাবলীলতা, আত্মবিশ্বাস এবং প্রাকৃতিক শেখার ক্ষেত্রে অনেক সুবিধা দিয়েছে। তবে শিক্ষক প্রশিক্ষণ, বড় শ্রেণিকক্ষ এবং পরীক্ষাভিত্তিক ব্যবস্থায় এটি সীমাবদ্ধতার সম্মুখীন হয়েছিল।
অডিও-লিঙ্গুয়াল মেথড (ALM) দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্রে বিকাশ লাভ করে। এটি প্রথমে আর্মি মেথড নামে পরিচিত ছিল, কারণ এর মাধ্যমে সৈন্যদের দ্রুত বিদেশি ভাষা শেখানো হতো। পরে এটি ১৯৫০ ও ১৯৬০-এর দশকে জনপ্রিয় হয়। এই পদ্ধতি গঠিত হয়েছিল স্ট্রাকচারাল লিঙ্গুইস্টিকস এবং বিহেভিয়ারিস্ট সাইকোলজির তত্ত্বের উপর ভিত্তি করে। এর মূল ধারণা হলো ভাষা অভ্যাস গঠনের মাধ্যমে শেখা যায়। সঠিকভাবে বলা ও শোনার দক্ষতা অর্জনের জন্য পুনরাবৃত্তি, ড্রিল এবং সংশোধন ব্যবহার করা হয়।
অডিও-লিঙ্গুয়াল মেথডের লক্ষ্যসমূহ: এই পদ্ধতির প্রধান লক্ষ্য হলো শক্তিশালী মৌখিক দক্ষতা গড়ে তোলা। শিক্ষার্থীদের বাস্তব পরিস্থিতিতে দ্রুত ও সঠিকভাবে কথা বলার প্রত্যাশা করা হয়। আরেকটি লক্ষ্য হলো ভালো উচ্চারণ ও স্বরক্ষেপণ গড়ে তোলা। ALM এর উদ্দেশ্য হলো শিক্ষার্থীরা নিয়ম মুখস্থ না করে অনুশীলনের মাধ্যমে গ্রামারের ধাঁচে দক্ষ হয়ে উঠুক। এটি সঠিক ভাষার অভ্যাস তৈরি করতে চায় যাতে শিক্ষার্থীরা মাতৃভাষা থেকে অনুবাদ না করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে লক্ষ্যভাষা ব্যবহার করতে পারে।
অডিও-লিঙ্গুয়াল মেথডের নীতিমালা: এই পদ্ধতির কিছু সুস্পষ্ট নীতি রয়েছে। প্রথমত, ভাষা শেখাকে অভ্যাস গঠন হিসেবে দেখা হয়। ঘন ঘন অনুশীলন ধাঁচগুলোকে স্বয়ংক্রিয় করে তোলে। দ্বিতীয়ত, ভুল এড়াতে হবে, কারণ এগুলোকে খারাপ অভ্যাস হিসেবে ধরা হয়। তৃতীয়ত, লেখা আসার আগে বক্তৃতা শেখানো হয়, তাই প্রথমে শ্রবণ ও মৌখিক শিক্ষা দেওয়া হয়। চতুর্থত, গ্রামার শেখানো হয় ইনডাক্টিভভাবে—উদাহরণ ও অনুশীলনের মাধ্যমে, সরাসরি ব্যাখ্যার মাধ্যমে নয়। সর্বশেষে, শ্রেণিকক্ষে লক্ষ্যভাষা ব্যবহার করতে হবে, আর মাতৃভাষা যতটা সম্ভব এড়ানো উচিত।
অডিও-লিঙ্গুয়াল মেথডের কৌশলসমূহ: এই পদ্ধতিতে শিক্ষকরা অনেক কৌশল ব্যবহার করেন। একটি হলো ডায়ালগ মুখস্থ করানো, যেখানে শিক্ষার্থীরা ছোট কথোপকথন মুখস্থ করে শেখে। রিপিটিশন ড্রিল ব্যবহার করা হয় যাতে শিক্ষার্থীরা বাক্যগুলো সঠিকভাবে নকল করতে পারে। সাবস্টিটিউশন ড্রিল-এ একটি শব্দ অন্যটির সাথে প্রতিস্থাপন করা হয়, যেমন He is a teacher → He is a doctor। ট্রান্সফরমেশন ড্রিল বাক্যের রূপ পরিবর্তন করে, যেমন He is tall → Is he tall? চেইন ড্রিল শিক্ষার্থীদের পুরো শ্রেণিকক্ষ জুড়ে ধারাবাহিকভাবে প্রশ্নোত্তর করতে উৎসাহিত করে। ফিল-ইন-দ্য-ব্ল্যাঙ্ক অনুশীলনও সাধারণ, যেখানে গ্রামার ও শব্দভান্ডার প্রেক্ষাপটে যাচাই করা হয়।
অডিও-লিঙ্গুয়াল মেথডের সুবিধাসমূহ: এই পদ্ধতির বেশ কিছু সুবিধা রয়েছে। এটি মৌখিক ও শ্রবণ দক্ষতা শক্তিশালীভাবে গড়ে তোলে, যা গ্রামার ট্রান্সলেশন মেথডে উপেক্ষিত ছিল। এটি শিক্ষার্থীদের শুরু থেকেই ভালো উচ্চারণে সাহায্য করে। এর সুশৃঙ্খল ড্রিল আত্মবিশ্বাস ও যথার্থতা তৈরি করে। নতুনরা দীর্ঘ গ্রামারের নিয়ম নিয়ে চিন্তা না করে অনুশীলন করতে পারে। এই পদ্ধতি ডায়ালগের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপটের সঙ্গে পরিচয় করায়। চার্লস ফ্রাইসের মতো কিছু ভাষাবিদ একে সমর্থন করেছিলেন কারণ এটি যোগাযোগের জন্য ব্যবহারিক মৌখিক প্রশিক্ষণ দিয়েছিল।
অডিও-লিঙ্গুয়াল মেথডের অসুবিধাসমূহ: শক্তির পাশাপাশি এই পদ্ধতির অনেক দুর্বলতা রয়েছে। ড্রিল প্রায়শই শেখাকে যান্ত্রিক ও একঘেয়ে করে তোলে। শিক্ষার্থীরা ডায়ালগ মুখস্থ করতে পারে, কিন্তু ভাষা সৃজনশীলভাবে ব্যবহার করতে ব্যর্থ হয়। লেখা এবং উচ্চস্তরের গ্রামারের প্রতি সামান্য মনোযোগ দেওয়া হয়। ভুলকে ক্ষতিকর হিসেবে দেখা হয়, যা শিক্ষার্থীদের উপর চাপ সৃষ্টি করে। শব্দভান্ডার সীমিত থাকে, কারণ গুরুত্ব দেওয়া হয় বাক্যের ধাঁচে। পরে নোয়াম চমস্কি (১৯৫৯) এর বিহেভিয়ারিস্ট ভিত্তিকে সমালোচনা করেন। তিনি দাবি করেন, ভাষা শুধু অভ্যাস নয়, বরং সৃজনশীল ব্যবহারও। এর ফলে ১৯৬০-এর দশকের পর ALM-এর জনপ্রিয়তা হ্রাস পায়।
সর্বশেষে, অডিও-লিঙ্গুয়াল মেথড ভাষা শিক্ষায় একটি মাইলফলক ছিল। এটি অনুবাদ থেকে মৌখিক অনুশীলনের দিকে মনোযোগ সরিয়ে নেয় এবং উচ্চারণ, শ্রবণ ও সঠিক ধাঁচকে গুরুত্ব দেয়। এটি অভ্যাস তৈরি করতে ড্রিল ও ডায়ালগ ব্যবহার করত, যা নতুনদের জন্য ভালো কাজ করত। তবে এটি সৃজনশীলতা, অর্থ এবং উচ্চতর যোগাযোগের প্রয়োজনকে উপেক্ষা করেছে। আজ এটি পুরনো হলেও এর কিছু কৌশল এখনও কার্যকর।
সিচুয়েশনাল ল্যাঙ্গুয়েজ টিচিং (SLT), যাকে ওরাল অ্যাপ্রোচও বলা হয়, ১৯৩০ থেকে ১৯৬০ সালের মধ্যে ব্রিটেনে বিকাশ লাভ করে। এটি ডাইরেক্ট মেথড এবং গ্রামার ট্রান্সলেশন মেথডের উন্নত সংস্করণ হিসেবে তৈরি করা হয়েছিল। SLT গঠিত হয়েছিল ব্রিটিশ স্ট্রাকচারাল লিঙ্গুইস্টিকস এবং বিহেভিয়ারিস্ট সাইকোলজির উপর ভিত্তি করে। এর মূল লক্ষ্য ছিল স্পষ্ট পরিস্থিতির অনুশীলনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মৌখিক সাবলীলতা শেখানো। হ্যারল্ড পামার এবং এ. এস. হর্নবির মতো বিশিষ্ট ভাষাবিদরা এই পদ্ধতিকে রূপ দিয়েছিলেন। ১৯৮০-এর দশক পর্যন্ত SLT বহু পাঠ্যপুস্তক ও ভাষা কোর্সকে প্রভাবিত করেছিল।
আরো পড়ুনঃ Teaching The Four Language Skills
SLT-এর অ্যাপ্রোচ: SLT-এর অ্যাপ্রোচ ছিল স্ট্রাকচারাল এবং বিহেভিয়োরাল উভয়ই। ভাষাকে ধাঁচের একটি সমষ্টি হিসেবে দেখা হয়, এবং শেখা মানে এই ধাঁচগুলো আয়ত্ত করা। লেখার তুলনায় বক্তৃতাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। গ্রামার শেখানো হয় ইনডাক্টিভভাবে, যেখানে নিয়ম উদাহরণ থেকে আবিষ্কৃত হয়। পরিস্থিতি সতর্কভাবে তৈরি করা হয় যাতে শিক্ষার্থীরা অনুবাদ ছাড়াই অর্থ বুঝতে পারে। বিহেভিয়ারিজম SLT-কে প্রভাবিত করেছিল অভ্যাস গঠনের উপর গুরুত্ব দেওয়ার মাধ্যমে। শিক্ষার্থীরা পুনরাবৃত্তি ও অনুশীলন করে যতক্ষণ না ধাঁচ স্বয়ংক্রিয় হয়ে ওঠে। ভুল দ্রুত সংশোধন করা হয় খারাপ অভ্যাস এড়াতে।
SLT-এর ডিজাইন: SLT-এর ডিজাইন কেন্দ্রীভূত ছিল সিলেবাস, শব্দভান্ডার এবং গ্রামার নিয়ন্ত্রণে। সিলেবাস ছিল স্ট্রাকচারাল, যেখানে সহজ থেকে জটিল ধাঁচে অগ্রসর হওয়া হতো। শব্দভান্ডার সতর্কভাবে বেছে নেওয়া হতো ব্যবহারিকতা ও ঘন ঘন ব্যবহারের ভিত্তিতে। গ্রামার উপস্থাপন করা হতো বাক্যের ধাঁচ ও সাবস্টিটিউশন টেবিলের মাধ্যমে। পাঠের লক্ষ্য ছিল উচ্চারণ ও গ্রামারে যথার্থতা গড়ে তোলা। চারটি দক্ষতা (শোনা, বলা, পড়া এবং লেখা) শেখানো হতো, তবে মৌখিক দক্ষতাকে প্রথমে গুরুত্ব দেওয়া হতো। পাঠ্যসামগ্রীর মধ্যে ছবি ক্রম, বাস্তব বস্তু এবং বিশেষভাবে লেখা টেক্সট অন্তর্ভুক্ত ছিল প্রেক্ষাপট দেওয়ার জন্য।
SLT-এর প্রক্রিয়া: SLT শ্রেণিকক্ষগুলো একটি সুশৃঙ্খল প্রক্রিয়া অনুসরণ করত। পাঠ প্রায়শই জোর ও স্বরক্ষেপণের অনুশীলন দিয়ে শুরু হতো। এরপর আগের কাজের পুনরাবৃত্তি করা হতো। নতুন ধাঁচ উপস্থাপন করা হতো পরিস্থিতির মাধ্যমে, প্রায়ই বস্তু বা ছবির সাহায্যে। শিক্ষার্থীরা সম্মিলিত পুনরাবৃত্তি, সাবস্টিটিউশন ড্রিল এবং প্রশ্নোত্তর অনুশীলনের মাধ্যমে অভ্যাস করত। নিয়ন্ত্রিত মৌখিক অনুশীলন পড়া ও লেখার আগে করানো হতো। শিক্ষকরা সঠিক ভাষা মডেল হিসেবে ডায়ালগ ব্যবহার করতেন। ভুল সঙ্গে সঙ্গে সংশোধন করা হতো, এবং শিক্ষক অনুশীলন ঘনিষ্ঠভাবে পরিচালনা করতেন। জোড়ায় বা দলে কাজ সীমিত ছিল, তবে মাঝে মাঝে ব্যবহার করা হতো।
SLT-এর শক্তি: SLT-এর কিছু স্পষ্ট শক্তি ছিল। এটি মৌখিক অনুশীলনকে অগ্রাধিকার দিয়েছিল, যা সাবলীলতা উন্নত করেছিল। পরিস্থিতির ব্যবহার ভাষা শিক্ষাকে আরও অর্থবহ করে তুলেছিল। শব্দভান্ডারের নিয়ন্ত্রণ শিক্ষার্থীদের সাধারণ শব্দের উপর মনোযোগী হতে সাহায্য করেছিল। স্ট্রাকচারাল সিলেবাস অগ্রগতিকে সুশৃঙ্খল ও ধাপে ধাপে করে তুলেছিল। আলেকজান্ডারের “ফার্স্ট থিংস ফার্স্ট” এর মতো পাঠ্যসামগ্রী দেখিয়েছিল যে SLT কতটা কার্যকর হতে পারে পাঠ্যপুস্তকে। এটি PPP মডেলকেও (Presentation, Practice, Production) প্রভাবিত করেছিল, যা আধুনিক ELT শ্রেণিকক্ষকে রূপ দিয়েছিল।
SLT-এর দুর্বলতা: SLT-ও সমালোচনার মুখোমুখি হয়েছিল। এটি ফর্ম ও যথার্থতার উপর অতিরিক্ত মনোযোগ দিয়েছিল, মুক্ত যোগাযোগকে উপেক্ষা করে। শিক্ষার্থীরা প্রায়শই ধাঁচ মুখস্থ করত, কিন্তু সৃজনশীলতা গড়ে উঠত না। লেখা এবং উচ্চতর দক্ষতার অনুশীলন কম ছিল। SLT-কে সমর্থনকারী বিহেভিয়ারিস্ট লার্নিং থিওরি পরে বাতিল হয়ে যায়। চমস্কি যুক্তি দিয়েছিলেন যে ভাষা কেবল অভ্যাস গঠনের মাধ্যমে শেখা যায় না। শিক্ষার্থীদের নতুন বাক্য তৈরি করার দক্ষতা গড়ে তুলতে হয়। এই সীমাবদ্ধতার কারণে ১৯৭০-এর দশকে SLT-এর জায়গায় কমিউনিকেটিভ ল্যাঙ্গুয়েজ টিচিং ব্যবহৃত হয়।
সারসংক্ষেপে, সিচুয়েশনাল ল্যাঙ্গুয়েজ টিচিং ELT-এর ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ ছিল। এটি স্ট্রাকচারাল লিঙ্গুইস্টিকসকে বিহেভিয়ারিস্ট সাইকোলজির সাথে মিলিয়ে অর্থপূর্ণ পরিস্থিতিতে অনুশীলনের মাধ্যমে মৌখিক যথার্থতা গড়ে তুলেছিল। এর অ্যাপ্রোচ, ডিজাইন এবং প্রক্রিয়া শিক্ষকদের জন্য একটি সুস্পষ্ট কাঠামো দিয়েছিল। যদিও পরে সৃজনশীলতা ও যোগাযোগের ঘাটতির জন্য সমালোচিত হয়েছিল, এটি আধুনিক শিক্ষণপদ্ধতিকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছিল। আজকের শ্রেণিকক্ষগুলোতেও SLT-এর অনেক বৈশিষ্ট্য যেমন সিচুয়েশনাল প্র্যাকটিস এবং PPP মডেল দৃশ্যমান।
কমিউনিকেটিভ ল্যাঙ্গুয়েজ টিচিং (CLT) ইংরেজি ভাষা শিক্ষার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অ্যাপ্রোচ। এটি ১৯৭০-এর দশকে ইউরোপে পুরোনো পদ্ধতিগুলোর (যেমন গ্রামার-ট্রান্সলেশন এবং অডিও-লিঙ্গুয়াল মেথড) প্রতিক্রিয়া হিসেবে উদ্ভূত হয়। সেই পদ্ধতিগুলো গ্রামারের নিয়ম ও যথার্থতার উপর বেশি জোর দিত, কিন্তু ভাষার বাস্তব ব্যবহারের দিকে মনোযোগ দিত না। CLT ভাষা শিক্ষার প্রধান লক্ষ্য হিসেবে যোগাযোগকে গুরুত্ব দেয়। ডেল হাইমস, উইলকিনস এবং উইডোসনের মতো ভাষাবিদরা এর নীতিমালা গড়ে তুলেছিলেন। আজ CLT বিশ্বব্যাপী ব্যাপকভাবে অনুশীলিত হচ্ছে।
যোগাযোগকে কেন্দ্রীয় লক্ষ্য হিসেবে ধরা: CLT-এর প্রথম নীতি হলো ভাষা মানে যোগাযোগ। শিক্ষার্থীরা যদি বাস্তব পরিস্থিতিতে এটি ব্যবহার করতে না পারে তবে কেবল গ্রামার জানা যথেষ্ট নয়। যথার্থতার পাশাপাশি সাবলীলতাকেও গুরুত্ব দেওয়া হয়। শিক্ষার্থীদের দৈনন্দিন কাজ যেমন দিকনির্দেশ দেওয়া, অনুরোধ করা বা সমস্যা সমাধানের মতো কাজে ভাষা ব্যবহার করতে উৎসাহিত করা হয়। অর্থ পরিষ্কার থাকলে ভুল মেনে নেওয়া হয়। এতে শিক্ষার্থীরা বেশি আত্মবিশ্বাসী হয় এবং কথা বলতে আগ্রহী হয়। এভাবে CLT যোগাযোগকে অগ্রাধিকার দেয়।
লার্নার সেন্টার্ডনেস: আরেকটি নীতি হলো শিক্ষার্থী শ্রেণিকক্ষের কেন্দ্রে থাকে। শিক্ষক কাজ করেন সহায়ক ও পথপ্রদর্শক হিসেবে। তিনি কেবল কর্তৃত্বশীল ভূমিকা পালন করেন না। শিক্ষার্থীরা জোড়ায় বা দলে কাজ করে, ধারণা শেয়ার করে এবং একসাথে কাজ সম্পন্ন করে। এতে একটি ইন্টারঅ্যাক্টিভ শেখার পরিবেশ তৈরি হয়। শিক্ষার্থীরা নিষ্ক্রিয় শ্রোতা না হয়ে সক্রিয় যোগাযোগকারী হয়ে ওঠে। শ্রেণিকক্ষ হয়ে ওঠে অর্থের প্রকৃত বিনিময়ের স্থান।
দক্ষতার একীকরণ: CLT চারটি দক্ষতার একীকরণকে উৎসাহিত করে। এই দক্ষতাগুলো হলো শোনা, বলা, পড়া এবং লেখা। পুরোনো পদ্ধতিগুলো যেখানে কেবল পড়া বা গ্রামারের উপর জোর দিত, সেখানে CLT এক কার্যক্রমে সব দক্ষতাকে একত্র করে। উদাহরণস্বরূপ, শিক্ষার্থীরা একটি ঘোষণা শুনতে পারে, জোড়ায় আলোচনা করতে পারে, সম্পর্কিত একটি টেক্সট পড়তে পারে এবং তারপর একটি সংক্ষিপ্ত উত্তর লিখতে পারে। এই সমন্বিত অনুশীলন ভাষার বাস্তব ব্যবহারের প্রতিফলন ঘটায়। এটি শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে ভারসাম্যপূর্ণ দক্ষতা অর্জনেও সাহায্য করে।
অথেনটিক উপকরণের ব্যবহার: CLT বাস্তব ও অর্থবহ উপকরণের ব্যবহারে উৎসাহ দেয়। শিক্ষকরা সংবাদপত্র, মেনু, মানচিত্র বা টিভি ক্লিপ শ্রেণিকক্ষে আনেন। এসব উপকরণ শিক্ষার্থীদের বাস্তব ভাষা ও সংস্কৃতির সাথে পরিচিত করে। কাজগুলো তৈরি করা হয় বাস্তব জীবনের প্রয়োজনের উপর ভিত্তি করে, কৃত্রিম বাক্যের উপর নয়। ক্ষমা চাওয়া, আমন্ত্রণ জানানো বা সম্মতি দেওয়ার মতো কার্যকর ভাষার উপর জোর দেওয়া হয়। শিক্ষার্থীরা ডিসকোর্স কম্পিটেন্সও অনুশীলন করে, অর্থাৎ দীর্ঘ কথোপকথনে ধারণাগুলো যুক্ত করার ক্ষমতা। এই নীতি তাদের ব্যবহারিক যোগাযোগের জন্য প্রস্তুত করে।
CLT একটি অ্যাপ্রোচ হিসেবে: CLT-কে একটি অ্যাপ্রোচ ধরা হয়, মেথড নয়। মেথড স্থির এবং কঠোর কৌশলসমৃদ্ধ, যেমন গ্রামার ট্রান্সলেশন বা অডিও-লিঙ্গুয়াল মেথড। CLT একগুঁয়ে নিয়ম দেয় না। এটি একটি বিস্তৃত দর্শন দেয়: যোগাযোগের মাধ্যমে ভাষা সর্বোত্তমভাবে শেখা যায়। শিক্ষকরা রোল-প্লে, প্রজেক্ট, বিতর্ক বা টাস্ক-বেসড লার্নিংয়ের মতো বিভিন্ন কৌশল ব্যবহার করতে পারেন, যতক্ষণ যোগাযোগ কেন্দ্রে থাকে। রিচার্ডস এবং রডজার্স যেমন বলেন, CLT নমনীয় ও মানানসই। এ কারণেই একে অ্যাপ্রোচ বলা হয়।
শিক্ষার্থী একজন যোগাযোগকারী হিসেবে: CLT-তে শিক্ষার্থীরা নিঃশব্দ শ্রোতা নয়। তারা যোগাযোগকারী। তারা কথোপকথন, রোল-প্লে, আলোচনা ও সমস্যা সমাধানের অনুশীলনে অংশ নেয়। তাদের প্রধান ভূমিকা হলো বাস্তব জীবনের পরিস্থিতিতে ভাষা ব্যবহার করা। অর্থ পরিষ্কার থাকলে ভুলকে অনুমতি দেওয়া হয়। এটি শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাস ও সাবলীলতা অর্জনে সাহায্য করে। তারা শুধু শব্দ ও গ্রামার শেখে না, বরং ইংরেজিতে কীভাবে ধারণা, অনুভূতি ও মতামত প্রকাশ করতে হয় তাও শেখে। তারা সঙ্গীর কথা মনোযোগ দিয়ে শুনতেও অনুশীলন করে। তারা কথোপকথনে পালা নেওয়া শেখে। এটি তাদের শ্রেণিকক্ষের বাইরে স্বাভাবিক ও ইন্টারঅ্যাক্টিভ যোগাযোগের জন্য প্রস্তুত করে।
শিক্ষার্থী একজন আলোচক হিসেবে: শিক্ষার্থীরা অর্থের আলোচক হিসেবেও কাজ করে। জোড়ায় বা দলে কাজ করার সময় তারা ধারণা ভাগ করে, প্রশ্ন করে এবং উত্তর পরিষ্কার করে। তারা কিছু না বুঝলে সাহায্য চায়। অন্যরা ভুল করলে তারা অর্থবহভাবে প্রতিক্রিয়া জানাতে চেষ্টা করে। এই ভূমিকা তাদের বাস্তব জীবনে যোগাযোগ সমস্যার মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত করে। অর্থ নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে শিক্ষার্থীরা পুনর্বিবৃত্তি করা, অনুমান করা বা দেহভাষা ব্যবহারের মতো কৌশল তৈরি করে। এটি তাদের যোগাযোগে আরও স্বতন্ত্র করে তোলে।
শিক্ষক একজন সহায়ক হিসেবে: CLT-তে শিক্ষক আর কেবল জ্ঞানের একমাত্র উৎস নয়। বরং শিক্ষক সহায়কের ভূমিকায় কাজ করেন। শিক্ষক এমন পরিস্থিতি তৈরি করেন যেখানে শিক্ষার্থীরা বাস্তব যোগাযোগ অনুশীলন করতে পারে। শিক্ষক কাজ, উপকরণ ও দিকনির্দেশনা দেন, কিন্তু শিক্ষার্থীদের মুক্তভাবে ইন্টারঅ্যাক্ট করতে দেন। শিক্ষক বেশি শোনেন আর কম বলেন। অর্থ হারিয়ে না গেলে ভুল সঙ্গে সঙ্গে সংশোধন করা হয় না। এভাবে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের ঝুঁকি নিতে ও আরও আত্মবিশ্বাসের সাথে কথা বলতে উৎসাহিত করেন।
শিক্ষক একজন রিসোর্স হিসেবে: শিক্ষকরা রিসোর্স পারসন হিসেবেও ভূমিকা পালন করেন। শিক্ষার্থীদের প্রয়োজন হলে তারা সহায়তা দিতে প্রস্তুত থাকেন। শিক্ষার্থীরা শব্দ ভুলে গেলে বা ধারণা প্রকাশ করতে না পারলে শিক্ষক সাহায্য করেন। শিক্ষকরা সাংস্কৃতিক রেফারেন্স ব্যাখ্যা করতে পারেন, দরকারি শব্দভান্ডার পরিচয় করিয়ে দিতে পারেন, অথবা যোগাযোগের কৌশল দিতে পারেন। কিন্তু তারা শ্রেণিকক্ষে আধিপত্য বিস্তার করেন না। বরং তারা শিক্ষার্থীদের জন্য বাস্তব উপকরণ, দলগত কার্যক্রম ও রোল-প্লে পরিস্থিতির মতো রিসোর্স সহজলভ্য করেন। এই ভূমিকা শেখাকে বাস্তবমুখী ও অর্থবহ করে তোলে।
আরো পড়ুনঃ Teachers’ and Students’ Roles in Language Education
শিক্ষক একজন পর্যবেক্ষক হিসেবে: CLT-তে শিক্ষকের আরেকটি ভূমিকা হলো পর্যবেক্ষক। শিক্ষক সতর্কভাবে শিক্ষার্থীদের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করেন। ভুল, সাধারণ ত্রুটি ও শেখার সমস্যাগুলো নোট করেন। যোগাযোগ থামানোর পরিবর্তে শিক্ষক পরে এসব বিষয়ে আলোচনা করেন। এই বিলম্বিত সংশোধন পদ্ধতি শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাসী থাকতে সাহায্য করে। এটি শিক্ষকের জন্য বাস্তব শিক্ষার্থী চাহিদার ভিত্তিতে ভবিষ্যতের পাঠ পরিকল্পনা করতে সহায়ক হয়। শিক্ষক ইতিবাচক অগ্রগতিও লক্ষ্য করেন। ত্রুটির পাশাপাশি শক্তির দিকগুলোও নোট করা হয়। এই ভারসাম্য শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করে এবং উন্নতিতে উদ্বুদ্ধ করে।
অপর্যাপ্ত শিক্ষক প্রশিক্ষণ ও সহায়তা: বাংলাদেশে CLT কার্যকর করার অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ হলো যথাযথভাবে প্রশিক্ষিত শিক্ষকের অভাব। অনেক শিক্ষক ঐতিহ্যবাহী Grammar-Translation Method-এ প্রশিক্ষিত হয়েছেন এবং যোগাযোগভিত্তিক পদ্ধতিতে মানিয়ে নিতে হিমশিম খেয়েছেন। তাদের মধ্যে প্রায়ই CLT-এর জন্য প্রয়োজনীয় তাত্ত্বিক জ্ঞান ও ব্যবহারিক দক্ষতার ঘাটতি থাকে।
এর মধ্যে রয়েছে আন্তঃক্রিয়ামূলক কার্যক্রম পরিচালনা, দলগত কাজ ব্যবস্থাপনা, এবং বাস্তব জীবনের প্রেক্ষাপটে ভাষা অনুশীলনের ব্যবহার। তাছাড়া, পেশাগত উন্নয়নের সুযোগ সীমিত, এবং শিক্ষকরা যোগাযোগভিত্তিক পদ্ধতিতে অভ্যস্ত হতে খুব সামান্য সহায়তা পান। এর ফলে কাঙ্ক্ষিত যোগাযোগমূলক কার্যক্রম প্রায়ই ঐতিহ্যবাহী পদ্ধতিতে ফিরে যায়, যা CLT-এর উদ্দেশ্যকে দুর্বল করে।
অতিরিক্ত ভিড়যুক্ত শ্রেণিকক্ষ: বাংলাদেশে শ্রেণির আকার সাধারণত বড়, যেখানে একটি শ্রেণিকক্ষে প্রায় ৫০ থেকে ১০০ জন শিক্ষার্থী থাকে। এমন পরিবেশে CLT কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন প্রায় অসম্ভব হয়ে ওঠে। শিক্ষার্থী-শিক্ষক অনুপাত অত্যধিক হওয়ায় শিক্ষার্থীদের অর্থবহ যোগাযোগমূলক কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার সুযোগ সীমিত হয়ে পড়ে। এছাড়া, শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স পর্যবেক্ষণ ও প্রতিক্রিয়া দেওয়াকে অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং মনে করেন। ভিড়যুক্ত শ্রেণিকক্ষের শারীরিক অবস্থা এবং উপকরণের অভাব CLT কৌশলের কার্যকর প্রয়োগকে আরও ব্যাহত করে।
সম্পদের সীমাবদ্ধতা ও উপকরণের অভাব: CLT সফলভাবে বাস্তবায়ন অনেকাংশে নির্ভর করে শিক্ষণ উপকরণ, বাস্তবধর্মী সামগ্রী এবং প্রযুক্তি ব্যবহারের উপর। বাংলাদেশের বহু স্কুলে, বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকায়, এসব সম্পদ অপ্রতুল। পাঠ্যপুস্তকগুলো প্রায়শই পুরোনো এবং পাঠ্যক্রমের যোগাযোগমূলক লক্ষ্যের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।
অডিও-ভিজ্যুয়াল উপকরণ, বাস্তবধর্মী টেক্সট এবং ল্যাঙ্গুয়েজ ল্যাবের মতো সহায়ক উপকরণেরও ঘাটতি রয়েছে। এসব সম্পদ ছাড়া শিক্ষকরা অর্থবহ ভাষা অনুশীলন তৈরি করতে পারেন না। এর ফলে CLT-এর কার্যকারিতা অনেকাংশে হ্রাস পায়।
পরীক্ষা ব্যবস্থার সাথে অসামঞ্জস্যতা: বাংলাদেশের মূল্যায়ন ব্যবস্থা এখনো ঐতিহ্যগত, যা মূলত ব্যাকরণ, অনুবাদ এবং মুখস্থের উপর নির্ভরশীল। পাঠ্যক্রমে CLT অন্তর্ভুক্ত করা হলেও পরীক্ষায় এখনো নির্ভুলতা এবং ভাষার যান্ত্রিক পুনরুত্পাদনকেই বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়, যোগাযোগমূলক দক্ষতাকে নয়।
শিক্ষাদান পদ্ধতি এবং মূল্যায়নের মানদণ্ডের এই অসামঞ্জস্যতা শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের CLT পুরোপুরি গ্রহণে নিরুৎসাহিত করে। শিক্ষকেরা পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের প্রস্তুত করার চাপে থাকেন। ফলে তারা প্রায়ই Grammar-Translation Method-এ ফিরে যান, যা CLT-এর মূলনীতির সাথে সাংঘর্ষিক।
সাংস্কৃতিক ও সামাজিক প্রতিবন্ধকতা: বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থায় ঐতিহ্যগত শিক্ষক-কেন্দ্রিক পদ্ধতি গভীরভাবে প্রোথিত। এখানে শিক্ষককে প্রধান জ্ঞান উৎস হিসেবে দেখা হয় এবং শিক্ষার্থীরা নিষ্ক্রিয় গ্রহণকারী হিসেবে থাকে। CLT, যেখানে শিক্ষার্থীর সক্রিয় অংশগ্রহণ ও সহযোগিতামূলক শেখার পরিবেশ প্রয়োজন, এই প্রতিষ্ঠিত ধ্যানধারণাকে চ্যালেঞ্জ জানায়।
অতিরিক্তভাবে, অনেক শিক্ষার্থী ভূমিকা খেলা, দলীয় আলোচনা এবং অন্যান্য যোগাযোগমূলক কার্যক্রমে অংশ নিতে দ্বিধা করে। তারা ভুল করার ভয় পায়, লাজুক হয়, বা ইংরেজিতে আত্মবিশ্বাসের অভাবে ভোগে। সামাজিক নিয়ম, বিশেষ করে মিশ্র-লিঙ্গ পরিবেশে খোলাখুলি মতামত প্রকাশে অনীহা, CLT-এর আন্তঃক্রিয়ামূলক প্রকৃতিকে আরও সীমিত করে।
ডিসাজেস্টোপিডিয়া একটি বিশেষ ভাষা শিক্ষণ পদ্ধতি। এটি ১৯৭০-এর দশকে বুলগেরিয়ান শিক্ষাবিদ জর্জি লোজানভ তৈরি করেন। এই পদ্ধতির মূল লক্ষ্য হলো শিক্ষার্থীদের শেখার ভয় ও মানসিক চাপ দূর করে আনন্দময় পরিবেশ তৈরি করা। “Desuggest” শব্দটির মানে হলো শেখার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ানো নেতিবাচক প্রতিবন্ধকতা দূর করা। এ ধারণার ভিত্তি হলো— ভয়, পূর্বের ব্যর্থতা ও চাপের কারণে শিক্ষার্থীরা মস্তিষ্কের পূর্ণ ক্ষমতা ব্যবহার করতে পারে না। সঙ্গীত, বিশ্রাম ও ইতিবাচক প্রস্তাবনার (positive suggestion) মাধ্যমে ডিসাজেস্টোপিডিয়া এই লুকানো সামর্থ্যকে জাগিয়ে তোলে।
ডিসাজেস্টোপিডিয়ার উদ্দেশ্যসমূহঃ ডিসাজেস্টোপিডিয়ার মূল লক্ষ্য হলো শেখাকে সহজ, দ্রুত ও আনন্দময় করা। লোজানভ দাবি করেছিলেন যে এই পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীরা তিন গুণ দ্রুত ভাষা শিখতে পারে। এর উদ্দেশ্যগুলো হলোঃ
- শ্রেণিকক্ষে ভয় ও উদ্বেগ কমানো।
- আনন্দময় ও চাপমুক্ত পরিবেশ তৈরি করা।
- শিক্ষার্থীর আত্মবিশ্বাস ও সৃজনশীলতা বাড়ানো।
- বিপুল পরিমাণ শব্দভান্ডার মনে রাখতে সহায়তা করা।
- সচেতন ও অবচেতন মনের সমন্বয়ে শেখা।
ডিসাজেস্টোপিডিয়ার প্রধান নীতি
- আনন্দ ও বিশ্রাম: শেখা যেন টেনশন ছাড়া হয়। শরীর ও মন আরামদায়ক থাকলে মনে রাখা সহজ হয়।
- সাজেশন ও ডিসাজেশন: ইতিবাচক প্রস্তাবনা (যেমন প্রশংসা, আত্মবিশ্বাস, সঙ্গীত, ভিজ্যুয়াল) শেখাকে উৎসাহিত করে; নেতিবাচক প্রতিবন্ধকতা দূর হয়।
- পেরিফেরাল লার্নিং: দেওয়ালে টাঙানো পোস্টার, চার্ট, সাজসজ্জা থেকেও শিক্ষার্থীরা অচেতনভাবে তথ্য আত্মস্থ করে।
- সচেতন ও অবচেতন স্তর: শেখা ঘটে সচেতন মনে ও একই সঙ্গে ব্যাকগ্রাউন্ডে অবচেতন স্তরেও।
- শিক্ষকের ভূমিকা: শিক্ষক আস্থা, উৎসাহ ও শিল্পময় উপস্থাপনা তৈরি করেন। গান, খেলা ও নাটকীয় পাঠ ব্যবহার করেন।
মূল বৈশিষ্ট্য
- শ্রেণিকক্ষের পরিবেশ: উজ্জ্বল, আনন্দময়, নরম সঙ্গীত ও আরামদায়ক আসন।
- সঙ্গীত ও শিল্প: বারোক ও ধ্রুপদী সঙ্গীত মস্তিষ্ককে আরাম দেয়। নাটক ও গান অন্তর্ভুক্ত হয়।
- সংলাপ ও কনসার্ট রিডিং: শিক্ষক সক্রিয় ও নিস্ক্রিয় সেশনে সঙ্গীতের সঙ্গে পাঠ করেন। শিক্ষার্থীরা শোনে, পুনরাবৃত্তি করে, পরে পরিবেশন করে।
- রোল প্লে ও নতুন পরিচয়: শিক্ষার্থীরা নতুন নাম নিতে পারে এবং ভিন্ন ভিন্ন ভূমিকায় অভিনয় করতে পারে, যা ভয় কমায়।
- সৃজনশীল কার্যকলাপ: খেলা, নাট্যাভিনয় ও গান দিয়ে অনুশীলন।
- স্নিগ্ধ সংশোধন: ভুল হলে তা চাপ ছাড়াই পরোক্ষভাবে ঠিক করা হয়।
বাংলাদেশি শ্রেণিকক্ষে প্রাসঙ্গিকতাঃ বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় ভিড়ভাট্টা শ্রেণিকক্ষ, পরীক্ষার চাপ ও পর্যাপ্ত রিসোর্সের অভাব রয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে ডিসাজেস্টোপিডিয়ার কিছু সুবিধা ও সীমাবদ্ধতা আছে।
- ইতিবাচক দিক: গ্রামীণ এলাকার শিক্ষার্থীদের মধ্যে ইংরেজি শেখার ভয় কমাতে পারে। গান, রোল-প্লে ও ভিজ্যুয়াল ব্যবহারে ক্লাস আকর্ষণীয় হয়। চাপমুক্ত শেখা আত্মবিশ্বাস বাড়ায়।
- সীমাবদ্ধতা: বড় ক্লাস, প্রশিক্ষিত শিক্ষকের অভাব এবং সঙ্গীত ব্যবস্থা বা সাজানো শ্রেণিকক্ষের অভাবে পুরোপুরি প্রয়োগ কঠিন। পরীক্ষানির্ভর শিক্ষাব্যবস্থার সঙ্গে এই মুক্ত ও খেলার ছলে শেখা পুরোপুরি মানানসই নয়।
- আংশিক ব্যবহার: রোল-প্লে, দলগত কাজ, পোস্টার, এবং ইতিবাচক প্রস্তাবনার মতো কৌশল সহজেই অন্তর্ভুক্ত করা যায়, যা ব্যয়বহুল নয়। তবে সম্পূর্ণ রূপে গ্রহণ করা বাস্তবসম্মত নয়।
সংক্ষেপে, ডিসাজেস্টোপিডিয়া এক অভিনব পদ্ধতি, যা ভাষা শিক্ষায় আনন্দ, বিশ্রাম ও ইতিবাচক প্রস্তাবনার উপর জোর দেয়। এর উদ্দেশ্য হলো ভয় দূর করা, আত্মবিশ্বাস বাড়ানো এবং শব্দভান্ডার দ্রুত শেখানো। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে পুরোপুরি প্রয়োগ সম্ভব না হলেও, এর কিছু কৌশল শিক্ষার্থীদের উৎসাহ বাড়াতে এবং ভাষা শেখার ভয় কমাতে কার্যকর হতে পারে। তাই আধুনিক শিক্ষণ পদ্ধতির ক্ষেত্রে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ রেফারেন্স হিসেবে রয়ে গেছে।
ন্যাচারাল অ্যাপ্রোচ স্টিফেন ক্রাশেন এবং ট্রেসি টেরেল ১৯৮০-এর দশকের শুরুর দিকে প্রবর্তন করেন। এই পদ্ধতির ধারণা হলো— দ্বিতীয় ভাষা অর্জন প্রথম ভাষা অর্জনের মতো একই পথে হওয়া উচিত। এখানে ব্যাকরণ অনুশীলন বা মুখস্থ করার চেয়ে যোগাযোগ ও অর্থপূর্ণ ইনপুটের উপর জোর দেওয়া হয়। এতে শিক্ষার্থীরা লক্ষ্যভাষায় সমৃদ্ধ অভিজ্ঞতা পায় এবং আরামদায়ক পরিবেশে শেখে। এটি নির্ভুলতার চেয়ে সাবলীলতাকে গুরুত্ব দেয় এবং ভুলের ভয় ছাড়াই স্বাভাবিকভাবে ভাষা ব্যবহার করতে উৎসাহিত করে।
প্রধান বিষয়াবলি
- বোঝাপড়া আগে: শিক্ষার্থীরা আগে ভাষা বুঝবে, তারপর তা উৎপাদন করবে।
- যোগাযোগ বনাম রূপ: ব্যাকরণ নিয়মের চেয়ে শব্দভান্ডার ও অর্থকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়।
- লো অ্যাফেকটিভ ফিল্টার: শ্রেণিকক্ষের পরিবেশ যেন উদ্বেগ কমায় ও আত্মবিশ্বাস বাড়ায়।
- বোধ্য ইনপুট: শিক্ষার্থীর বর্তমান স্তরের চেয়ে সামান্য উচ্চস্তরের ভাষার সংস্পর্শে আসা জরুরি।
ব্যবহারিক পদ্ধতিঃ শ্রেণিকক্ষের কাজ সাধারণত শোনার কার্যকলাপ দিয়ে শুরু হয়। শিক্ষক অঙ্গভঙ্গি, ছবি বা বাস্তব জিনিস ব্যবহার করে ইনপুট পরিষ্কার করেন। শিক্ষার্থীরা প্রথমে নীরব থাকতে পারে, পরে ছোট উত্তর, রোল-প্লে বা খেলার মাধ্যমে কথা বলা শুরু করে। বোঝাপড়া দৃঢ় হলে পড়া ও লেখা যোগ হয়। শিক্ষক সরাসরি ব্যাকরণ শেখান না বা ভুল সঙ্গে সঙ্গে ধরেন না। বরং আলোচনা, সমস্যা সমাধান ও গল্প বলার মতো অর্থপূর্ণ কাজ দেন। এভাবে ধাপে ধাপে স্বাভাবিকভাবে ভাষা ব্যবহারের ক্ষমতা তৈরি হয়।
পদ্ধতির শক্তি
- যোগাযোগকেন্দ্রিক হওয়ায় শিক্ষার্থীরা ভয় ছাড়াই অর্থ প্রকাশ করতে পারে।
- কম উদ্বেগপূর্ণ পরিবেশ শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাস বাড়ায়।
- বোধ্য ইনপুট সাবলীলতা ও শব্দভান্ডার উন্নত করে।
- বাস্তব জীবনের মতো শেখা হওয়ায় এটি আনন্দদায়ক ও কার্যকর।
- শোনা, বলা ও আত্মবিশ্বাস আগে তৈরি হয়, যা দৈনন্দিন যোগাযোগে সহায়ক।
- আধুনিক কমিউনিকেটিভ ল্যাঙ্গুয়েজ টিচিং (CLT)-এ এর প্রভাব দেখা যায়।
পদ্ধতির সীমাবদ্ধতা
- ব্যাকরণে কম গুরুত্ব দেওয়ায় অনেক ভুল সংশোধিত নাও হতে পারে।
- অগ্রগতি মাপা কঠিন, কারণ প্রচলিত ব্যাকরণ-নির্ভর পরীক্ষা এর লক্ষ্যকে প্রতিফলিত করে না।
- সৃজনশীল শিক্ষক প্রয়োজন, যিনি সমৃদ্ধ ইনপুট ও অর্থপূর্ণ কাজ দিতে পারবেন।
- কিছু শিক্ষার্থী স্পষ্ট ব্যাকরণ নিয়ম পছন্দ করে, তাই তারা কম সন্তুষ্ট হতে পারে।
দ্বিতীয় ভাষা অর্জনের চার ধাপ (SLA)
- প্রি-প্রোডাকশন: শিক্ষার্থীরা নীরব থাকে, শুধু শোনে ও লক্ষ্য করে।
- আর্লি প্রোডাকশন: শিক্ষার্থীরা ছোট শব্দ ও বাক্যাংশ ব্যবহার করে।
- স্পিচ এমার্জেন্স: শিক্ষার্থীরা লম্বা বাক্য ব্যবহার শুরু করে, তবে ভুল থাকে।
- ইন্টারমিডিয়েট ফ্লুয়েন্সি: শিক্ষার্থীরা আরও সাবলীলভাবে ও তুলনামূলক সঠিকভাবে ভাষা ব্যবহার করে।
পরিশেষে, ন্যাচারাল অ্যাপ্রোচ ব্যাকরণ ও নিয়মের চেয়ে বোঝাপড়া, ইনপুট ও যোগাযোগকে গুরুত্ব দেয়। এটি প্রথমে সাবলীলতা, পরে নির্ভুলতা গড়ে তোলে এবং উদ্বেগ কমিয়ে আত্মবিশ্বাস বাড়ায়। সাবলীলতা ও শব্দভান্ডার উন্নত করার ক্ষেত্রে এর শক্তি স্পষ্ট, তবে ব্যাকরণ ও মূল্যায়নে সীমাবদ্ধতা আছে। চারটি ধাপে ভাষার স্বাভাবিক বিকাশ বোঝায়। সম্পূর্ণ নিখুঁত না হলেও, আরামদায়ক ও যোগাযোগকেন্দ্রিক শিক্ষণপদ্ধতি হিসেবে এটি আধুনিক শ্রেণিকক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
টাস্ক-বেইজড ল্যাঙ্গুয়েজ টিচিং (TBLT) হলো ভাষা শিক্ষায় একটি আধুনিক ও কার্যকর পদ্ধতি। এটি শুধু ব্যাকরণ নিয়ম নয়, বরং যোগাযোগ ও অর্থকে অগ্রাধিকার দেয়। এই পদ্ধতির মূল ধারণা হলো, শিক্ষার্থীরা বাস্তব প্রয়োজনে ভাষা ব্যবহার করলে সেটি সবচেয়ে ভালোভাবে রপ্ত হয়। এই পদ্ধতিতে সমস্যা সমাধান, পরিকল্পনা করা কিংবা মতামত দেওয়া—এসব অর্থবহ কাজের মাধ্যমে ভাষা শেখানো হয়। এন. এস. প্রভু, জেন উইলিস, এবং রড এলিসের মতো খ্যাতিমান ভাষাবিদরা তাঁদের গবেষণা ও বইয়ে এই পদ্ধতিকে সমর্থন করেছেন।
টাস্কের অর্থ: একটি টাস্ক হলো এমন কার্যকলাপ, যেখানে শিক্ষার্থীরা একটি লক্ষ্য অর্জনের জন্য লক্ষ্যভাষা ব্যবহার করতে বাধ্য হয়। এটি কোনো সাধারণ ব্যাকরণ অনুশীলন নয়। বরং এটি অর্থ, প্রেক্ষাপট ও উদ্দেশ্যের ওপর গুরুত্ব দেয়। যেমন—আবহাওয়ার খবর শোনা এবং ছাতা নেওয়া প্রয়োজন কিনা তা নির্ধারণ করা একটি বাস্তব টাস্ক। উইলিস (১৯৯৬)-এর মতে, টাস্ক অবশ্যই উদ্দেশ্যমূলক, ব্যবহারিক এবং বাস্তব জীবনের যোগাযোগের সঙ্গে সম্পর্কিত। এসব টাস্ক শ্রেণিকক্ষকে প্রাণবন্ত করে তোলে এবং বাস্তব যোগাযোগের সুযোগ সৃষ্টি করে।
ফোকাসড টাস্ক: ফোকাসড টাস্ক হলো বিশেষ ধরণের টাস্ক। আনফোকাসড টাস্কের বিপরীতে এগুলো শিক্ষার্থীদের দৃষ্টি নির্দিষ্ট ব্যাকরণ কাঠামোর দিকে আকর্ষণ করার জন্য তৈরি করা হয়। একই সঙ্গে এগুলো অর্থবহ ও যোগাযোগমূলক থাকে। যেমন—যদি লক্ষ্য হয় অতীত কাল শেখানো, তবে শিক্ষার্থীদের জিজ্ঞেস করা যেতে পারে, “গত সপ্তাহান্তে তারা কী করেছিল।” এতে তারা অর্থের দিকে মনোযোগ দেয়, তবে স্বাভাবিকভাবেই অতীত কালের ব্যবহার অনুশীলন করে। এলিস (২০০৩) বলেছেন, ফোকাসড টাস্ক যোগাযোগ ও ব্যাকরণের মধ্যে ভারসাম্য রাখে। এগুলো শিক্ষার্থীদের সাবলীলতা ও শুদ্ধতার জন্য কার্যকর হয়।
ফোকাসড টাস্কের ভূমিকা: ফোকাসড টাস্ক TBLT-তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রথমত, এগুলো শিক্ষকদের ব্যাকরণ স্বাভাবিকভাবে শেখানো বা পুনরায় আলোচনা করার সুযোগ দেয়। দ্বিতীয়ত, এগুলো শিক্ষার্থীদের বাস্তব পরিস্থিতিতে লক্ষ্যভাষার ব্যবহার নিয়ে আত্মবিশ্বাসী করে। তৃতীয়ত, এগুলো স্পষ্ট শিক্ষাকে যোগাযোগমূলক চর্চার সঙ্গে যুক্ত করে। যেমন—“অপরাধ রহস্য সমাধান” সংক্রান্ত একটি রিজনিং গ্যাপ টাস্ক শিক্ষার্থীদেরকে must have বা might have-এর মতো মডাল ভার্ব ব্যবহার করতে উদ্বুদ্ধ করতে পারে, ব্যাকরণের আনুষ্ঠানিক লেকচার ছাড়াই। এতে ব্যাকরণ আরও অর্থবহ হয়ে ওঠে।
আরো পড়ুনঃ Teaching The Four Language Skills
তাত্ত্বিক ভিত্তি: TBLT-এর তত্ত্ব সুদৃঢ় ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আছে।
- ইনপুট হাইপোথিসিস (ক্রাশেন): শিক্ষার্থীদের এমন ইনপুট প্রয়োজন যা তাদের বর্তমান স্তরের চেয়ে সামান্য উঁচু (i+1)।
- ইন্টারঅ্যাকশন হাইপোথিসিস (লং): শিক্ষার্থীরা যখন পারস্পরিক যোগাযোগ করে এবং অর্থ নিয়ে আলোচনা করে, তখন ভাষার উন্নতি ঘটে।
- আউটপুট হাইপোথিসিস (সোয়েইন): শিক্ষার্থীরা কথা বলা ও লেখার মাধ্যমে ভাষা ব্যবহার করলে তারা উন্নতি লাভ করে।
- প্রভুর বেঙ্গালুরু প্রজেক্ট (১৯৮৭): এতে প্রমাণিত হয় যে শিক্ষার্থীরা কেবল ব্যাকরণে নয়, টাস্ক সম্পন্ন করার ওপর মনোযোগ দিলে কার্যকরভাবে শেখে।
এগুলো থেকে বোঝা যায়, টাস্ক শেখাকে স্বাভাবিক, ব্যবহারিক ও আনন্দদায়ক করে তোলে।
মূল বৈশিষ্ট্যসমূহ: TBLT-এর কিছু বিশেষ বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা পুরোনো পদ্ধতি থেকে একে আলাদা করে।
- অর্থকেন্দ্রিক: শিক্ষার্থীরা ভাষা ব্যবহার করে ভাব বিনিময় করে, শুধু ব্যাকরণ চর্চা নয়।
- শিক্ষার্থী-কেন্দ্রিক: শিক্ষার্থীরা মূল ভূমিকা পালন করে, শিক্ষক গাইডের ভূমিকা পালন করেন।
- বাস্তবধর্মী টাস্ক: শ্রেণিকক্ষের কাজগুলো দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে যুক্ত থাকে, যেমন ভ্রমণের পরিকল্পনা করা বা ইমেইল লেখা।
- সমন্বিত দক্ষতা: পড়া, লেখা, শোনা ও বলা একসঙ্গে বিকাশ লাভ করে।
সাবলীলতা আগে, শুদ্ধতা পরে: প্রথমে শিক্ষার্থীরা বোধগম্য করার দিকে মনোযোগ দেয়; পরে তারা শুদ্ধতা বাড়ায়।
এসব বৈশিষ্ট্যের কারণে TBLT বাস্তব যোগাযোগকে উৎসাহিত করে।
টাস্কের ধরন: TBLT-তে বিভিন্ন ধরণের টাস্ক ব্যবহার করা হয়।
- ইনফরমেশন গ্যাপ টাস্ক: শিক্ষার্থীরা একে অপরকে অনুপস্থিত তথ্য প্রদান করে, যেমন—সময়সূচি বা মানচিত্র শেয়ার করা।
- রিজনিং গ্যাপ টাস্ক: শিক্ষার্থীরা যুক্তি ব্যবহার করে সমস্যা সমাধান করে, যেমন—সময়সূচি পড়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া।
- অপিনিয়ন গ্যাপ টাস্ক: শিক্ষার্থীরা তাদের অনুভূতি ও মতামত প্রকাশ করে, যেমন বিতর্কে অংশগ্রহণ।
- ক্রিয়েটিভ টাস্ক: শিক্ষার্থীরা নতুন কিছু তৈরি করে, যেমন গল্প লেখা, পোস্টার বানানো বা ভ্রমণ পরিকল্পনা করা।
এসব টাস্ক অর্থবহ এবং শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিকভাবে লক্ষ্যভাষা ব্যবহার করতে উদ্বুদ্ধ করে।
TBLT-এর ধাপসমূহ: জেন উইলিস ও অন্যান্য গবেষকদের মতে, TBLT পাঠ একটি সুস্পষ্ট প্রক্রিয়া অনুসরণ করে।
- প্রি-টাস্ক: শিক্ষক টাস্কের পরিচয় দেন, উদাহরণ দেন এবং শিক্ষার্থীদের অনুপ্রাণিত করেন।
- টাস্ক সাইকেল: শিক্ষার্থীরা জোড়া বা দলে কাজ করে টাস্ক সম্পন্ন করে, লক্ষ্যভাষা ব্যবহার করে। শিক্ষক পর্যবেক্ষণ করেন তবে বাধা দেন না।
- প্ল্যানিং: শিক্ষার্থীরা তাদের কাজ উপস্থাপনের প্রস্তুতি নেয়। তারা রিপোর্ট লিখতে পারে, পোস্টার বানাতে পারে বা প্রেজেন্টেশন তৈরি করতে পারে।
- রিপোর্ট: দলগুলো তাদের কাজ শ্রেণিতে উপস্থাপন করে। অন্যরা শোনে, প্রশ্ন করে বা মতামত দেয়।
- অ্যানালাইসিস: শিক্ষক উপযোগী ভাষা আলোচনা করেন, প্রাসঙ্গিক ব্যাকরণ ব্যাখ্যা করেন বা ভুল সংশোধন করেন।
- প্র্যাকটিস: শিক্ষার্থীরা নতুন কাঠামো সংক্ষিপ্ত অনুশীলনের মাধ্যমে চর্চা করে।
এই ধাপগুলো শেখাকে নিয়মতান্ত্রিক ও অর্থবহ করে তোলে।
শক্তি ও দুর্বলতা: TBLT-এর অনেক শক্তি রয়েছে। এটি সাবলীলতা, আত্মবিশ্বাস ও প্রেরণা তৈরি করে। শিক্ষার্থীরা দলগত কাজ ও সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা শেখে। ব্যাকরণ ও শব্দভাণ্ডার বাস্তব পরিস্থিতিতে শেখানো হয়, আলাদা নিয়ম হিসেবে নয়। শিক্ষার্থীরা আরও সক্রিয় ও স্বনির্ভর হয়ে ওঠে। তবে দুর্বলতাও আছে। টাস্কের মূল্যায়ন ব্যাকরণ পরীক্ষার তুলনায় কঠিন। শিক্ষকদের দক্ষতা, সৃজনশীলতা ও প্রস্তুতির প্রয়োজন হয়। শিক্ষানবীশরা কাঠামোর অভাবে বিভ্রান্ত হতে পারে। বড় ক্লাসে দলগত কাজ গোলমালপূর্ণ ও কঠিন হতে পারে। তবুও অধিকাংশ গবেষক মনে করেন, TBLT-এর সুফল এর সীমাবদ্ধতার চেয়ে অনেক বেশি।
সব মিলিয়ে, টাস্ক-বেইজড ল্যাঙ্গুয়েজ টিচিং হলো এমন একটি পদ্ধতি যা যোগাযোগ, পারস্পরিক মিথস্ক্রিয়া এবং বাস্তব জীবনের অনুশীলনকে গুরুত্ব দেয়। এটি ক্রাশেন, লং, সোয়েইন ও প্রভুর তত্ত্ব দ্বারা সমর্থিত। এর বৈশিষ্ট্যের মধ্যে রয়েছে শিক্ষার্থী-কেন্দ্রিক শিক্ষা, বাস্তবধর্মী টাস্ক ও সমন্বিত দক্ষতা বিকাশ। TBLT-এর ধাপগুলো শিক্ষার্থীদের সাবলীলতা থেকে শুদ্ধতার দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়। যদিও কিছু সীমাবদ্ধতা আছে, তবুও TBLT যোগাযোগ দক্ষতা গড়ে তোলার একটি কার্যকর পদ্ধতি। এটি শিক্ষার্থীদের কেবল পরীক্ষার জন্য নয়, বাস্তব জীবনের যোগাযোগের জন্যও প্রস্তুত করে।
পোস্ট-মেথড পেডাগজি গড়ে উঠেছিল প্রচলিত ভাষা শিক্ষণ পদ্ধতির প্রতি অসন্তুষ্টির প্রতিক্রিয়া হিসেবে। বি. কুমারাভাদিভেলু ১৯৯৪ সালে এই পদ্ধতি প্রস্তাব করেন। পোস্ট-মেথড পেডাগজি বিশ্বাস করে না যে কোনো একটি পদ্ধতি সর্বজনীনভাবে কার্যকর হতে পারে। বরং এটি একটি নমনীয় দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করে যেখানে শিক্ষকরা তাঁদের শিক্ষার্থীদের নির্দিষ্ট প্রয়োজন অনুযায়ী কৌশল নির্ধারণ করেন। কুমারাভাদিভেলুর কাঠামো গড়ে উঠেছে তিনটি মূল প্যারামিটার ও একটি কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গির ওপর।
তিনটি শিক্ষণ-সংক্রান্ত প্যারামিটার: কুমারাভাদিভেলুর পোস্ট-মেথড পেডাগজি তিনটি আন্তঃসম্পর্কিত প্যারামিটারকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়: পার্টিকুলারিটি, প্র্যাকটিক্যালিটি এবং পসিবিলিটি।
পার্টিকুলারিটি: এই প্যারামিটার জোর দেয় যে ভাষা শিক্ষণ অবশ্যই প্রেক্ষাপট-সংবেদনশীল হতে হবে। কোনো নির্দিষ্ট পরিবেশের সামাজিক-সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক এবং প্রাতিষ্ঠানিক উপাদান শিক্ষণ কৌশলকে প্রভাবিত করবে। একটি প্রেক্ষাপটে যা কার্যকর, অন্য প্রেক্ষাপটে তা প্রযোজ্য নাও হতে পারে। তাই শিক্ষকরা তাঁদের শিক্ষার্থীদের বিশেষ চাহিদার ভিত্তিতে পদ্ধতি মানিয়ে নিতে হবে।
প্র্যাকটিক্যালিটি: প্র্যাকটিক্যালিটি জোর দেয় শিক্ষকের সেই সক্ষমতার ওপর, যার মাধ্যমে তিনি তাত্ত্বিক জ্ঞান বাস্তব শ্রেণিকক্ষের পরিস্থিতিতে প্রয়োগ করতে পারেন। এটি শিক্ষকদের উৎসাহিত করে এমন পদ্ধতি মানিয়ে নিতে বা তৈরি করতে যা তাঁদের নির্দিষ্ট শিক্ষণ প্রেক্ষাপটে সবচেয়ে ভালোভাবে কার্যকর হবে, নির্ধারিত কোনো নিয়ম কঠোরভাবে অনুসরণ করার পরিবর্তে।
পসিবিলিটি: এই প্যারামিটার শিক্ষার বৃহত্তর সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটকে বিবেচনা করে। এটি শিক্ষকদের উৎসাহিত করে তাঁদের শিক্ষণ কীভাবে সামাজিক পরিবর্তনে অবদান রাখতে পারে এবং শিক্ষার্থীদের সমাজে বিদ্যমান বৈষম্য দূর করার ক্ষমতা দিতে পারে, সে বিষয়ে চিন্তা করতে।
কৌশলগত কাঠামো: কুমারাভাদিভেলুর দশটি ম্যাক্রো-স্ট্র্যাটেজি ভাষা শিক্ষণের জন্য একটি নমনীয় কাঠামো প্রদান করে। এসব কৌশল শিক্ষকদের আরও কার্যকর ও প্রতিক্রিয়াশীল শিক্ষার পরিবেশ তৈরি করতে সহায়তা করে। সংক্ষেপে তা হলোঃ
- লার্নিং অপারচুনিটি সর্বাধিক করা: এই কৌশল শিক্ষকদের একটি সহযোগিতামূলক ও আন্তঃক্রিয়ামূলক শ্রেণিকক্ষ তৈরি করতে উৎসাহিত করে। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা সবাই মিলে এমন কার্যকলাপে যুক্ত হয়, যা সবার শেখাকে সর্বাধিক করে।
- আলোচনাভিত্তিক মিথস্ক্রিয়া সহজ করা: শিক্ষকদের এমন কার্যকলাপে শিক্ষার্থীদের যুক্ত করা উচিত, যেখানে তারা তথ্য পরিষ্কার করা, সংশোধন করা ও অনুরোধ করতে শেখে। এটি বাস্তব জীবনের পরিস্থিতিতে ভাষা চর্চা করতে সাহায্য করে। পাশাপাশি, কথোপকথন বজায় রাখা এবং ভুল বোঝাবুঝি এড়ানো শেখায়।
- পার্সেপচুয়াল মিসম্যাচ কমানো: শিক্ষকদের সচেতন থাকতে হবে তাঁদের উদ্দেশ্য ও শিক্ষার্থীদের ব্যাখ্যার মধ্যে কোনো ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হচ্ছে কিনা। এ ধরনের অসামঞ্জস্য দূর করা কার্যকর শিক্ষার জন্য অত্যন্ত জরুরি। শিক্ষকদের শিক্ষার্থীদের দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে তাঁদের পদ্ধতি সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে হবে।
- অন্তর্দৃষ্টি-ভিত্তিক কৌশল সক্রিয় করা: এই কৌশল এমন পরিবেশ তৈরি করার ওপর জোর দেয় যেখানে শিক্ষার্থীরা নিজেদের অন্তর্দৃষ্টি দিয়ে সমস্যা সমাধান করতে পারে। এভাবে নতুন ভাষাগত উপাদান তারা স্বাভাবিকভাবে বুঝতে পারে, স্পষ্ট ব্যাখ্যার প্রয়োজন হয় না।
- ভাষা সচেতনতা (LA) বৃদ্ধি করা: ভাষা সচেতনতা শিক্ষার্থীদের মুখস্থ করার পরিবর্তে সাধারণ নীতির মাধ্যমে ভাষা বুঝতে সাহায্য করে। এর ফলে শিক্ষার্থীরা ভাষার গভীরতর উপলব্ধি অর্জন করে, যা দীর্ঘমেয়াদি স্মৃতি ও প্রয়োগে সহায়ক হয়।
- ভাষাগত ইনপুটকে প্রেক্ষাপটভিত্তিক করা: শিক্ষকদের উচিত ভাষা বিচ্ছিন্নভাবে নয়, বরং প্রেক্ষাপটের মধ্যে উপস্থাপন করা। এতে শিক্ষার্থীরা বাস্তব জীবনে ভাষা কীভাবে কাজ করে তা ভালোভাবে অনুধাবন করতে পারে।
- ভাষাগত দক্ষতার সমন্বয় করা: বলা, শোনা, পড়া ও লেখা—সবগুলো ভাষাগত দক্ষতা একসাথে শেখাতে হবে। এসব দক্ষতার সমন্বয় শিক্ষার্থীদের পারস্পরিক সম্পর্ক বোঝাতে এবং সার্বিক দক্ষতা বাড়াতে সহায়ক।
- শিক্ষার্থীর স্বনির্ভরতা বাড়ানো: শিক্ষকদের উচিত শিক্ষার্থীদের নিজেদের শেখার দায়িত্ব নিতে উৎসাহিত করা। এর মধ্যে রয়েছে এমন কৌশল ও উপকরণ প্রদান করা, যা শিক্ষার্থীদের স্বাধীনভাবে শেখার সক্ষমতা তৈরি করে এবং আত্মবিশ্বাসী করে।
- সাংস্কৃতিক সচেতনতা বৃদ্ধি করা: শিক্ষকদের উচিত শিক্ষার্থীদের লক্ষ্যভাষার সংস্কৃতি সম্পর্কে সচেতন করা। সংস্কৃতি বোঝার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা সহানুভূতি ও মানবিকতা গড়ে তোলে। এটি ভাষা ব্যবহারে দক্ষতাও বাড়ায়।
সামাজিক প্রাসঙ্গিকতা নিশ্চিত করা: শেখাকে শিক্ষার্থীদের সামাজিক, রাজনৈতিক ও শিক্ষাগত জীবনের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে। এ প্রাসঙ্গিকতা শিক্ষাকে আরও অর্থবহ করে তোলে এবং শিক্ষার্থীদের শেখা বিষয় বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করতে সাহায্য করে।
সব মিলিয়ে, পোস্ট-মেথড পেডাগজি একটি নমনীয়, প্রেক্ষাপট-সংবেদনশীল ও শিক্ষক-নির্ভর ভাষা শিক্ষণ পদ্ধতি। বিভিন্ন প্যারামিটারকে গুরুত্ব দিয়ে এটি শিক্ষকদের ব্যবহারিক ও প্রাসঙ্গিক শিক্ষণ কৌশল তৈরি করার ক্ষমতা প্রদান করে। এই পদ্ধতি প্রচলিত সীমিত শিক্ষণ কৌশল থেকে অনেক দূরে এগিয়ে যায়।
